Purulia: তিনজনের মৃত্যুর পরও কারও হেলদোল নেই! প্লাস্টিকের তলায় দিন কাটছে বাবা-মেয়ের

Shabar Family: বর্তমানে তাঁদের বাস প্লাস্টিকের তলায়। যে বাড়ি চাপা পড়ে তিন সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল, তার থেকে মাত্র ৪০ ফুট দূরে প্লাস্টিকের তলায় বসবাস করেন তাঁরা। মহাকুমা শাসক থেকে সভাধিপতি সবাই প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন আর প্রশাসনের তরফে কেউ খোঁজ রাখে না বলে অভিযোগ পরিবারের।

Purulia: তিনজনের মৃত্যুর পরও কারও হেলদোল নেই! প্লাস্টিকের তলায় দিন কাটছে বাবা-মেয়ের
ছাদ নেই শরব পরিবারেরImage Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Oct 14, 2025 | 9:29 AM

পুরুলিয়া: এখনও কাজ থেকে ফিরে অসহায় বাবা তার মেয়েকে নিয়ে ফিরে যান সেই জায়গাটায়। যে জায়গাটায় আজ থেকে তিন মাস আগে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল স্ত্রীর। সেখানেই আনমনে ঘুরে বেড়ান বাবা আর মেয়ে। প্রবল বৃষ্টির রাতে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল তিনজনের। কোনও রকমে বেঁচে গিয়েছিলেন বাকি তিনজন। হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও, সেখান থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু এখন যেভাবে বেঁচে আছেন, সেটা চোখে দেখতে পারেন না প্রতিবেশীরা।

এই ঘটনার পর প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা দল বেঁধে গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে। প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল ওই শবর পরিবারকে। কিন্তু দেহ সৎকার করার জন্য কিছু টাকা, কিছু চাল, কয়েকটা কুমড়ো, আর দুটো প্লাস্টিক ছাড়া আর কিছুই জোটেনি। সেই প্লাস্টিকের তলাতেই এখন বসবাস করেন পাঁচজন। পুরুলিয়ার টামনা থানা এলাকায় লোকালয় থেকে বেশ কিছুটা দূরে খেরবন নামে এক নির্জন এলাকায় বাস করে ওই পরিবার।

চলতি বছরের ১৫ জুলাই রাতে পুরুলিয়ায় মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল তিন শবর জনজাতির মানুষের। ১৯৯২ সাল থেকে সেখানে দলু শবর তাঁর পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। নির্জন জায়গায় সেদিন রাতে ঘটনার কথা কেউ জানতেই পারেনি। পরের দিন সকালবেলা স্থানীয় মানুষজন যখন জঙ্গলে যাচ্ছিলেন তখন গোঙানির আওয়াজ শুনে ছুটে যান ও উদ্ধার করেন। দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছিল বিনতি শবর (৪০), রিমঝিম শবর(২৫) এবং অমিত তাঁতি(৩০)-র । আহত হয়েছিলেন পরিবারের কর্তা দলু শবর, তাঁর ছেলে মানিক শবর এবং মানিক শবরের মেয়ে জবা শবর।

বর্তমানে তাঁদের বাস প্লাস্টিকের তলায়। যে বাড়ি চাপা পড়ে তিন সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল, তার থেকে মাত্র ৪০ ফুট দূরে প্লাস্টিকের তলায় বসবাস করেন তাঁরা। মহাকুমা শাসক থেকে সভাধিপতি সবাই প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন আর প্রশাসনের তরফে কেউ খোঁজ রাখে না বলে অভিযোগ পরিবারের।

রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপির বক্তব্য এই রাজ্যে সঠিক উন্নয়ন যে হয়নি, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে এই ঘটনা। কেন ওই পরিবারের কারও কাছে আধার কার্ড নেই, সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিজেপি নেতারা। বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আবাস যোজনা নিয়ে যত কম কথা বলা হয়, ততই ভাল। শহুরে এলাকায় দেখেছি, দরিদ্র মানুষ ত্রিপল টাঙিয়ে থাকে, আর প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকায় দোতলা বাড়ির ছাদে মন্দির তৈরি করা হয়।” জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি শুসেন মাঝি বলেন, “বৃহৎ পরিষরে সাহায্য দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। প্রশাসনকে বলব, তাদের যেন ঘরবাড়ি তৈরি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।”