আপনারা কাজ করেন না কেন? মঞ্চেই ধমক সাধনের
‘তোমাকে মঞ্চ থেকে ঠেলে ফেলে দেব!’ কার উপর এমন ক্ষুব্ধ হলেন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে?
হাবড়া: ছিল স্বনির্ভর গোষ্ঠীর একটি ক্যান্টিন উদ্বোধন। সেই অনুষ্ঠানের মঞ্চে সরকারি আধিকারিকদের দাঁড় করিয়ে ভর্ৎসনা করলেন ক্রেতাসুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। ভরা হল ঘরের মধ্যে আধিকারিককে তার প্রশ্ন, কেন কাজ করেন না? বাদ গেলেন না বিডিও-ও। তাঁকেও মন্ত্রী শোনালেন, ‘আপনি তাহলে চেয়ারে বসে কী করেন?’
মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ক্যাম্পেসে স্বনির্ভর গোষ্ঠী পরিচালিত একটি ক্যান্টিনের উদ্বোধন হয়। ওই ক্যান্টিনের নাম রাখা হয়েছে মা। এদিন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে ক্যান্টিন উদ্বোধন করেন। সেই স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি প্রকল্পের আধিকারিক অমিত শেঠ ও বিডিও জয়ন্ত দে। এছাড়াও ছিলেন সুপারভাইজার এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা।
আরও পড়ুন: ‘নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতেই বিজেপিতে’, রাজীব-শুভেন্দুকে এক সুরে বিঁধলেন মমতা
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে উঠে সাধনবাবু মঞ্চে ঢেকে নেন সুপারভাইজারদের। তারপর প্রকল্প ধরে ধরে পরিসংখ্যান জানতে চান তিনি। কিন্তু উত্তর পাননি। এরপর দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক অমিত শেঠকে ডাকেন তিনি। অমিতবাবুও সঠিক পরিসংখ্যান দিতে পারেননি। ইত্যবসরে দর্শকাসন থেকে মহিলারা চিৎকার করে মন্ত্রীর কাছে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের সম্পর্কে অভিযোগ জানাতে থাকেন। তখন মন্ত্রীর অমিত শেঠকে সটান প্রশ্ন, ‘আপনারা কাজ করেন না কেন? আপনাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? ঘরে বসে থাকলে চলবে না। কাজ করতে হবে।’ আরপর বিডিও জয়ন্ত দে-র দিকে তর্জনী দেখিয়ে করে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনি চেয়ারে বসে কী করেন? আমি কোনও কথা শুনব না। আমি চাই, যত দ্রুত সম্ভব সমস্ত প্রকল্পের কাজ শুরু করতে হবে।’
রাগের চোটে নিজের আপ্ত সহায়ককেও তিনি বকুনি দেন। বলেন, ‘তুমি আমাকে এসব জানাও না কেন? তোমাকে মঞ্চ থেকে ঠেলে ফেলে দেব।’ স্বভাবতই তিনি অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এরপর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অজিত সাহার উদ্দেশে মন্ত্রীর নির্দেশ, ‘আপনাকেও সচেতন হতে হবে। সমস্ত কাজ বুঝে নিতে হবে, করিয়ে নিতে হবে।’ মন্ত্রীর এই ধমক-চমকে অবশ্য দেদার খুশি হন দর্শকাসনে বসা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। হাততালির ফোয়ারা চলে। সব মিলিয়ে সরকারি আধিকারিকদের ধমক দিয়ে মন জয় করলেন বিভিন্ন গোষ্ঠীর মহিলাদের। পরে অবশ্য সাংবাদিকদের সাধনবাবু বলেন, ‘আমি ধমক দিইনি। কাজটা কীভাবে করতে হবে তা আধিকারিক ও সুপারভাইজারদের বুঝিয়েছি মাত্র।’