পূর্ব মেদিনীপুর: টানা গরমের ছুটি চাইছে না পড়ুয়ারা। চায় নিয়ম মেনে ক্লাস হোক, নেওয়া হোক পরীক্ষাও। শুক্রবার এমনই দাবি জানাল হলদিয়া গভর্মেন্ট স্পনসর্ড বিবেকানন্দ বিদ্যাভবন উচ্চমাধ্যমিক হাইস্কুল। স্কুলের পড়ুয়ারা জানান, দু’ বছর লকডাউনের কারণে এমনিই পড়াশোনার প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। সবেমাত্র স্কুলে আসছে পড়ুয়ারা। প্রথম ইউনিটের পরীক্ষার জন্য সবরকম প্রস্তুতিও নিয়েছে তারা। মে মাসের প্রথমে তা হওয়ার কথা। এই অবস্থায় যদি স্কুলে গরমের ছুটি পড়ে যায় তাতে আবারও পঠনপাঠনের সমস্যা হবে। তাই তারা এই স্কুলের বন্ধের তীব্র বিরোধিতা করেছে। যদিও স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক জানান, সরকারি নোটিস মেনেই গরমের ছুটির কথা বলা হয়েছে। ছাত্র ছাত্রীদের বিষয়টি বলাও হয়েছে। সরকারি নির্দেশ সকলের জন্যই এক। সেখানে কোনও একটা স্কুল আলাদা করে কিছু করতে পারে না।
দশম শ্রেণির ছাত্রী নিশা মাইতি। পরের বছর মাধ্যমিক দেবে সে। নিশার বক্তব্য, “সবে আমরা দু’ বছর পর স্কুলে আসা শুরু করেছি। পুরনো জীবনে ফিরছি। এখন গরমের জন্য দেড় মাস ছুটি। এরপর বর্ষা আসবে, যদি প্রবল বৃষ্টি হয়? তার জন্য ছুটি? আমফানের মতো যদি ঝড় হয় তাহলেও স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে? এসব ছোট ছোট কারণে এতদিনের জন্য স্কুল বন্ধ? ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুলে আসছি। পড়ছি, পরীক্ষা দিচ্ছি। এটা বন্ধ করে দিলে তো মুশকিল। পর পর ইউনিট টেস্ট। স্কুল ছুটি থাকলে সেই চাপ কি আমরা নিতে পারব?”
দশম শ্রেণিরই আরেক ছাত্রী তনুকা প্রধানের কথায়, “এতদিন ধরে গরমের ছুটি কাটালে তো সমস্যা। সকলের তো বাড়িতে আর্থিক অবস্থা একরকম নয়। অনেকেরই স্কুলের শিক্ষকদের পড়ানোই ভরসা। তা ছাড়া এরকমও অনেকে আছে, যাদের স্কুলে আসা বন্ধ হলে লেখাপড়াটাই হয়ত আর হবে না। স্কুল যেন চলে, আর পরীক্ষাও যেন নেওয়া হয়। এই অনলাইনে ক্লাসও আমরা চাইছি না। এসব করে কিছুই হয় না।”
এ প্রসঙ্গে স্কুলের শিক্ষক রঞ্জিত মিদ্যা বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা তাদের মনের কথা বলেছে। কিন্তু আমরা তো সরকারের সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারব না। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আমাদের নোটিস পাঠিয়েছে স্কুল বন্ধ রাখার জন্য। সেই কারণে স্কুল বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ছাত্রীদের আবেগকেও আমরা সম্মান জানাই। পরবর্তী সময়ে দেখব সেই আবেগের মর্যাদা যাতে দিতে পারি।”