
পূর্ব মেদিনীপুর: জেলা সভাপতি বলছেন, পদ ছাড়ুন। কিন্তু ‘হকের’ গদি নিয়ে নাছোড়বান্দা চেয়ারম্যান। তৃণমূল সুপ্রিমো নিজে না বললে, ইস্তফা দেবেন না তিনি। আপাতত রাজ্যের শাসক শিবিরের অন্দরে তৈরি হয়েছে এই গদির বিবাদ। তাও আবার খাস শুভেন্দুর জেলায়। নির্বাচনের আগে এমন অন্তর্কলহ খারাপ ফলাফল টেনে আনবে না তো? চিন্তিত একাংশ।
গত সোমবারের কথা। তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযূষ পান্ডার হাত হয়ে এগরা পুরসভায় পৌঁছয় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নির্দেশ। তাতে বলা হয়, ইস্তফা দিতে হবে পুরসভার চেয়ারম্য়ান স্বপন নায়ক ও ভাইস চেয়ারম্যান সোমা চক্রবর্তীকে। এই পদত্যাগের জন্য় এক সপ্তাহের সময়ও বেঁধে দেওয়া হয় জেলা নেতৃত্ব তরফে। যার শেষদিন ছিল গতকাল অর্থাৎ সোমবার। কিন্তু কোনও পদত্যাগ জমা পড়েনি। উল্টে রণহুঙ্কার তুলে দিয়েছেন এগরা পুরসভার চেয়ারম্যান। নেতৃত্বের নির্দেশের দিকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তিনি।
সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুলতে নারাজ চেয়ারম্যান। তবে সূত্রের খবর, অন্দরে-অন্দরে দলের নেতা-কর্মীদের সাফ বার্তা দিয়ে দিয়েছেন তিনি। একটাই শর্তে পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন স্বপন নায়ক। তাঁর দাবি, ‘চেয়ারম্যান করেছেন নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তাই ইস্তফা দিলে, তাঁর নির্দেশেই দেব।’ কার বিরুদ্ধে ক্ষোভ চেয়ারম্যানের? সেই নিয়ে নানা জল্পনা দলের অন্দরে। আর এই বাদানুবাদের আবহে দু’দিন পর অর্থাৎ ২০ তারিখ পৌর এলাকার সাধারণ অধিবেশন ডেকেছেন তিনি। ফলত আরও অস্বস্তি বেড়েছে দলের অন্দরে। তাই এবার কড়া পদক্ষেপের কথা ভাবছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব।
চেয়ারম্যানের ‘প্রতিবাদী’ সত্তার জেরে বেজায় বিপাকে পড়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান সোমা চক্রবর্তী। তিনি পদ ছাড়তে রাজি থাকলেও চেয়ারম্যানের অসহযোগিতার কারণে সেই প্রক্রিয়া আপাতত আটকে রয়েছে। ইতিমধ্যেই এই অন্তর্কলহ নিয়ে মুখ খুলেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক। এদিন তিনি বলেন, ‘দল নির্দেশ দিয়েছে পদত্যাগের। তবে তিনি নিজেকে দলের উর্ধ্বে মনে করছেন। কিন্তু এমনটা মনে করার কোনও কারণ নেই। নিশ্চয়ই কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
অবশ্য এগরা পুরসভার চেয়ারম্য়ানের এই প্রতিবাদী রূপকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতারা। এদিন জেলা বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘ভাগ বাটোয়ারা সমস্যার জন্য তৃণমূল নতুন মুখ খুঁজছে। কালীঘাটে তোলা পৌঁছছে না, তাই স্বপন বাবুকে ইস্তফা দিতে বলেছে। স্বপনবাবুর এই প্রতিবাদকে জনসাধারণ হিসাবে আমি সমর্থন জানাই।’