কলকাতা: সিঙ্গুর মামলায় বেচারাম মান্না-সহ ৩১ জনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ আদালতের। বুধবার এই নির্দেশ দেয় বিধাননগরের এমপিএমএলএ আদালত। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের ঘটনায় পুলিশের তরফ থেকে একটি মামলা করা হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল মন্ত্রী বেচারাম মান্না এবং চাষিরা ইচ্ছেকৃতভাবে গণ্ডগোল করেছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে চলছিল এই মামলা। আজ বিধান নগর এমপি এমএলএ আদালতে মামলার শুনানি ছিল। সেই কারণে বেচারাম মান্না এবং আন্দোলনকারী চাষিরাও উপস্থিত হয়েছিলেন, বিচারপতির নির্দেশে মন্ত্রী-সহ ৩১ জনকে বেকসুর খালাস করা হল।
এর আগে সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের সময় বাম সরকারের করা দু’টি ফৌজদারি মামলা থেকে ছাড় পেলেন হরিপালের তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্না। বাম আমলে সিঙ্গুরে কৃষিজমি রক্ষার আন্দোলনে যুক্ত চাষি এবং তৎকালীন বিরোধী তৃণমূল নেতা বেচারাম মান্না, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, স্নেহাশিস চক্রবর্তী-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, সরকারি কাজে বাধা দান-সহ বহু মামলা হয়েছিল।
রাজ্যে ক্ষমতায় এসেই প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠকে বর্তমান শাসক দল সেই সব মামলা তোলার আশ্বাস দিয়েছিল। শেষ কয়েক বছরে বেশ কিছু মামলা প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু তা সম্ভব হয় নি। প্রত্যাহার না-হওয়া সেই সব মামলার শুনানি চলছিল। সেরকমই একটি মামলার শুনানি ছিল বিধাননগরের এমপিএমএলএ আদালতে।
বেচারাম মান্নার আইনজীবী বলেন, “সিঙ্গুর মামলায় বেচারাম মান্না-সহ মোট ৩১ জনকে বেকসুর খালাস করে আদালত। ২০০৭ সালে অগাস্ট মাসে সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়ে বেচারাম মান্না-সহ এই চাষিদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছিল। এটাও একটা অন্যতম মামলা ছিল। ৩৪ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়। কয়েকজনের মৃত্য়ু হয়। ৩১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়। সব সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণের পর বেচারাম মান্না-সহ ৩১ জনকে সব মামলা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। অভিযোগ ছিল, সিঙ্গুরে তাঁরা একজোট হয়ে গিয়েছিলেন। পুলিশ মামলা করেছিল। কিন্তু সেই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ”
বেচারাম মান্না বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে মোট ৬৮ টি মামলা ছিল। সবই থেকেই মুক্তি মিলেছে। আজকের আমার একটা শেষ মামলা। সিঙ্গুরে আন্দোলনের সময়ে আমাদের একটা বড় অংশকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল, তারা সবাই আজ এসেছিলাম। আমরা যে নির্দোষ, তা প্রমাণিত হল। জমি অধিগ্রহণ ন্যায়সঙ্গত হয়নি, প্রমাণীত হল। কেবল মাত্র একটি মামলাই আর রয়ে গিয়েছে। তাতে যাঁরা অভিযুক্ত রয়ে গিয়েছেন, আশা করব তাঁরাও দ্রুত বিচার পাবেন।”