পুরুলিয়া: ফের মাওবাদীদের (Maoist) নামে হুমকি পোস্টার। তৃণমূল করলে হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে পোস্টারে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার ভোরে বরাবাজারের বড়রায় লালকালিতে লেখা পোস্টার দেখতে পাওয়া যায়। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
কী রয়েছে সেই বিতর্কিত পোস্টারে? লেখা হয়েছে, “খেলা হবে, খেলা হবে, এ বার তো আমরা খেলব। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে রাজ্য সভা পর্যন্ত। টিএমসি পতাকা যে ধরবে তার হাত দুটো কেটে বাদ দেওয়া হবে। ” আরেকটি পোস্টারে লেখা হয়েছে, “টিএমসি নেতাদের অবিলম্বে দল ছাড়তে হবে, না হলে জনগণের আদেশে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।” লালকালিতে লেখা এই দুটি পোস্টারে কার্যত মাও-আতঙ্কে কাঁপছে এলাকা। তবে কি ফের সক্রিয় হচ্ছে মাও-চক্র? স্বাধীনতা দিবসেও অযোধ্যা পাহাড়ের উলসুলডুংরিতে পাওয়া কালো কালিতে লেখা রহস্যজনক সেই পোস্টারগুলি দেওয়া হয় আদিবাসী-মূলবাসিন্দাদের পক্ষে। নীচে লেখা মাওবাদী! পুলিশ সমস্ত পোস্টারগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, কিছু প্রাক্তন মাওবাদী চাকরী পাবার জন্য এই ধরনের কাজ করছে। এর আগেও ঝালদা এলাকা থেকে এই রকম পোস্টার উদ্ধার হয়েছিল।
ফের শাসক শিবিরকে নিশানা করে এ হেন পোস্টারে রীতিমতো চাঞ্চল্য়। যদিও, শাসক শিবিরের দাবি, মাওবাদীদের নামে এই পোস্টার দেওয়া হলেও আদৌ তা সত্যি মাওবাদী প্রদত্ত কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। পুরুলিয়া জেলা সভাপতি শামিম দাদখানের কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মাও-আতঙ্ক অনেক কমে গিয়েছে। এই পোস্টারগুলি সত্যি মাওবাদীদের দেওয়া না এর পেছনে অন্য কারোর কোনও অভিসন্ধি রয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তাই কে বা কারা এই পোস্টার দিয়েছে তা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।” অন্যদিকে, জঙ্গলমহলেও মাও-আতঙ্ক ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এলাকায় ফের মাওবাদীরা (Maoist) ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। ফলে সতর্ক পদক্ষেপ করছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, পাহাড় ও জঙ্গলমহল নিয়ে বরাবরই আশাবাদী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। জঙ্গলমহলকে কখনও ‘হাসিখুশি’, কখনও বা ‘উন্নয়নের মডেল’ বলেও দাবি করেছেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা সরকারের আমলে মাও তৎপরতাও অনেকটাই কমেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, পরবর্তীকালে ধাক্কা খেয়েছে উন্নয়নের সুফল। মমতার জনপ্রতিনিধি আদিবাসীদের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছতে পারেননি বলেই মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। প্রাক্তন মাওবাদীদের দাবিদাওয়া প্রসঙ্গে বরাবর সচেতন থাকার চেষ্টা করেছে তৃণমূল সরকার। সম্প্রতি, পুরুলিয়া জেলায় মোট ২০৬ মাওবাদীকে হোমগার্ড পদে চাকরী দেওয়া হয়েছে। অনেকেই নিজেকে মাওবাদী দাবি করে চাকরি চেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন জেলা পুলিশ সুপার। সেক্ষেত্রে, যাঁরা আবেদন করেছেন তাঁদের সকলের সমস্ত নথি যাচাই করেই চাকরি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ অধিকর্তা। আরও পডুন: ভিডিয়ো: ‘পাকিস্তান মুর্দাবাদ’, স্বাধীনতা দিবসে স্লোগান দিলেন শুভেন্দু অধিকারী