পুরুলিয়া: বিরোধীরা নয়। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে কাটমানি চওয়ার অভিযোগ আনলেন খোদ তৃণমূল নেতা। কাটমানি না দেওয়ায় সরকারি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেলেও ঠিকাদারের বিলের টাকা মেটাচ্ছেন না তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের সোনাথলি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান। এমনই অভিযোগ তুলে পুরুলিয়ার জেলাশাসককে ইমেল মারফত অভিযোগ জানালেন তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য অনিরুদ্ধ মুখোপাধ্যায়। আর এই ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
সোনাথলি গ্রাম পঞ্চায়েতের লরি সংসদ এলাকায় তিন লক্ষ ৪৪ হাজার ৪৫ টাকা ব্যয় করে একটা সৌরশক্তি চালিত ডিপ টিউবওয়েল বসানোর বরাত পান সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়। সম্পর্কে তিনি অনিরুদ্ধ মুখোপাধ্যায়ের ভাই। তাঁর হয়ে পেটি ঠিকাদার হিসেবে কাজটি করেন সুভাষ প্রামাণিক।
কাজ শেষের পর কাটমানি চাওয়া হয় বলে অভিযোগ তুলে সুভাষবাবু বলেন, “জানুয়ারির শেষেই আমার ওই কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এরপর পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধানকে বিল পাশ করতে অনুরোধ করলে তাঁরা আমার থেকে ১২ শতাংশ কাটমানির টাকা দাবি করেন। কিন্তু সেই টাকা না দেওয়ায় আজও আমার বিলের অনুমোদন দেয়নি পঞ্চায়েত।”
পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধানকে আক্রমণ করে অনিরুদ্ধ মুখোপাধ্যায় বলেন, “এরা নব্য তৃণমূল। এগারো সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর আমাদের দলে এসেছে। দিদির কথাই এরা মানে না। কাটমানির কথা দলকে জানিয়েছি। জেলা সভাপতির কথামতোই অভিযোগ জানিয়েছি।”
যদিও এ বিষয়ে সোনাথলি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে তাঁদের বিরুদ্ধে। ওই প্রকল্পে ৩৩০ ফুট মাটি খননের কথা থাকলেও ওই ঠিকাদার সংস্থা ১৬০ ফুট মাটি খনন করেছে। তাই বিল আটকানো হয়েছে বলে তাঁর দাবি। তাঁর কথায়, “কাজ কমপ্লিট করুক। আমরা পঞ্চায়েত থেকে বিলের টাকা মিটিয়ে দেব।”
কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ নিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রাঙা বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই বলে এসেছি এটা কাটমানির দল। আজ তাদের দলের নেতাকর্মীরাই এটা বলছে। তবে এটা স্বচ্ছতার জন্য নয়। আসলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে একশ্রেণির নেতারা কাটমানি নিচ্ছেন, অন্য নেতারা না পাওয়ায় এই অভিযোগ করছেন।”
এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “কী কারণে এই সমস্যা হয়েছে, তা দেখা হচ্ছে। দু’পক্ষকে ডেকে বিষয়টার সমাধান করা হবে।”