Haldia: ৭ কোটির কেস খেয়ে বসে আছে! পানামার জাহাজ এখনও হলদিয়া বন্দরেই
Calcutta High Court: সোমবার দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা থাকলেও আপাতত আদালতের নির্দেশে হলদিয়া বন্দরের ডক এরিয়ার ৩ নম্বর বার্থে রয়েছে জাহাজটি। জানা গিয়েছে, খারাপ হয়ে যাওয়া পণ্যের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭ কোটি টাকা জমা দিলে তবেই ছাড় পাবে জাহাজটি।
পূর্ব মেদিনীপুর: কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে আগে জরিমানা দেবে, তারপর দেশ ছাড়তে পারবে। তার জেরে আপাতত হলদিয়াতেই আটকে পানামার পতাকাবাহী জাহাজ। হলদিয়া বন্দরে খারাপ কাঁচামাল নামিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল পণ্যবাহী ওই জাহাজের বিরুদ্ধে। এরপরই জরুরি ভিত্তিতে শুনানি হয় রবিবার রাতে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলার শুনানি হয়। আর সেখানেই আদালত নির্দেশ দেয়, ৭ কোটি টাকা জরিমানা হিসাবে জমা রাখতে হবে ওই জাহাজকে। তারপরই দেশ ছাড়তে পারবে। পরবর্তী শুনানি হবে ১২ অগস্ট। তার আগে পর্যন্ত দেশ ছাড়তে পারবে না জাহাজটি।
সোমবার দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা থাকলেও আপাতত আদালতের নির্দেশে হলদিয়া বন্দরের ডক এরিয়ার ৩ নম্বর বার্থে রয়েছে জাহাজটি। জানা গিয়েছে, খারাপ হয়ে যাওয়া পণ্যের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭ কোটি টাকা জমা দিলে তবেই ছাড় পাবে জাহাজটি।
বন্দর সূত্রে খবর, ইন্দোনেশিয়ার ফুটন বন্দর থেকে কলকাতার একটি সংস্থার জন্য ৮ হাজার মেট্রিক টন উডপাল্প নিয়ে এসেছিল এমভি পিএইচ জিয়াং মিন নামের ওই জাহাজ। পানামার পতাকাবাহী জাহাজটি হলদিয়া বন্দরে এসেছিল গত ২৫ জুলাই সন্ধ্যা নাগাদ।
হলদিয়া বন্দরের ৯ নম্বর বার্থে ২৭ জুলাই মর্নিং শিফ্ট থেকে পণ্য খালাস শুরু হয়। প্রায় ৪৬ কোটি টাকার উড পাল্প নিয়ে এসেছিল বিদেশি জাহাজটি। ওই উডপাল্প নিউজ প্রিন্ট ও কাগজ তৈরির কাজে লাগে। তিন দিনে ওই পণ্য নামিয়ে জাহাজটির ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পণ্যের একাংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
জাহাজে থাকা পণ্যের মধ্যে ১ হাজার ৩১২ টন উডপাল্প নষ্ট হয়ে গিয়েছিল বলে জানা যায়। ভারতীয় টাকায় যার বাজার মূল্য ৮ কোটি ৪৮ লক্ষ ৭৭ হাজার ৪৮০ টাকা। ওই বন্দর সূত্রে খবর, জাহাজের হ্যাচে রাখা উডপাল্পের একাংশ খুবই খারাপ ছিল। এতটাই খারাপ যে জাহাজ থেকে নামানোর সময় ছিড়ে যাচ্ছিল। ধীরে ধীরে নামাতে ৩ দিনের জায়গায় ৬-৭ দিন লেগে যায়।
এরইমধ্যে পণ্য নষ্ট হওয়ার ঘটনায় জাহাজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মালিক সংস্থার টানাপোড়েন শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে কলকাতার ওই পেপার সংস্থা জাহাজ সংস্থার কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে। তবে তাতে রাজি হয়নি জাহাজ কর্তৃপক্ষ। উল্টে ৫ তারিখ সোমবার হলদিয়া বন্দর ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করছিল।
সোমবার আদালত শুরুর আগেই যেহেতু জাহাজটি বন্দর ছেড়ে যেত, তাই রবিবার রাতে জরুরি শুনানি হয় হাইকোর্টে। রাত ৯টার সময় বসে এজলাস। জাহাজটির হলদিয়া বন্দর ছাড়ায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবিতে আবেদন করেছিল কলকাতার ওই সংস্থা। আমদানিকারী সংস্থা আদালতে জানায়, জাহাজ বন্দর ছেড়ে চলে গেলে নষ্ট হয়ে যাওয়া পণ্যের ক্ষতিপূরণ আদায় কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে।
শুনানির পর হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, ৮ অগস্ট বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জাহাজটি হলদিয়া ছাড়তে পারবে না। নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। পরবর্তী শুনানি হবে ১২ অগস্ট। হাইকোর্টের নির্দেশ, হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ। তাদের বক্তব্য, বিষয়টি বিচারাধীন।