বরযাত্রী যাওয়ার আগে পথেই শেষ! ফলতায় সলিল সমাধি ৩ নাবালক-সহ ৫

Accident: স্থানীয় সূত্রে জানা যায় ২টি শিশু ও বেশ কয়েকজন অটো যাত্রী আহত। তাঁদের ডায়মন্ডহারবার হাসপাতালে পাঠানো হলে ৫ জনের মৃত্যু হয়।

বরযাত্রী যাওয়ার আগে পথেই শেষ! ফলতায় সলিল সমাধি ৩ নাবালক-সহ ৫
সেই অটো, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 14, 2021 | 12:00 AM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা (accident)। ফলতা থানার অন্তর্গত ফতেপুর শিবানিপুর পেট্রলপাম্পের সামনে একটি বরযাত্রীর গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে যাত্রীবাহী বাস। জানা গিয়েছে, ডিজেল অটো করে বরযাত্রীর দলের ১২ থেকে ১৪ জন যাচ্ছিলেন।  উল্টোদিক থেকে একটি রায়চকগামী বেসরকারি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুখোমুখি এসে ধাক্কা মারে। ডিজেল অটোটির একাংশ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন সমস্ত যাত্রী।  স্থানীয় সূত্রে জানা যায় ২টি শিশু ও বেশ কয়েকজন অটো যাত্রী আহত। তাঁদের ডায়মন্ডহারবার হাসপাতালে পাঠানো হলে ৫ জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় ৬জন ডায়মন্ডহারবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জখমদের মধ্যে ৩ শিশু রয়েছে। মৃতরা হলেন, প্রিয়ব্রত শিকদার (১০), আকাশ মন্ডল (১২), রোহান মন্ডল (১৪), সুখেন্দু কয়াল (৬২), কৃষ্ণ মন্ডল (৫০)। সকলেই ফলতার মনিষারহাটের বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর দুমড়ে মুচড়ে অটোটি জাতীয় সড়কের পাশে দীর্ঘক্ষণ পড়েছিল। জায়গাটি জনশূন্য থাকায় জখমদের উদ্ধার করতে বেশ কিছুটা দেরি হয়ে যায়। যদিও পরে পথচলতি মানুষের নজরে এলে তড়িঘড়ি আহতদের উদ্ধার করে ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই পাঁচজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। খবর পেয়ে ফলতা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত অটোটিকে উদ্ধার করে। তবে দুর্ঘটনার পর গতি বাড়িয়ে রায়চক রুটের বেসরকারি যাত্রীবাহী বাসটি পালিয়ে যায়। পুলিশ একটি  ঘাতক বাস ও চালকের খোঁজ শুরু করেছে। মৃতদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, অটোর হেডলাইটের আলো কম থাকায়, উল্টোদিক থেকে আসা বাসটি বুঝতে পারেনি যে সামনে কোনও গাড়ি রয়েছে। যার জেরেই এই দুর্ঘটনা বলে অনুমান তদন্তকারীদের।

ডায়মণ্ডহারবার থানার পুলিশ জানিয়েছে, এদিন রাতে বঙ্গনগরে একটি বিয়ে বাড়িতে যোগ দিতে ফলতার মনীষার হাট এলাকা থেকে একটি ডিজেল চালিত বড় অটো ভাড়া করে রওনা দিয়েছিলেন প্রায় ১৫জন বরযাত্রী। অন্য আরেকটি মারুতি গাড়িতে ছিলেন বাকিরা। সকলে মিলে ফলতার মনীষাহাটবাসী সৌমিত্র মণ্ডলের বিয়েতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁরা বরযাত্রীর একটি ডিজেল অটো ও একটি মারুতি ভ্যান ভাড়া করেন। ডিজেল অটোতে ছিলেন জনা পনেরো। বাকিরা ছিলেন মারুতি ভ্যানে। অটোর পেছনেই ছিল মারুতি। আচমকা, মারুতির যাত্রীরা দেখেন, বড় রাস্তায় উল্টে কাত হয়ে পড়ে যায় অটোটি। পাশ থেকে দ্রুত গতিতে বেরিয়ে যায় একটি বাস। রাস্তাতেই বেশ কিছুক্ষণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিলেন অটোযাত্রীরা। তারপর, পথচলতি মানুষ ও স্থানীয়রা এসে আহতদের উদ্ধার করেন।

এক প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকারীর কথায়, “আচমকাই দেখেছি গাড়িটা উল্টে যেতে। অটো তো, টাল সামলাতে পারেনি। পরে গিয়েছে। প্রায় চার-পাঁচজন মারা গিয়েছে। আমার কোলেই তো একটা বাচ্চা মারা গেল। বাকি দুজনকে এখনও দেখতে পাচ্ছি না। বেঁচে রয়েছে কি না জানি না।” স্থানীয়দের দাবি, সন্ধের পর থেকে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচলের গতি বেড়ে যায়। ফলে জাতীয় সড়কে যান চলাচলের গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্পিড ব্রেকার না বসালে দুর্ঘটনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর। আরও পড়ুন: ফিরহাদের ছবি দিয়ে ‘তোলাবাজি’! জাতীয় সড়কে ‘বালি মাফিয়াদের’ ভুয়ো পুলিশ ক্যাম্প