সরকারি অফিসে তাণ্ডব, আধিকারিককে মারধর! গ্রেফতার মৎস্য মন্ত্রীর আত্মীয়

Arrest: অভিযোগ, মন্ত্রীর ভাগ্নের পরিচয় দিয়ে প্রতিদিন দুপুর গড়ালে তবেই অফিসে ঢুকতেন সুমন। তারপর টেবিলের ওপর পা তুলে মোবাইলে গেম খেলে সারা দিন কাটিয়ে দিতেন। অভিযোগ এখানেই শেষ নয়। অন্যান্য কর্মীর দাবি, সুমন নিজেও অফিসে কাজ করেন না এবং কাউকে কাজ করতেও দেন না।

সরকারি অফিসে তাণ্ডব, আধিকারিককে মারধর! গ্রেফতার মৎস্য মন্ত্রীর আত্মীয়
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 24, 2021 | 5:41 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: তিনি মন্ত্রীর ভাগ্নে। তাই অফিসে কাজ না করেও সমস্ত সুবিধা নেন। উপরন্তু রীতিমতো তান্ডব চালান, আধিকারিকদের গায়ে হাত পর্যন্ত তোলেন। এমনই অভিযোগে শুক্রবার গ্রেফতার করা হল রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী অখিল গিরির ভাগ্নে সুমন মাইতিকে।

জানা গিয়েছে, সরকারি অফিসের চুক্তি ভিত্তিক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সুমন মাইতি। তিনি নিজেকে পরিচয় দিতেন মৎস্য মন্ত্রী অখিল গিরির ভাগ্নে বলে। তাঁর দাবি, মন্ত্রীর ভাগ্নে হওয়ায় তাঁকে সব সুবিধা দিতে হবে। দিনের পর দিন নানা অনিয়মের জন্য বারবার তাঁকে সতর্ক করা হয়। কিন্তু তাতেও হুঁশ ফেরেনি।

এরপর সম্প্রতি কৃষি আধিকারিক নির্মল কুমার দিন্দা তাঁকে হাজিরা খাতায় সই করতে বাধা দেন। আর তার পরই নাকি সুমন মাইতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তিনি মন্ত্রীর ভাগ্নে। তার ক্ষেত্রে এ সব নিয়ম খাটবে না। এরপর শুক্রবার অফিসে রীতিমতো তাণ্ডব চালান তিনি। আধিকারিকদের গায়ে হাত তোলারও অভিযোগ উঠেছে সুমনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের কৃষি দফতরে।

অভিযোগ, মন্ত্রীর ভাগ্নের পরিচয় দিয়ে প্রতিদিন দুপুর গড়ালে তবেই অফিসে ঢুকতেন সুমন। তারপর টেবিলের ওপর পা তুলে মোবাইলে গেম খেলে সারা দিন কাটিয়ে দিতেন। অভিযোগ এখানেই শেষ নয়। অন্যান্য কর্মীর দাবি, সুমন নিজেও অফিসে কাজ করেন না এবং কাউকে কাজ করতেও দেন না। সহকর্মী থেকে অফিস কর্তা কাউকে মানেন না। বাধা দিলে জোটে ধমক। বলে দেন, তাঁর মামা মন্ত্রী। গ্রুপ ডি কর্মীদের বসার জন্য একটি ঘর বরাদ্দ করেছে দফতর। সেই ঘরে বসে সে অন্যান্যদের নির্দেশ দিতেন তিনি বলে অভিযোগ।

এবিষয়ে ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা নির্মল কুমার দিন্দা বলেন, কর্মী হিসেবে বার বার বোঝানো সত্ত্বেও সুমন কোনও কথা শোনেনি। বরং আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে।” দেশপ্রাণ ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক শুভজিৎ জানা বলেন, “খবর পেলাম ব্লকের কৃষি দপ্তরে গ্রামের কিছু মানুষ বিক্ষোভ দেখছেন। ঘটনার খোঁজ নিতে দপ্তরে এসে দেখি বিস্তর অভিযোগ। গ্রুপ ডি কর্মী সুমন মাইতির বিরুদ্ধে সহকর্মীদের মারধর সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, ব্লক কৃষি আধিকারিকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং সরকারি নথি নষ্ট করা ছাড়াও পরিষেবা নিতে আসা গ্রাহকদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার এবং হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। এত সাহস কোথা থেকে পান! ওনার নামে কাঁথি থানায় অভিযোগ করতে বলেছি। কৃষি আধিকারিক এবং মহকুমা শাসককেও এ ব্যাপারে জানিয়েছি।”

শনিবার দফতরে আসা উপভোক্তাদের বক্তব্য, গত কাল দেখি দেশপ্রাণ ব্লকের কৃষি দপ্তরে এসে দেখি মারপিট অশান্তি চলছে।” এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন সুমন। এই ঘটনা নিয়ে জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি তথা অখিল গিরির ছেলে সুপ্রকাশ গিরি অবশ্য দাবি করেন, সুমনের সঙ্গে তাঁদের পরিবারের কোনও যোগ নেই। বলেন, “সরকারি সম্পত্তি যে নষ্ট করবে তাকেই উপযুক্ত শাস্তি পেতে হবে। সে যেই হোক, আমি কাঁথি থানার আধিকারিক কে আবেদন করবো যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়। ও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। হোমে পাঠানো উচিত।” এর পর এদিনই সুমনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আরও পড়ুন: প্রাচীন মোহর বিক্রির নামে জালিয়াতি, গ্রেফতার ৩