পূর্ব মেদিনীপুর: ‘তুমি কি কেবলই ছবি, শুধু পটে লিখা…’, রবীন্দ্রনাথ একদা এই গানটি লিখেছিলেন তাঁর নতুন বৌঠানকে স্মরণ করে। কিন্তু সেই গানই যেন সত্যি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্য। কেবল ইতিহাসের পাতাতেই তাঁদের ঠাঁই! স্বাধীনতার ৭৫ বছর কেটে যাওয়ার পরে অবহেলিত ভারতের প্রথম মহিলা শহিদ স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা তমলুকের আলীনান গ্রামের মাতঙ্গিনী হাজরা। অবহেলায় পড়ে রয়েছে তাঁর বাস্তুভিটে। হয়নি সংস্কার। এগিয়ে আসেনি কোনও সরকারের প্রতিনিধি। অভিযোগ, শহিদ পরিবারের।
তৎকালীন স্বাধীনতা সংগ্রামে মহিলাদের অগ্রণী ভূমিকার এ ক্ষেত্রে কিছুটা নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সমস্ত নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করেই গান্ধীজির আদর্শে গান্ধী বুড়ি আখ্যায়িত মাতঙ্গিনী হাজরা ছিলেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতাসংগ্রামের অন্যতম শহিদ । ১৯৪২ সালে ২৯ শে সেপ্টেম্বর তমলুকের বেনেপুকুর পাড়ে ইংরেজদের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। ১৯৭৩ সালে ভারতবাসীর মনেপ্রাণে স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখার জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তমলুকের আলীনান গ্রামে এসে মাতঙ্গিনী হাজরার শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করেছিলেন । মাতঙ্গিনী হাজরা যেই বাড়িতে সংগ্রামী ক্রিয়কর্ম চালাতেন সেই বসতভিটেও সংরক্ষণ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন ‘ম্যাডাম প্রাইমমিনিস্টার’। তারপর কেটে গিয়েছে বহু বছর। পরিবর্তন হয়েছে একাধিক সরকারের কিন্তু বদল আসেনি বিপ্লবীর দালানবাড়ির ।
মাতঙ্গিনীর পরিবারের বর্তমান সদস্য়দের অভিযোগ, বাড়ির অবস্থা এখন ভগ্নপ্রায়। মাতঙ্গিনীর ব্যবহার্য জিনিসপত্র রাখার জন্য ছোট্ট একটি সংগ্রহশালা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে বটে ওই বাড়িতেই, কিন্তু সংরক্ষণের অভাবে তার আয়ুও বেশিদিন নেই। মাতঙ্গিনীর স্মৃতি বিজড়িত সেই দালানবাড়ি অক্ষত রাখতে তত্পর শাসক ও বিরোধী শিবির এমনটাই খবর সূত্রের। প্রশ্ন উঠছে ১৯৭৩ সালের পর থেকে কেন সংরক্ষণ করা হল না ভারতের প্রথম মহিলা বিপ্লবীর স্মৃতি? যদিও, সমস্ত বিতর্ক এড়িয়ে গিয়েছে শাসক ও বিরোধী শিবির। প্রয়োজনে যৌথভাবে এই শহিদের স্মৃতি সংরক্ষিত হবে বলেই দাবি রাজনৈতিক শিবিরের। আরও পড়ুন: ভিডিয়ো: ‘মুর্দাবাদ পাকিস্তান’, স্বাধীনতা দিবসে স্লোগান দিলেন শুভেন্দু অধিকারী