ঝালদা : ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলরকে কারা খুন করল, তা খুঁজে বের করতে গিয়ে একের পর এক তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। এর আগে কাউন্সিলর তপন কান্দুর ভাইপোকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আর এবার গ্রেফতার করা হল তপন কান্দুর দাদা নরেন কান্দুকে। পুলিশের অনুমান, তপন বাবুর দাদাই দিনের পর দিন ভাইকে খুনের চক্রান্ত চালিয়ে গিয়েছেন। পরিবারের তরফে এই ঘটনায় যোগ থাকার অভিযোগ উঠেছিল ঝালদা থানার আইসি-র বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক কারণে পুলিশ চাপ দিচ্ছিল, এমন দাবিও সামনে আসে পরিবারের তরফে। তবে পরে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় উঠে আসে দাদার নাম।
শনিবার তপন কান্দু খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর দাদা নরেন কান্দুকে। চক্রান্তে যুক্ত থাকার অভিযোগে আরও এক ব্যাক্তি মহম্মদ আশিক খানকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এই গ্রেফতারির খবর পেয়ে কিছুটা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহতের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। তিনি একেবারে প্রথমেই যে অভিযোগ পত্র জেলা পুলিশ সুপারকে দিয়েছিলেন, তাতে নাম ছিল নরেন এবং তাঁর ছেলে দীপকের। যদিও সিবিআই তদন্তের দাবিতে এখনও অনড় পূর্ণিমা দেবী। এ দিন তিনি বলেন, ‘আরও অনেকে জড়িত রয়েছে এই হত্যাকাণ্ডে। তাঁদের ধরার জন্য সিবিআই তদন্ত প্রয়োজন।’ একই দাবি নিহতের আর এক ভাইপো মিঠুন কান্দুরও। তিনি বলেন, ‘পারিবারিক বিবাদ বলা হলেও এতে রাজনীতির যোগ একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’ ধৃত নরেন এবং তাঁর ছেলে দুজনেই তৃণমূলের সক্রিয় নেতা ছিলেন বলে দাবি মিঠুনের। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। রাজ্য পুলিশ এই বিষয়গুলি দেখবে না। তাই প্রয়োজন সিবিআই তদন্তের।’
পুলিশের দাবি, এই খুনের ঘটনাটি সম্পূর্ণ পারিবারিক। বড় ভাই নরেন কান্দু গত তিন চার বছর ধরে ছোট ভাইকে হত্যা করার চেষ্টা করছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ভাইকে খুন করার জন্যই তিনি ভাড়া করা খুনি লাগিয়েছিলেন। পুলিশ ধৃত কলেবর সিংকে জেরা করে নিশ্চিত হয়েছে বিষয়টি। ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন নরেন কান্দুও। সব মিলিয়ে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হল মোট চার জনকে।
শনিবার সকাল থেকেই তপন কান্দু হত্যার ঘটনায় ধৃত কলেবর সিংকে জেরা করা হয়। জেরা করেন জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগান এবং আইজি পশ্চিমাঞ্চল সুনীল চৌধুরী। নরেন কান্দুর সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয় তাঁকে। ঝালদায় বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, ঝালদা শহরের উপকণ্ঠে কুটিডি গ্রামের একটি ফাঁকা বাড়িতে ধৃত কলেবর কয়েকদিন ছিলেন। সেই বাড়ির মালিক আসিফ খানকেও জেরা করা হয়। এরপরই গ্রেফতার হন নরেন কান্দু।
আরও পড়ুন : Bomb blast in Diamond Harbour: বল ভেবে পায়ে ঠেলতেই বিকট শব্দ, মুহূর্তে ঝলসে গেল ৪ বছরের শিশুর হাত-পা