Clash in Moyna: টোটো ভাঙা নিয়ে বচসা, পুলিশের সঙ্গে দা-কাটারি নিয়ে ‘খণ্ডযুদ্ধ’ মহিলাদের, তপ্ত ময়না!

Purba Medinipur: ময়না থানার পুলিশ আরও জানিয়েছে, এলাকায় শান্তি স্থাপন করতে ব্যারাকপুর ও দুর্গাপুর থেকে ৬০ জনের বিশেষ পুলিশ টিম নিয়ে আসা হয়। গোটা এলাকায় চলে পুলিশি পেট্রোলিং

Clash in Moyna: টোটো ভাঙা নিয়ে বচসা, পুলিশের সঙ্গে দা-কাটারি নিয়ে 'খণ্ডযুদ্ধ' মহিলাদের, তপ্ত ময়না!
তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষ, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 29, 2021 | 1:27 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে ময়নায় ক্রমেই বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। রবিবার রাত থেকেই অশান্তির আগুন ছড়িয়েছিল ময়নায়। ওইদিন রাতেই টোটো ভাঙাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, টোটো ভাঙা নিয়ে শাসক ও বিরোধী শিবির (TMC BJP Clash) সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পৌঁছতেই পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের খণ্ডযুদ্ধ বাধে বলে অভিযোগ। সংঘর্ষের ঘটনায় ইতিমধ্যেই  ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ঠিক কী হয়েছিল?  স্থানীয়দের অভিযোগ, রবিবার রাতে একটি টোটো ভাঙাকে কেন্দ্র করে ময়নার আড়ং কিয়ারানা গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। সেই সংঘর্ষের মধ্যে  পুলিশ  পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে আসে। কিন্তু, গ্রামের মধ্যে ঢুকে পুলিশকর্মীরা ধরপাকড় চালায় ও লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। এমনকী, গ্রামের মহিলা ও শিশুদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

এক গ্রামবাসীর কথায়, “আমাদের ঘরের মধ্যে ঢুকে এসে মারধর করেছে। আমাদের কাপড় ছিড়েছে। বাচ্চাদেরও ছাড়েনি। যেখানে যেখানে হাত দিয়েছে আমরা দেখাতে পারব না। কয়েকজনকে হঠাত্‍ করে তুলে নিয়ে চলে গিয়েছে। আমরা কীভাবে বাস করছি আমরাই জানি।”

এদিকে, পাল্টা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে,  রবিবার রাতে টোটো ভাঙা নিয়ে এলাকার তৃণমূল-বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি ক্রমশ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে উঠলে ঘটনাস্থলে যান পুলিশকর্মীরা। সেইসময় তাঁরা গ্রামে ঢুকতে গেলে মহিলারা দা, কাটারি, লাঠি, বঁটি নিয়ে পুলিশকে আটকায় বলে অভিযোগ। এরপরেই পুলিশের সঙ্গে তাঁদের কার্যত খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। তবে কোনওরকম লাঠিচার্জ করা হয়নি।

ময়না থানার পুলিশ আরও জানিয়েছে, এলাকায় শান্তি স্থাপন করতে ব্যারাকপুর ও দুর্গাপুর থেকে ৬০ জনের বিশেষ পুলিশ টিম নিয়ে আসা হয়। গোটা এলাকায় চলে পুলিশি পেট্রোলিং। জেলা পুলিশ সুপার অমরনাথ কে জানিয়েছেন, সংঘর্ষের ঘটনায় মোটা ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১২ জন বিজেপি সমর্থক। বাকি ৩জন তৃণমূল সমর্থক। সেই ১৫ জনের মধ্যে বেশ কিছু মহিলাও রয়েছেন। ধৃতদের মধ্যে ৬ বিজেপি সমর্থককে রবিবার রাতেই ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেওয়া হয়েছে। বাকিদের সোমবার আদালতে তোলা হবে।

জেলা পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, ময়নায় বিক্ষিপ্তভাবে অশান্তি কিছুতেই প্রতিহত করা যাচ্ছে না। ভৌগোলিক পরিস্থিতির কারণেই এলাকায় ঢুকে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্তারা। রবিবার রাতের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের পর এলাকা জুড়ে পুলিশ পেট্রোলিং চলছে। পরিস্থিতিও এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত বলেই জানিয়েছেন পুলিশকর্তারা।

এদিকে,  সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ করেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের দাবি, পুলিশ কেবল শাসক পক্ষের হয়েই কাজ করে। তাই ঘরে ঢুকে মহিলা ও শিশুদের মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিজেপি নেতার মন্তব্য, “তৃণমূলের হার্মাদবাহিনী বাইরে থেকে এসে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের উফর হামলা চালাচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনকে বলেও কোনও লাভ হচ্ছে না। আমাদেরই কর্মীরা মার খাচ্ছে। লুঠপাঠ চালানো হচ্ছে। অভিযোগ করলে পুলিশ আমাদেরই কর্মীদেরই মারধর করছে। মহিলা ও শিশুদেরও রেয়াদ করছে না।”

অন্যদিকে, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, দুষ্কৃতী কোনও রাজনৈতিক দলের হয় না। পুলিশ কেবল তাদেরই ধরপাকড় করছে যারা দুষ্কৃতী। যদি, দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করে বা সংঘর্ষ বাধায় তাহলে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে বলেই জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা।

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই খেজুরি ও ময়নাতে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল গোটা এলাকা। বাড়ির পর বাড়ি ভাঙচুর, বোমাবাজি, গুলিবর্ষণ চলে প্রায় রাতভর। এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী ও র‍্যাফ। খেজুরি ২ নম্বর ব্লকের কটকা, দেবীচক, গোরাহাট ও জলপাই ও মুণ্ডমারির একাধিক গ্রামে ভাঙচুর করা হয় বাড়িঘর। রাতভর বোমাবাজি ও গুলিবর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। বোমাবাজির ফলে ভেঙে যায় একের পর এক বাড়ি। আচমকা বোমাবাজির জেরে আতঙ্কিত  হয়ে পড়েন এলাকাবাসী।

আরও পড়ুন: Udayan Guha on BSF: ‘সীমান্ত থেকে গ্রামের ভেতরে ঢুকে খবর নিচ্ছে…২০২৪-এর জন্য কি তৈরি হচ্ছে BSF?’