সুন্দরবন: করোনার কারণে দীর্ঘ কয়েকবছর বন্ধ ছিল স্কুল। মাঝখানে একবার খুললেও তারপর আবার বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সমস্ত কিছু খুলে গেলেও খোলেনি শিক্ষাআয়তন। এরপর অনেক আন্দোলন দেখে বাংলা। পরে সংক্রমণ সামান্য নিয়ন্ত্রণে আসতেই খুলেছে স্কুল। আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার থেকে মাধ্যমিক। সেই কারণে পড়ুয়াদের প্রস্তুতি তুঙ্গে। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুসকানের গল্পটা আলাদা। অভাবের জেরে স্বপ্নের কাছাকাছি পৌঁছেও পূরণ হল না লক্ষ্য।
মথুরাপুরের কাঁকপুকুরের বাসিন্দা মুসকান খাতুন। মথুরাপুর কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর পড়ুয়া মুসকান। আগামীকাল মাধ্যমিক পরীক্ষা। কিন্তু মুসকানের বাড়ি সুন্দরবনের রায়দিঘি বিধানসভার প্রত্যন্ত গ্রামে। কোভিড পরিস্থিতিতে টানা লকডাউনের জেরে স্কুলের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ ছিল না তাঁর। পরে জানতে পারলেও ততদিনে হয়ে গিয়েছে দশম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা ও মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য অ্যাডমিট কার্ডের ফর্ম ফিলাপ। তাই পড়াশোনার জন্য প্রতিদিন লড়াই করেও শেষ মুহূর্তে প্রযুক্তির কাছে হার স্বীকার করল সুন্দরবনের এই ছাত্রী।
কোভিড পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সময় ধরে স্কুলের পঠনপাঠন চলছিল অনলাইনে। সে সময় মুসকানের প্রয়োজন ছিল একটি স্মার্টফোন বা ইন্টারনেট পরিষেবা যুক্ত কম্পিউটার। অভাবের সংসারে দুবেলা অন্নসংস্থান করতেই যেখানে হিমশিম খেতে হতো মুসকানের দিনমজুর বাবা মোবারক খানকে। সেখানে তাদের কাছে স্মার্টফোন তো স্বপ্ন। ফলে স্মার্টফোন না থাকায় এক দরিদ্র ঘরের মেয়ের স্বপ্ন কীভাবে ভেঙে চুরমার হয়ে যায়, মুসকান তার জল্ন্ত উদাহরণ।
শিক্ষকদের একাংশের দাবি, শুধুমাত্র মুসকান নয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের কয়েকশো ছাত্রছাত্রী একই পরিস্থিতির শিকার হয়ে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে পারবে না। এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ড্রপ আউট আটকাতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দ্রুত পদক্ষেপ করা উচিত।
আরও পড়ুন: Russia-Ukraine Conflict: যুদ্ধের দেশে ছেলে, ঘুম উড়েছে মালদহের মাস্টারমশাইয়ের
আরও পড়ুন: PM Modi meeting: আটকে থাকা পড়ুয়াদের জন্য উদ্বেগ, জরুরি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী