কুঁড়ে ঘরেই থাকবেন, নন্দীগ্রামে নিজমুখে ঘোষণা মমতার

কুঁড়ে ঘর বানিয়ে থাকা থেকে নিজের হাতে চা তৈরি করে খাওয়ানো, নন্দীগ্রামে ক্রমশ ঘরের মেয়ে হয়ে উঠছেন মমতা (Mamata Banerjee)

কুঁড়ে ঘরেই থাকবেন, নন্দীগ্রামে নিজমুখে ঘোষণা মমতার
ছবি: ফেসবুক
Follow Us:
| Updated on: Mar 09, 2021 | 8:15 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: কলকাতার ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরের নন্দীগ্রাম কেন্দ্রকে এবার বেছে নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বিপরীতে তাঁরই একসময়ের সেনাপতি এবং অধুনা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাই একুশের নির্বাচনে বাংলার অন্যতম ফোকাস নন্দীগ্রাম (Nandigram) বিধানসভা কেন্দ্র।

তৃণমূল ত্যাগ করে বিজেপির একাধিক জনসভা থেকে শুভেন্দু বলেছেন, এই লড়াই দুটো রাজনৈতিক দলের নয়। বরং গ্রাম বনাম কলকাতার কতিপয় নেতার লড়াই। কেন রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ সব মন্ত্রী পদে শুধু কলকাতার জনপ্রতিনিধিরাই থাকবেন এই প্রশ্ন তুলে যখন বিভিন্ন সভা গরম করছেন ‘গ্রামের পান্তা খাওয়া ছেলে’ শুভেন্দু, ঠিক তখনই জানুয়ারির শীতে তাঁর ছেড়ে যাওয়া বিধানসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে তৃণমূল নেত্রী ঘোষণা করলেন এবার তিনিই প্রার্থী।  তবে শুধু প্রার্থীই নন, এবার নন্দীগ্রামে বাড়ি বানিয়ে থাকার কথাও ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

বাংলাকে পাখির চোখ করা বিজেপিকে বহিরাগত বলে দাবি করে আসছে তৃণমূল। কিন্তু নন্দীগ্রামে সেই মমতার বিরুদ্ধেই বহিরাগত বলে পোস্টার পড়েছে। যা নিয়ে মঙ্গলবার অভিমানী মমতার মন্তব্য, “কেউ কেউ বলছে আমি নাকি বাইরের লোক। আমি বাংলার লোক বাইরের লোক হয়ে গেলাম ভাই? আমি যদি বহিরাগত হতাম তাহলে এই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হতাম না।” শুধু তাই নয় জনসভা থেকেই তৃণমূল নেত্রীর ঘোষণা, সবাই অনুমতি দিলে তবেই বুধবার হলদিয়ায় মনোনয়ন জমা দিতে যাবেন তিনি। তবে এখানেই শেষ হল না। তিনি যে নন্দীগ্রামের ঘরের মেয়ে তা প্রমাণ করতে মরিয়া হলেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজনৈতিক মহলে অন্তর্গত ও বহিরাগত তত্ত্বের মধ্যেই মমতা শুরু করেছেন নন্দীগ্রামের ঘরের মেয়ে হয়ে ওঠার চেষ্টা। সভা থেকে তিনি ঘোষণা করেছেন ভোট মিটলে প্রতি তিন মাসে অন্তর নন্দীগ্রামে আসবেন। নন্দীগ্রাম করে তুলবেন ‘মডেল নন্দীগ্রাম’ হিসেবে। আপাতত নন্দীগ্রামে থাকার জন্য দুটো বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন। তবে তিনি যে পাকাপাকি ভাবেই থাকতে চান সে কথাও বলেছেন তৃণমূল নেত্রী। জানিয়েছেন, পরে কুঁড়েঘর বানিয়ে নেবেন নন্দীগ্রামে।

আরও পড়ুন: ‘হিন্দু দেবতাকে অপমান করেছেন, বিবেকানন্দকে মালা পরাতে পারবেন না সায়নী’

যে নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে ভিত করে ৩৪ বছরের বাম সরকারকে সরিয়ে জায়গা করে নিয়েছিল তৃণমূল, সেই জায়গাই আরও এক ভোটের আগে শক্তি প্রদর্শনের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে। তবে তফাৎ হল, এবার নেত্রীর সঙ্গে যুদ্ধ তাঁরই এক সময়ের সেনাপতির। তাই কলকাতার ভবানীপুরের নয়, নন্দীগ্রামের মেয়ে হয়ে উঠতে প্রয়াস তৃণমূল নেত্রীর। এদিনের সভা শেষে যেমন মন্দির ও মসজিদ দর্শন করলেন তেমনি নিজের হাতে চা বানিয়ে কাপ বাড়িয়ে দিলেন অনেককে। দেখা গেল খুদেদের ভিড়ও। মুখ্যমন্ত্রীকে এই মেজাজে পেয়ে অভিভূত এলাকাবাসী। আর জয়ের ব্যাপারে প্রবল আত্মবিশ্বাসী মমতা ঘোষণা করেছেন, খেলা হবে, দেখা হবে, জেতাও হবে। সব মিলিয়ে একুশের ভোট যুদ্ধে টানটান উত্তেজনা নন্দীগ্রামে।