পূর্ব মেদিনীপুর: ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। কার্যত একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করলেন তাঁরা। প্রকাশ্যে এল কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তরুণ জানা এবং মন্ত্রী অখিল গিরির গোষ্ঠী কোন্দল।
শুক্রবার কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের বাসন্তিয়া স্কুল মাঠে তৃণমূল কংগ্রেসের আয়োজিত বিজয়া সম্মেলনীতে নাম না করে অখিল গিরি ও তাঁর ছেলের নামে কটাক্ষ করা হয় বরংবার। সেখানে পঞ্চায়েত সমিতি সহ-সভাপতি বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “বোঝাই যাচ্ছে গিরিবাবু একধারে সমান্তরাল একটা আলাদা লবি তৈরির চেষ্টা করছেন।”
এরপর, গতকাল রামনগরে পানমাণ্ডিতে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয় সম্মেলনীতে উপস্থিত হন মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি। তিনি কার্যত নাম করেই পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তরুণ জানা ও কাঁথি ১ ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রদীপ গায়েনের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেন। বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতি সব ক্ষেত্রে আমাদের নজর রয়েছে দুর্নীতি করলে মানুষ কাউকে ছাড়বে না।” এখানেই শেষ নয়,
আখিলবাবু আরও বলেন,”তরুণবাবু ও প্রদীপবাবু যে শিবিরে ছিলেন সেই শিবির থেকে অনেক চক্রান্ত হয়েছিল। কথায় আছে না চালুনি সূঁচকে বলে তোর পিছনে কেন ছাঁদা। তাঁরা হচ্ছে চালুনি। নিজেদের চেহারাটা আয়নায় দেখলে তা প্রমাণ হয়ে যাবে। তরুণবাবু তার নিজের ব্লকটা সামলাক। প্রদীপ বাবু নিজের চেহারাটা আয়নায় দেখুক। তাহলে প্রমাণ হয়ে যাবে কে দুর্নীতিগ্রস্ত, কে দুর্নীতিগ্রস্ত নয় “।
এখানেই শেষ নয়, পাল্টা সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব তরুণ কুমার মাইতি। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন,” একটাই লাইন-একটাই দল। টিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই লাইনে প্রত্যেককে থাকতে হবে,প্রত্যেককে কাজ করতে হবে। বিচ্ছিন্ন চিন্তা করলে আপনি দূরে চলে যাবেন, মেন লাইনে থাকতে পারবেন না।”
এদিকে, গত ২৫ অগাস্ট দলের নেতাকেই ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন অপর এক তৃণমূল নেতা। জঙ্গিপুরের সাংসদ তথা জঙ্গিপুরের সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে ভোট না করার অভিযোগ এনেছেন সামশেরগঞ্জের বিধায়ক আমিরুল ইসলাম। তাঁর অভিযোগ খলিলুর রহমান তাঁর ভাই কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে ভোট করছে। আর এরপরই বিতর্ক তৈরি হয় দুই দলের মধ্যে।
বিগত দু’দিন আগে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নিয়ে উত্তপ্ত ছিল কেশপুর। ঘটনায় আহত ২ জন। তাদের প্রত্যেককে ভর্তি করা হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
অভিযোগ, চা দোকানে বসে আড্ডায় মেতেছিল তৃণমূলের একগোষ্ঠীর লোকজন। সেই সময় হঠাৎ তাদের উপর হামলা চালায় অপর আর এক গোষ্ঠী। ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে তাদের পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি, বর্তমানে এলাকার তৃণমূল ব্লক সভাপতির নেতৃত্বেই এই ঘটনা ঘটেছে। তারা পুরোনো কর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। যারা আহত হয়েছেন তারা অধিকাংশই এলাকার পুরোনো কর্মী হিসেবে পরিচিত।আহতদের উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।
আরও পড়ুন: Jalpaiguri: পুলিশের বাধা, ত্রিপুরায় ঢুকতেই পারল না জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সহ অন্যান্যরা