CPIM: ফাঁকা মাঠে বারো গোল! বাংলায় এই ভোটে জিতে গেল সিপিএম

CPIM: বামেদের এই জয়ের চেয়ে বেশি চর্চা হচ্ছে তৃণমূল এবং বিজেপির প্রার্থী দাঁড় করাতে না পারা নিয়ে। হলদিয়া বিধানসভা রয়েছে বিজেপির দখলে। আর তৃণমূলের দখলে রাজ্য। ফলে সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে প্রার্থী না দিতে পারা নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের ঘাসফুল ও কেন্দ্রের পদ্মশিবির।

CPIM: ফাঁকা মাঠে বারো গোল! বাংলায় এই ভোটে জিতে গেল সিপিএম
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সমবায় দখল সিপিএমের

| Edited By: সঞ্জয় পাইকার

Jan 29, 2025 | 5:30 PM

হলদিয়া: ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতা হারিয়েছে তারা। তারপর সময় যত গড়িয়েছে, রাজ্যে শক্তিক্ষয় হয়েছে সিপিএমের। প্রধান বিরোধী দল হয়ে উঠেছে বিজেপি। পরপর তিনবার বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর এই বাংলাতেই এবার অন্য ছবি। প্রার্থীই দিতে পারল না তৃণমূল ও বিজেপি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একটি সমবায় জিততে চলেছে সিপিএম। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার।

হলদিয়া কনজিউমার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটিতে আগামী ২ মার্চ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এই সমবায় ব্যাঙ্কের ১২টি আসনে নির্বাচনের জন্য সোমবার ও মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন ধার্য হয়েছিল। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে ১৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সমবায় নির্বাচনের অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার।

এই ১৪ জনের মধ্যে একজনও তৃণমূল কিংবা বিজেপির প্রার্থী নন। বামেদের তরফে দাবি করা হয়েছে, ১৪ জন প্রার্থীই তাঁদের। কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই। অতিরিক্ত দুই প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন বলে সিপিএম জানিয়েছে। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। নির্বাচনের সম্ভাবনা না থাকায় মনোনয়নপত্র স্ক্রুটিনির পরই জয়ী প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হতে পারে।

তবে বামেদের এই জয়ের চেয়ে বেশি চর্চা হচ্ছে তৃণমূল এবং বিজেপির প্রার্থী দাঁড় করাতে না পারা নিয়ে। হলদিয়া বিধানসভা রয়েছে বিজেপির দখলে। আর তৃণমূলের দখলে রাজ্য। ফলে সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে প্রার্থী না দিতে পারা নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের ঘাসফুল ও কেন্দ্রের পদ্মশিবির।

২০১৬ সাল পর্যন্ত সমবায়টি বামেদের দখলে থাকলেও পরবর্তীতে তা তৃণমূলের দখলে যায়। তৃণমূল বোর্ডের মেয়াদ শেষে ২০২১ সালে প্রশাসক নিযুক্ত করা হয় সমবায় দফতরের তরফে। ফলে ৯ বছর বাদে ফের নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল সমবায় নির্বাচন কমিশন। তারপরও প্রার্থী না দিতে পারার প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলাস্তরের নেতারা মুখ খুলতে চাইলেন না। শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্বের বক্তব্য, খরচের কথা ভেবে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা।

আর বিজেপি নেতৃত্ব এই বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ। উল্টে বামেদের খোঁচা দিয়ে ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের রাজ্য সহসভাপতি প্রদীপ বিজলি বলেন, “ওই সমবায় যখন সিপিএমের দখলে ছিল, তখন শুধু সিপিএম পরিবারই সদস্য হয়েছে। অন্য কাউকে সদস্য করা হয়নি। বামেরা বরং ভাবুক ১২ জনের বদলে ১৪ জন কেন মনোনয়ন জমা দিলেন। নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে ভাবুক বামেরা।”

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সমবায়ে জয় নিয়ে জেলা সিপিএমের সদস্য পরিতোষ পট্টনায়ক বলেন, “তৃণমূল জোর করে আগেরবার সমবায়ের বোর্ড দখল করেছিল। গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনে জিততে পারবে না জেনেই প্রার্থী দিতে পারেনি এবার। আর BJP বিশ্বাসযোগ্যতার জায়গা হারিয়েছে। তাই বিজেপির হয়ে কেউ প্রার্থী হতে চাননি। আমাদের ১৪ জনের মধ্যে অতিরিক্ত দুই প্রার্থী নির্ধারিত সূচি মেনেই তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী ছাব্বিশের নির্বাচনে হলদিয়ার মানুষ বিজেপি ও তৃণমূলকে জবাব দিতে প্রস্তুত।