Digha News: পাহাড়ে বিপর্যয়, তাই গিজগিজে ভিড় দিঘায়
Purba Medinipur: পর্যটন ও পরিবহণ সংস্থাগুলির তথ্য অনুযায়ী, পুজোর মরশুম এবং শীতকালে পর্যটকদের গন্তব্য মূলত পাহাড় থাকে। বর্তমানে পর্যটকদের বিরাট অংশ পাহাড়ে ঘুরতে যান। বরফ উপভোগ করেন। কিন্তু রাজ্য হোক বা দেশ, পাহাড়ে অনিশ্চয়তা এড়িয়ে নিরাপদ ও সহজ গন্তব্যের জায়গা খুঁজছেন তারা।

দিঘা: কথায় বলে কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ! দিঘার অবস্থাও যেন এখন তাই। অকাল বৃষ্টি, ভূমিধস ও অপ্রত্যাশিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উত্তরবঙ্গ-উত্তর ভারত এবং উত্তর-পূর্বের জনপ্রিয় পাহাড়ি পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সিকিম, হিমাচল, উত্তরাখণ্ড এবং দার্জিলিংয়ের মতো অঞ্চলে রাস্তা বন্ধ। বাতিল হচ্ছে বুকিং। কার্যত ভয়ে পর্যটকরা। আর তাই বিপর্যয়ের মুখে পাহাড়ে যেতে খানিক আতঙ্কে ভ্রমণপিপাসুরা। আর এই নেতিবাচক পরিস্থিতিই নতুন করে আশা জাগিয়েছে উপকূলবর্তী সৈকতগুলির পর্যটন শিল্পে।
পর্যটন ও পরিবহণ সংস্থাগুলির তথ্য অনুযায়ী, পুজোর মরশুম এবং শীতকালে পর্যটকদের গন্তব্য মূলত পাহাড় থাকে। পৌষমাসে ঘুরতে যান তাঁরা সেখানে। বর্তমানে পর্যটকদের বিরাট অংশ পাহাড়ে ঘুরতে যান। বরফ উপভোগ করেন। কিন্তু রাজ্য হোক বা দেশ, পাহাড়ে অনিশ্চয়তা এড়িয়ে নিরাপদ ও সহজ গন্তব্যের জায়গা খুঁজছেন তারা। ফলস্বরূপ এ রাজ্যের দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর থেকে ওড়িশার পুরী, গোপালপুর সমুদ্র সৈকতেই পর্যটকদের ভিড় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিশেষ করে দিঘায় এখন উপরি পাওনা জগন্নাথ ধাম দর্শণ। গত এপ্রিলে মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই বাংলার সমুদ্র শহরে পর্যটকের সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়েছে। দুর্যোগ সত্ত্বেও দুর্গাপুজোর চারদিন দিঘায় অপ্রত্যাশিত ভিড় তৈরি হয়েছিল যার রেশ এখনও অব্যাহত। এরই মধ্যে উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে পাহাড়মুখী পর্যটকরা সমুদ্রকে বিকল্প হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। পর্যটকরা জানাচ্ছেন, দার্জিলিং বুকিং ছিল কিন্তু ওখানকার ওই পরিস্থিতি জন্য বাতিল করে এখন অর্থাৎ দিঘায় এসেছি।
দিঘা শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, “এখন সমুদ্র উপকূলের আবহাওয়া ভীষণ মনোরম এবং তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। তাই পাহাড়বিমুখ পর্যটকদের স্রোত দিঘামুখী হওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।” নিউ দিঘার হোটেল ব্যবসায়ী দিব্যেন্দু দোলাই জানান, “যাঁদের পাহাড় ভ্রমণ বাতিল হয়েছে, তাঁরা দিঘা আসার জন্য যোগাযোগ করছেন। ফলে ভাইফোঁটা পর্যন্ত ভিড় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
তবে এই অতিরিক্ত চাপ সামলাতে সৈকতগুলিতে পরিকাঠামোগত উন্নতি ও নিরাপত্তা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকে। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসক নিরঞ্জন মণ্ডল ফোনে জানান, “সামনে ভরা পর্যটন মরশুম। তার আগেই দিঘার একাধিক পার্ক ও রাস্তাঘাট সাজিয়ে তোলার কাজ চলছে। হোটেল ভাড়া ও নিরাপত্তার বিষয়েও পর্ষদ নজর রাখছে।” সব মিলিয়ে পাহাড়ের এই বিপর্যয় সাময়িকভাবে হলেও সৈকতের পর্যটনে এক নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে।
