TMC: দলীয় নির্দেশে ইস্তফার কয়েক ঘণ্টা পরেই গ্রেফতার সদ্য প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান সেলিম

Purba Medinipur: ইস্তফার কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই বুধবার সন্ধেয় পুলিশের হাতে গ্রেফতার সদ্য প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান। কোলাঘাট থানার পুলিশ এদিন সন্ধেয় তাঁকে গ্রেফতার করেছে।

TMC: দলীয় নির্দেশে ইস্তফার কয়েক ঘণ্টা পরেই গ্রেফতার সদ্য প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান সেলিম
গ্রেফতার সেলিম আলি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 28, 2022 | 11:02 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: দলীয় নির্দেশে বুধবার সকালেই পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সেলিম আলি। তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) শান্তিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। আর তাঁর ইস্তফার কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই বুধবার সন্ধেয় পুলিশের হাতে গ্রেফতার ওই সদ্য প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান। কোলাঘাট থানার পুলিশ এদিন সন্ধেয় তাঁকে গ্রেফতার করেছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুর সফরে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘এক ডাকে অভিষেক’ কর্মসূচির কথা বলেছিলেন। সূত্রের খবর, সেখানে এই সেলিম আলির বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছিল।

দলীয় সূত্রে খবর, সেলিম আলির বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ আসতেই দলের তরফে অন্তর্তদন্ত শুরু করা হয়েছিল। দলের সেই অন্তর্তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচাই করে দেখা হয়েছিল। এরপর তৃণমূলের তরফে তাঁকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল বলে খবর। আর এরপরই বুধবার সকালে প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। যদিও সেলিমের দাবি, কোনও নির্দেশে নয়, শারীরিক অসুবিধার কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন। এরপর কয়েক ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই গ্রেফতার সেলিম আলি। জানা গিয়েছে, বোল্ডার দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে।

এদিন দুপুরে সেলিম আলি জানিয়েছিলেন, “আমি দশ পয়সার দুর্নীতি করিনি। সবাইকে নিয়ে পঞ্চায়েত চালিয়েছি। একাধিক পদে ছিলাম একটা পদ ছাড়লাম। বিডিও, দলের জেলা সভাপতির কাছে আমার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। তৃণমূলে আছি। সক্রিয়ভাবেই যুক্ত থাকব দলীয় কাজে।” আর এরপরই বুধবার সন্ধেয় গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে।

পুলিশ সূত্রের খবর, ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তথা অধুনা বিজেপির নেতা বলে পরিচিত দিবাকর জানার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ লিখিয়েছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মণ। ব্লক এলাকায় রাস্তা সংস্কারের নামে নেওয়া এক হাজার গাড়ি বোল্ডার আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছিল। সেই দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে এদিন সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি দিবাকর জানাকেও গ্রেফতার করেছে তমলুক থানার পুলিশ। তাঁদের উভয়কেই জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথকে। ঘটনাকে ঘিরে কার্যত শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলা তথা রাজ্য রাজনীতিতে।

জানা গেছে,সেলিম আলির মূল ব্যবসা ঠিকাদারি। কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাইয়ের ঠিকাদারি থেকে শুরু করে আইএনটিটি ইউসির নামে তোলাবাজি ও কাটমানি নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, পৈত্রিক সম্পত্তি ছাড়াও স্বনামে ও বেনামে একাধিক সম্পত্তির মালিক তিনি, এমনও শোনা যায়। মেচেদা এলাকায় দুটি বাড়ি ছাড়াও তাঁর একাধিক বাড়ি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গ্রাম প্রধানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ার পর সেগুলির সত্যতা যাচাই করতে শুরু হয় দলীয় তদন্ত।

প্রসঙ্গত, তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “দলীয় নির্দেশে শান্তিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পদত্যাগ করেছেন। দলীয় নির্দেশ মতো অন্যান্যপদগুলি থেকেও তাঁকে সরিয়ে ফেলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’ এই গ্রেফতারির বিষয়ে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মানুষের কাছে তৃণমূলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে পদত্যাগের নাটক চলছে।” যদিও দিবাকর জানার গ্রেফতার প্রসঙ্গে মন্তব্য এড়িয়েছেন তিনি।