
মহিষাদল: চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ভাল ফলের পিছনে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ‘অবদান’ স্বীকার করেন শাসকদলের নেতারা। আর সেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়েই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলছেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পেয়েও অনেক ‘মা’ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে ভোট দেননি। পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তাঁর আবেদন, “দিদিকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার।” লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প নিয়ে মন্ত্রীর এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছে বিজেপি।
‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ প্রকল্পে কেমন সাড়া পড়ছে, পাড়ার সাধারণ মানুষ কী চাইছেন, সেই সব খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার মহিষাদল ব্লকের দুটি অঞ্চল নাটশাল-১ ও নাটশাল-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পৃথক দুটি শিবির পরিদর্শন করেন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মহিষাদলের বিধায়ক তিলককুমার চক্রবর্তী,মহকুমা শাসক সুপ্রভা চট্টোপাধ্যায়, মহিষাদলের বিডিও বরুণাশিস সরকার,মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলি দাস-সহ অন্যরা।
নাটশাল-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্যাম্পে বক্তব্য রাখতে গিয়েই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের কথা টেনে আনেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “দিদি রাজ্যের মহিলাদের কথা ভেবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু করেন। ২০২৪ সালের ৫ এপ্রিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে যাঁরা ৫০০ টাকা পেতেন, সেটা বেড়ে হল ১০০০ হাজার। আর যাঁরা ১০০০ টাকা পেতেন, সেটা বেড়ে হল ১২০০ টাকা। ওই মাসেই লোকসভা ভোট হল। মায়েরা বললেন, অ্যাকাউন্টে ৫০০ টাকাটা ১০০০ টাকা হয়েছে। এবার আর হেঁটে ভোটকেন্দ্রে যাব না। টোটো-অটোতে ভোটকেন্দ্রে যাব। তাঁরা টোটো-অটোতে ভোটকেন্দ্রে গেলেন। কিন্তু, অনেক মা রয়েছেন, যাঁরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জোড়া ফুলকে ভুলে গিয়ে অন্য ফুলকে পছন্দ করে নিলেন। অন্য ফুলকে পছন্দ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখটাই ভুলে গেলেন। এই রকম করলে আমরা দুর্বল হব, সমাজ দুর্বল হবে। আমাদের মতো দাদারা না থাকলেও কিছু যায় আসবে না। কিন্তু দিদিকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। এ কথাটা ভুললে চলবে না। দিদি না থাকলে আমরা সবাই দুর্বল হয়ে যাব।”
সরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে মন্ত্রীর এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য সরকার যে সমস্ত প্রকল্প চালু করে, তা সাধারণ মানুষের করের টাকা। সেই টাকা দিয়ে নিজের প্রচার করতে পারেন না। যতই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে লোভ দেখানো হোক, ভোট বাক্সে সাধারণ মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করেছেন। আগামী ২০২৬-র বিধানসভা নির্বাচনেও করবেন।”