দক্ষিণ ২৪ পরগনা: নোদাখালি বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্ত করুক জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। এ বার, এমনটাই দাবি বিজেপির। বৃহস্পতিবার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা থেকে শুভেন্দু অধিকারী, সকলেই নোদাখালি বিস্ফোরণে এনআইএ তদন্তের দাবি করেন। পদ্ম শিবিরের তরফে অভিযোগ করা হয়, রাজনৈতিক ঝামেলা করার জন্যই বারুদ মজুত রাখা হয়েছিল। সেখান থেকেই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
এদিন, অধিকারী পুত্র অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বারুদের স্তূপে বসে রয়েছে বাংলা বলে তোপ দাগেন তিনি। এখানেই না থেমে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়কের আরও সংযোজন, “তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বে অপরাধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। উপরতলার নির্দেশে পুলিশও সরে দাঁড়িয়েছে।পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। বারুদের স্তূপে বসে আছে। এনআইএকে দিয়ে অবিলম্বে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক।” নোদাখালি বিস্ফোরণ নিয়ে একটই টুইটও করেন অধিকারী পুত্র।
টুইটে শুভেন্দু লেখেন, “দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজের এই ভয়ঙ্কর ছবি;…যেখানে একটি বেআইনি বাজি কারখানার বিস্ফোরণ ঘটে। মানুষ মারা গিয়েছে। বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। গোটা এলাকা সন্ত্রাসের কবলে। এই জেলাটি ধীরে ধীরে জেএমবি জঙ্গী ও জিহাদিদের আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে।”
Gory horrific images emanating from Budge Budge; South 24 Pargana; where an illegal explosive factory got destroyed due to explosion. People died, house destroyed, area terrorised.
This district has become the hub of JMB & jehadis from Bangladesh.— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) December 1, 2021
কেবল রাজ্যের বিরোধী দলনেতাই নন, নোদাখালি বিস্ফোরণ নিয়ে মুখ খুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, এই বিস্ফোরণ পূর্বপরিকল্পিত। এই ঘটনার এনআইএ তদন্ত হওয়া জরুরি। ডায়মন্ডহারবার বিজেপি সহ-সভাপতি সুফল ঘাটুর অভিযোগ, সামনেই পূজালি বজ বজ মহেশতলা পৌরসভা ভোট এবং সেই ভোটে ঝামেলা করবার জন্য এই বারুদ মজুদ করা হয়েছিল। যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল নেতা বুচান বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার সকালেই বিস্ফোরণের এলাকাটি পরিদর্শনে আসে ফরেনসিক দল। ঘটনাস্থল থেকে তাঁরা বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন। আক্রান্ত দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কথা বলেন। পাশাপাশি, ঘটনাস্থলটি খতিয়ে দেখেন তাঁরা। এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী।
বুধবার সাতসকালেই ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম ভাঙে নোদাখালি এলাকার বাসিন্দাদের। ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে আশেপাশের বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে গিয়েছে। অবৈধ বাজি কারখানায় জমে থাকা বাজি তৈরির মশলা থেকেই এই বিস্ফোরণ বলে জানা গিয়েছে। বুধবার সকালে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নোদাখালি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক। ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় তৃণমূল নেতা বুচান বন্দ্যোপাধ্যায়।
বজবজ ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত নোদাখালি থানার নস্কর পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোহনপুর, আর্য পাড়ার ঘটনা। বুধবার সকাল ৮ টা ১৫ মিনিট নাগাদ ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, একটি বাড়িতে অবৈধ ভাবে চলছিল বাজি কারখানা। আর সেখানেই ঘটেছে এই বিস্ফোরণের ঘটনা। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে বাড়ির মালিক অসীম মিদ্য়ের। তাঁর মামী কাকলি মিদ্যে এবং কারখানার একজন শ্রমিকেরও মৃত্যু হয়েছে।
সকালে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন নোদাখালি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক, উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারাও। এ ভাবে লোকালয়ে বাজি তৈরির মশলা কী ভাবে বাড়ির মালিক মজুত করেছিল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এলাকার মানুষ বারবার এই নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, লোকালয়ে এ ভাবে বাজির কারখানা নিয়ে তাঁদের আপত্তি ছিল অনেক দিনের। একই ঘটনায় বিরক্ত হয়ে আজ ওই বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি কোনও ভাবেই এই অবৈধ কারবার এই এলাকায় আর চলতে দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন: Weather Update: ‘দক্ষিণী’ বর্ষার দাপটে ফিকে উত্তুরে হাওয়া, এ বারও জোরাল শীতে লাগাম