Panskura: ‘বাবা-মাকে আনবি, না হলে জেলে ভরে দেব, আমি পুলিশ’, শোকে পাথর কৃষ্ণেন্দুর মা
Panskura: শুভঙ্করের শাস্তি চেয়ে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, "আমরা ওর শাস্তি চাই। আমরা অভিযোগ জানাব। তিনটে কুড়কুড়ের মূল্যের জন্য আমার সন্তান চলে গেল। আমি ওই মূল্য দিয়ে দেব। আমার সন্তানকে ফিরিয়ে দাও।"

পাঁশকুড়া: চিপসের প্যাকেট চুরির অপবাদে তাঁর নাবালক সন্তান কীটনাশক খেয়ে মারা গিয়েছে। ২৪ ঘণ্টা পরও বুঝে উঠতে পারছেন না কোথা থেকে কী হল। শোকে পাথর পাঁশকুড়ার গোসাইবেড়ের কৃষ্ণেন্দু দাসের মা সুমিত্রা দাস। সন্তান হারিয়ে বললেন, “আমার বুক খালি হয়ে গিয়েছে। আমার ছেলের মৃত্যুর জন্য সিভিক ভলান্টিয়ারই দাবি। আমি শুভঙ্করের শাস্তি চাই।”
গোসাইবেড়ে নাবালকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গতরাতেই ধুন্ধুমার বেধেছিল পাঁশকুড়ায়। সামান্য একটি চিপসের প্যাকেট চুরির অপবাদ দেন স্থানীয় দোকানদার শুভঙ্কর দীক্ষিত। তিনি সিভিক ভলান্টিয়ারও। যদিও পরে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দোকানের সামনে পড়েছিল চিপসের প্যাকেটটি। ওই নাবালক তা চুরি করেনি। তবু তাকে চোর অপবাদ দিয়ে মারধর করা হয় ও কান ধরে উঠবস করানো হয় বলে অভিযোগে। অপবাদ সহ্য করতে না পেরে কীটনাশক খায় ওই নাবালক। গতকাল তমলুক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
ওই নাবালকের মৃতদেহ নিয়ে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীরা। এমনকি তাঁর বাড়িও ভাঙচুর করা হয়। পাঁশকুড়া পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। এরপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ৬ জন গ্রামবাসীকে গ্রেফতারও করেছে।
এদিন ওই নাবালকের মা বলেন, “আমার ছেলে আমায় বলেছিল, মা আমি চুরি করিনি। কিন্তু, ওই সিভিক ভলান্টিয়ার আমার ছেলেকে বলেছিল, তোর বাবা-মাকে নিয়ে আয়। না হলে জেলে ভরে দেব। আমি পুলিশ। ছেলে এসে আমায় একথা বলে। তারপরই আমি ছেলেকে নিয়ে যাই। সেখানে ছেলেকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য সামান্য শাসন করি। কিন্তু, আমি তখনও জানতাম না, আমার ছেলেকে চোর অপবাদ দিয়ে মারধর করেছে।”
শুভঙ্করের শাস্তি চেয়ে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, “আমরা ওর শাস্তি চাই। আমরা অভিযোগ জানাব। তিনটে কুড়কুড়ের মূল্যের জন্য আমার সন্তান চলে গেল। আমি ওই মূল্য দিয়ে দেব। আমার সন্তানকে ফিরিয়ে দাও।” ৬ জনকে গ্রেফতার করার বিরুদ্ধেও সরব হন তিনি।
অন্যদিকে, শুভঙ্করের বাবা সূর্যকান্ত দীক্ষিত দাবি করেন, তাঁর ছেলে নির্দোষ। চক্রান্ত করে তাঁদের দোকানে তালা মেরে দেওয়া হয়েছে। পলাতক দোকানদারের স্ত্রী নিশা দীক্ষিত বলেন, “২০০-২৫০ জন এসেছিল। প্রত্যেকের হাতে বাঁশ-লাঠি ছিল। ওরা বলে, এর এক বাচ্চাকে নিয়ে আয়। বাচ্চাদের নিয়ে ভয়ে রয়েছি।”

