
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: রাজ্যে এসআইআর-কে কেন্দ্র করে বহু জলঘোলা হয়েছে। তার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা। সেখান থেকে উঠেছে অভিযোগের পাহাড়। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে জাহাঙ্গির খান। অভিযোগ উঠছে, বিএলও-দের চাপ দিয়ে ভোটার তালিকায় মৃতদের নাম তোলা হচ্ছে। তাতে উঠে এসেছে এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা জাহাঙ্গির খানের নাম। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে একাধিক বার সরব হতে দেখা গিয়েছে ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়া অভিজিৎ দাস ওরফে ববিকে। তিনি নিজের সামাজিক মাধ্যমে বারবার জাহাঙ্গির খানের নাম উল্লেখ করে পোস্ট করেছেন। অতি সম্প্রতি তিনি পোস্ট করে অভিযোগ করেছেন, ফলতার বিডিও-কে চাপ দিয়ে জাহাঙ্গির মৃত ভোটারদের নাম তালিকায় তোলাচ্ছেন। এরপর সাংবাদিক বৈঠক করে রীতিমতো মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। তাঁকে এলাকায় এসে সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। এরপরই ফলতায় কমিশনের বিশেষ টিম।
বারবারই জাহাঙ্গির খানের নাম উঠে আসছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কে এই জাহাঙ্গির খান? এলাকায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরেই জাহাঙ্গির তৃণমূল দলটা করে আসছেন। কিন্তু ২০২০ সাল থেকে তাঁর এলাকায় দাপট। সে বছর থেকে জাহাঙ্গিরই এলাকায় শেষ কথা হয়ে ওঠেন। তরুণ নেতা, তবে তাঁর কথায় এলাকার বর্ষীয়ান নেতারাও গণ্য করেন বলে জানা যাচ্ছে। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পর ভোট পরবর্তী হিংসায় নাম জড়ায় তাঁদের। ২০২১ সালের পর খুন, ধর্ষণ, লুঠ-সহ একাধিক অভিযোগ ওঠে। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, অধিকাংশ অভিযোগে এফআইআর-ও হয়নি।
২০২৪ সালে বিজেপি তাঁর বিরুদ্ধে হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগ তোলে। এবার ২০২৫ সালে এসআইআর চলাকালীন ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। অভিযোগ, জাহাঙ্গির প্রভাব এতটাই যে তিনি বিডিও-কেও প্রভাবিত করতে পারে।
কমিশনের কাজ দেখতে রাজ্যে এসআইআর-এর স্পেশ্যাল ১৩! অভিষেকের ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের ফলতায় বিশেষ পর্যবেক্ষক সুব্রত গুপ্ত। শনিবারই তাঁরা বৈঠক করেছেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে। রবিবার দুপুর ১২ টা নাগাদ তিনি ফলতায় বিডিও অফিসে গিয়ে পৌঁছেছেন। প্রথম পর্যায়ের বৈঠক ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে।
এদিকে, এবার রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আরও একটি আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেছেন। তাতেও নাম জড়িয়েছে জাহাঙ্গিরের। কমিশনের যে বিশেষ টিম ফলতায় পৌঁছেছে, তাঁদের ওপর হামলার আশঙ্কা করছেন শুভেন্দু। জাহাঙ্গির ৩০০ মহিলা জড়ো করেছেন বলে দাবি শুভেন্দুর। সেক্ষেত্রে মাথা পিছু মহিলাদের ৫০০ টাকা দিয়ে হামলার ছক কষেছেন। শুভেন্দুর দাবি, জিপি অফিসের উপরেই ব্যাঙ্কয়েট হলে জড়ো হয়েছেন। শুভেন্দুর আরও ভয়ঙ্কর অভিযোগ, প্রত্যেক মহিলাকে জাহাঙ্গির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এমনকি তাতে হাত রয়েছে ফলতার বিডিও-রও। যদিও এই বিষয়ে জাহাঙ্গিরের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি।