Purulia Airport: পুরুলিয়ার মাটিতে বিপ্লব, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এই এয়ারস্ট্রিপেই এবার উড়বে বিমান

Purulia Airport: পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যাতে ওই হাইটেনশন তার সরিয়ে ফেলা যায়। তাহলে পশ্চিম দিক বরাবর ১৯ আসন বিশিষ্ট ছোট এয়ারক্রাফ্ট নামানো সম্ভব হবে। রানওয়ের দৈর্ঘ্য সামান্য বাড়ানো গেলে ৪২ আসন বিশিষ্ট বিমানও ওঠানামা করতে পারবে। এছাড়াও, টেকনিক্যাল টিম বিকল্প হিসেবে একটি ‘এয়ার ট্রেনিং স্কুল’ তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছে।

Purulia Airport: পুরুলিয়ার মাটিতে বিপ্লব, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এই এয়ারস্ট্রিপেই এবার উড়বে বিমান
এই এয়ারস্ট্রিপে উড়বে বিমানImage Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Nov 15, 2025 | 3:16 PM

পুরুলিয়া: বিমান পরিবহণের ক্ষেত্রে পরিবর্তন ঘটতে চলেছে পুরুলিয়ায়। পুরুলিয়া শহর থেকে মাত্র ৮ কিমি দূরে ছররাতে পরিত্যাক্ত বিমানবন্দরকে নতুন করে চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জরুরি পরিস্থিতিতে বিমান ওঠানামার জন্য পুরুলিয়ার মফস্বল থানা এলাকার ছররায় এয়ারস্ট্রিপ তৈরি করেছিল ব্রিটিশরা। বর্তমানে সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফেলে যাওয়া সেই রানওয়ে অর্থাৎ এয়ারস্ট্রিপকে নতুন করে বিমানবন্দর হিসেবে তৈরি করতে চায় রাজ্য সরকার। সেই মর্মে বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের পরিবহন বিভাগের এয়ারক্রাফট ইঞ্জিনিয়ার, রাইটস ডিপার্টমেন্ট এবং ভূমি দফতরের আধিকারিকরা এই রানওয়ে পরিদর্শন করেন। জমির মানচিত্রও খতিয়ে দেখা হয়। বিমানবন্দরটির দৈর্ঘ্য ১৭২২ মিটার ও প্রস্থ ৩৫০ মিটার।

এদিন জেলাশাসক জানিয়েছেন, টেকনিক্যাল ভিজিবিলিটি খতিয়ে দেখার জন্যই এই দলটি পরিদর্শনে এসেছিল। টেকনিক্যাল টিমের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ হল, বিমান ওঠানামায় বেশ কিছু সমস্যা হতে পারে। এয়ারস্ট্রিপের একদিকে রেললাইন এবং রানওয়ের ওপর হাইটেনশন বৈদ্যুতিক তার থাকার কারণে এয়ারক্রাফ্ট নামতে বা উড়তে পারবে না।

পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যাতে ওই হাইটেনশন তার সরিয়ে ফেলা যায়। তাহলে পশ্চিম দিক বরাবর ১৯ আসন বিশিষ্ট ছোট এয়ারক্রাফ্ট নামানো সম্ভব হবে। রানওয়ের দৈর্ঘ্য সামান্য বাড়ানো গেলে ৪২ আসন বিশিষ্ট বিমানও ওঠানামা করতে পারবে। এছাড়াও, টেকনিক্যাল টিম বিকল্প হিসেবে একটি ‘এয়ার ট্রেনিং স্কুল’ তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছে।

এই এয়ারস্ট্রিপ বিমানবন্দরটি ভৌগলিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত। এটি ঝাড়খণ্ড সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায় ঝাড়খণ্ডের একাধিক বড় শহর পাশে রয়েছে। রয়েছে রঘুনাথপুর ও আসানসোলের মতো শিল্পনগর। আঞ্চলিক অর্থনীতির জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।

রাজ্যের পর্যটনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জেলা হল পুরুলিয়া। অযোধ্যা পাহাড়, মুরগুমা থেকে বড়ন্তী বা দুয়ারসিনি। রয়েছে একাধিক পর্যটনক্ষেত্র। কলকাতা থেকে পুরুলিয়া যেতে যেখানে ৬-৭ ঘন্টা সময় লাগে, সেখানে বিমান চালু হলে ১ ঘন্টার মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যাবে। ফলে সময় অনেকটাই বাঁচবে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টেকনিক্যাল রিপোর্ট দ্রুত রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডিপিআর তৈরির কাজ শুরু হবে।

তবে এই উদ্যোগ এটাই প্রথমবার নয়। ২০০৩-‌০৪ সালে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার প্রথম উদ্যোগ নিলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। কারণ হিসেবে উঠে এসেছিল জমি সংক্রান্ত জটিলতা। এই জমি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিরক্ষা দপ্তরের আওতাধীন ছিল। পরবর্তীতে তৎকালীন বাঘমুন্ডির বিধায়ক নেপাল মাহাতোর উদ্যোগে জমি রাজ্য সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হলেও কাজ থমকে যায়। ২০০৮-০৯ এবং ২০১১-‌১২ সালেও উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। ২০১৭ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিমানবন্দরটি চালু করার কথা ঘোষণা করলেও কাজ আর এগোয়নি। আপাতত এই বিমানবন্দরকে ঘিরে প্রত্যাশা তুঙ্গে।