Kultali: নির্মম হত্যা করেও এত নির্বিকার! ফাঁসির সাজা দিতে গিয়ে আকাশ থেকে পড়লেন বিচারক
Kultali: মুস্তাকিনের নির্বিকার মনোভাবে বিস্ময় প্রকাশ করে বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "মেয়েটির শরীরে বহু আঘাতের চিহ্ন ছিল। নির্মম যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে। তারপর খুন করা হয়েছে।"
কলকাতা: নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের মামলা। ৬১ দিনের মাথায় দোষীসাব্যস্ত যুবককে ফাঁসির সাজা দিল আদালত। আর সেই সাজা ঘোষণা করতে গিয়ে দোষীসাব্যস্ত মুস্তাকিন সর্দারের ‘বেপরোয়া’ মনোভাব দেখে বিস্মিত বারুইপুর পকসো আদালতের বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বললেন, অভিযুক্তের মধ্যে কোনও অনুতাপ কিংবা অনুশোচনা দেখা যায়নি।
গত ৫ অক্টোবর জয়নগরের কুলতলিতে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই মামলায় এদিন সাজা ঘোষণা করতে গিয়ে বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “একটি শিশু হচ্ছে ফুলের মত। সে যখন জন্মায়, শুধু একটা পরিবার নয়, সমাজকেও আলোকিত করে। এবং তার এভাবে চলে যাওয়াটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।”
৬১ দিনের মাথায় মামলার সাজা ঘোষণা করতে গিয়ে বিচারক বলেন, “আপনারা জানেন যে এই মামলায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিচার শেষ হয়েছে। ৩৬ জন সাক্ষী ছিলেন।” এরপরই মার্টিন লুথার কিংয়ের একটি বক্তব্য উল্লেখ করে বিচারক বলেন, “ইনজাস্টিস এনিহোয়ার ইজ এ থ্রেট টু জাস্টিট এভরিহোয়ার। এরপর আরও একটি কোট মনে পড়ছে, ইফ ইউ আর নিউট্রাল ইন সিচুয়েশন অব ইনজাস্টিস, ইউ হেভ চুজেন দ্য সাইড অব অপপ্রেসর।”
এই খবরটিও পড়ুন
ঘটনাটিকে একেবারে বিরল উল্লেখ না করেও বিচারক বলেন, “এই ঘটনাকে একেবারে বিরলও বলা যাবে না। আবার বিরল নয়, সেটাও বলা যাবে না। এধরনের ঘটনা সমাজে ঘটেই চলেছে। কখনও নির্ভয়া, কখনো তিলোত্তমা, কখনও দামিনী। কোথায় গিয়ে থামবে জানি না। কিন্তু এই ধরনের মৃত্যু মিছিল থামানোর দায় আমাদের সবার আছে। প্রশাসন ও আইন বিভাগেরও আছে। মানুষ পুলিশ প্রশাসনের উপর আইনশৃঙ্খলা এবং তদন্তের জন্য ভরসা রাখে। আর বিচার পাওয়ার জন্য আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে।”
এরপরই মুস্তাকিনের নির্বিকার মনোভাবে বিস্ময় প্রকাশ করে বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মেয়েটির শরীরে বহু আঘাতের চিহ্ন ছিল। নির্মম যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে। তারপর খুন করা হয়েছে। এরপরও অভিযুক্তের মধ্যে কোনও অনুতাপ কিংবা অনুশোচনা দেখা যায়নি। ঘটনার পর বাড়িতে গিয়ে নির্বিকারভাবে ঘুমিয়ে পড়ে। এমনকি বিচার চলাকালীন তার মধ্যে কোনও অনুতাপ দেখা যায়নি। খুবই আশঙ্কার বিষয়। সমাজে যাঁরা আইন মেনে চলেন, এই ধরনের মানুষের সঙ্গে তাঁদের থাকতে হচ্ছে।”