পূর্ব মেদিনীপুর: নদীর পাড়ে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ মৃত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় পটাশপুরে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় একটি রিভলভার। বুধবারই গোটা ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। শুক্রবার, গুলিকাণ্ডের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার (Arrested) করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে ধৃতদের এদিন কাঁথি আদালতে পাঠানো হয়েছে। চুরির টাকার ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে ঝামেলার থেকেই এই ঘটনা ঘটে।
পটাশপুরের পুলিশ জানিয়েছে, গুলি চালানোর ঘটনায় মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনজনেই বিশ্বনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। ধৃতরা হলেন টারজান নায়ক, লক্ষ্মণ নায়েক ও তাপস নায়েক। প্রত্যেকের বয়স কুড়ি থেকে একুশের আশেপাশে। জেরায় ধৃতরা জানিয়েছে, তারা চুরি করত। কখনও জিনিস, কখনও পকেটমারি। যখন যেমন সুবিধা হত। সেই টাকা ভাগ হত চারজনের মধ্যে। তারা তিনজন ছাড়াও ওই তালিকায় ছিলেন মৃত যুবক বাপি নায়েক। বাপি নাকি ভাগের টাকা ঠিক করে বাঁটোয়ারা করেনি বলেই তাকে গুলি করে খুন করে তিনজন। মূলত টাকা পয়সার ঝামেলার জেরেই এই খুন বলে মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ।
গত বুধবার সকালে এলাকার বাসিন্দারা এক যুবকের দেহ কেলেঘাই নদীর ধারে পড়ে থাকতে দেখেন। ওই যুবককে গুলি করে খুন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মৃত ওই যুবকের নাম বাপি নায়েক। বাড়ি পটাশপুর ১ নম্বর ব্লকের বিশ্বনাথপুর গ্রামে।
স্থানীয়দের অনেকেই জানান, মঙ্গলবার মধ্যরাতে গুলির আওয়াজ শুনতে পান তাঁরা। তারপরে সকালে নদীর পাড়ে যুবকের মৃত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে মৃত ওই যুবক তাঁর বাড়ির একমাত্র রোজগেরে ছিলেন । বাড়িতে তাঁর স্ত্রী এবং ছোট দুই শিশু রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
তবে এই গুলিকাণ্ডের সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও কারণ জড়িত নেই বলেই অনুমান করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের কথায়, রাজনৈতিক কোনো কারণ নেই। ব্যবসায়ী মানুষ। পারিবারিক ঝগড়াও হতে পারে।
আবার পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর ক্রমেই দুস্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হচ্ছে বলে অভিযোগ একাংশের। মাঝে মধ্যেই ছিনতাইবাজের হানার খবর পাওয়া যায়। উল্লেখ্য কিছুদিন আগেই পটাশপুর থানার ওসিকে লক্ষ করে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছিল।
উল্লেখ্য, এর আগে বিধানসভা ভোটের মুখে উত্তপ্ত হয়েছিল পটাশপুর। রাতভর বোমাবাজি চলেছিল পটাশপুর ও আশেপাশের এলাকায়। বোমার ঘায়ে জখম হয়েছিলেন পটাশপুর থানার ওসি দীপক কুমার চক্রবর্তী। জখম হয়েছিলেন আরও দুই পুলিশকর্মী।
তারপর ফের এই যুবককে গুলি করার ঘটনা নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় পটাশপুর এলাকায়। পুলিশ ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। ঠিক কী কারণে ওই যুবকের মৃত্যু হল, তা নিয়ে স্পষ্ট ছিল না। অবশেষে শুক্রবারের পর সবটাই স্পষ্ট হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘খুব পাকামি না, প্রথমেই টয়ট্রেন চাই!’, প্রশাসনিক বৈঠকে বেজায় চটলেন মুখ্যমন্ত্রী