Purbo Burdwan: ‘আবাসে’র আবেদন করেও ‘রিজেক্টেড’, মাটির দোতলা বাড়িতে মর্মান্তিক ঘটনা
Purbo Burdwan: একজন কোনও রকমে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। তবে তিনজন মহিলা মাটির বাড়ির তলায় চাপা পড়ে যায়। গ্রামের মানুষজন প্রথমে উদ্ধার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন।দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ধ্বংসস্তূপ থেকে মাটি সরিয়ে উদ্ধারকরা হয় তিনজনকে।

পূর্ব বর্ধমান: গরিব পরিবার,পাঁচ বছর আগে আবাস যোজনার বাড়ি পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। নাম তালিকাভুক্ত হয়নি। সপরিবারে বসবাস করছিলেন কাঁচা বাড়িতেই। আচমকাই ভেঙে পড়ে দুর্বল মাটির দোতলা বাড়ি। মৃত্যু হয়েছে এক গৃহবধূর। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম জুলেখা বেগম। বর্ধমানের খণ্ডঘোষের পূর্বচক গ্রামে। গুরুতর জখম হয় আরও দু’জন।
জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের পূর্বচক গ্রামে বাহারুল সেখ ইসলামের মাটির দোতলা বাড়ি। তা মেরামতিও করছিলেন। দোতলা মাটির বাড়ির মেঝে পাকা করার জন্যে খোড়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘরের দোতলা থেকে চার জন মহিলা আসবাবপত্র নামাচ্ছিলেন। সে সময় দেওয়াল থেকে ঝুরঝুর করে মাটি পড়ছে দেখে তাঁরা সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন। আর তখনই সিঁড়ি সমেত মাটির বাড়ির একাংশ চাপা পড়ে যান তিন মহিলা।
একজন কোনও রকমে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। তবে তিনজন মহিলা মাটির বাড়ির তলায় চাপা পড়ে যায়। গ্রামের মানুষজন প্রথমে উদ্ধার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন।দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ধ্বংসস্তূপ থেকে মাটি সরিয়ে উদ্ধারকরা হয় তিনজনকে। বাড়ির সিঁড়ির নীচ থেকে মাটি সরিয়ে গ্রামবাসীরা পর পর তিনজন মহিলাকে উদ্ধার করেন। তাঁদের বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে জুলেখা বেগমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
মৃত জুলেখা বেগমের স্বামী শেখ বাহারুল ইসলাম বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। মাটির বাড়িতে থাকি। সরকারি আবাস যোজনার বাড়ির জন্য পাঁচ বছর আগে আবেদন জানিয়েছিলাম। সার্ভেও হয়েছিল, কিন্তু আমাদের নাম আসেনি। কেন আসেনি বলতে পারবো না। সরকারি পাকা বাড়ি পেলে হয়তো এভাবে একটা প্রাণ চলে যেত না।”
বাহারুলের মা হানুফা বিবি বলেন, “অনেকদিনের পুরনো বাড়ি। দুই ছেলে বাইরে কাজ করে। আমাদের গরিব পরিবার। সরকারি পাকা বাড়ির আবেদন জানিয়েছিলাম। সেটা পেলে বৌমাকে এভাবে চলে যেতে হতো না। এই মুহূর্তে আমরা পাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি সরকার কিছু সাহায্য করলে ভাল হয়।”
পূর্বচক গ্রামের তৃণমূল গ্রাম সভাপতি মুন্সি সাইদুল রহিম বলেন, “আমি নিজে এই পরিবারের নাম আবাস তালিকার জন্য পাঠিয়েছিলাম প্রায় পাঁচ বছর আগে। বাড়ির সার্ভে হয়েছিল। কিন্তু সফটওয়্যার আপলোডিংয়ের সমস্যার জন্য বেশ কিছু পরিবারের নাম বাদ গিয়েছে। যার মধ্যে বাহারুলের বাড়িটিও বাদ পড়েছে।”
ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপার্থিব ইসলাম জানান, কী কারণে আবাস তালিকায় নাম ওঠেনি বলতে পারব না। খোঁজ নিয়ে দেখবো। তবে আমরা পরিবারের পাশে আছি। তবে আবাস নিয়ে তৃণমূলকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “এই দায় তৃণমূল কংগ্রেসকেই নিতে হবে। কেন্দ্র টাকা আবাসের টাকা পাঠাচ্ছে আর তৃণমূল নেতাদের বাড়ি হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস প্রশাসন চালাতে ব্যর্থ।”
