দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ফের রাজ্যে অস্ত্র কারখানার (Arms Factory) হদিশ। এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলায়। জীবনতলা থানা এলাকার তাম্বুল দাহ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিবিরাবাদে কারখানার হদিশ মিলল।
দৃশ্যত গ্রিল কারখানা। কিন্তু তারই আড়ালে কুঠুরিতে তৈরি হত অস্ত্র। প্রতিবেশীরা তা টেরও পাননি। কিন্তু গোপন সূত্রে খবর পায় পুলিশ। বেশ কিছু দিন নজর রাখা হয় ওই কারখানার ওপর। এরপর শুক্রবার রাতে অভিযান চালানো হয় ওই কারখানায়। ঘটনায় কারখানার মালিক রাজকুমার হালদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বারুইপুর পুলিশ জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও জীবনতলা থানার যৌথ অভিযানে কারখানা থেকে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছে। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর অস্ত্র বানানোর সামগ্রীও।
গ্রিল কারখানার আড়ালে এতদিন ধরে যে অস্ত্র তৈরি হত, তা ঘুনাক্ষরেও টের পাননি প্রতিবেশীরা। এদিন পুলিশি অভিযানের পর স্তম্ভিত তাঁরা। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ বিশেষ কিছু বলতে চায়নি। তবে এখান থেকে কারা অস্ত্র কিনতে আসত, কোন চক্র এর পিছনে কার কাজ করছে, সেই সব দিকই খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
রাজ্যে একের পর এক অস্ত্র কারখানার হদিশ পাচ্ছে পুলিশ। বিশেষত আসানসোলেই ডিসেরগড়ের পর হীরাপুরে বেআইনি অস্ত্র কারখানার হদিশ পাওয়া যায় হীরাপুর থানার রহমতনগর নয়াবস্তি এলাকায় অস্ত্র কারখানার খোঁজ পায় পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় একটি বাড়ির মধ্যেই পাতাল ঘরে তৈরি করে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করা হত। এদিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হীরাপুর থানার পুলিশ পৌঁছে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির সরঞ্জামগুলি উদ্ধার করে।
একটা বাড়ির নীচে যে পাতাল ঘর রয়েছে, সেটা জেনেই হতবাক প্রতিবেশীরা। ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি তোলেন তাঁরা। উল্লেখ্য, দে়ড়মাস আগেই কুলটি থানার বরাকরের বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকায় নাকা চেকিংয়ের সময় ২৫ টি ৭ এমএম পিস্তল ও ৪৬ টি ম্যাগাজিন সহ আস মহম্মদকে নামে স্থানীয় এক গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই সূত্র ধরে প্রথমে ডিসেরগড়ে ও এবার হীরাপুরে অস্ত্র কারখানার হদিশ মিলল।
চলতি মাসের শুরুতেই কুলটির (Kulti) দিশেরগড়ে অস্ত্র কারখানার হদিশ পান তদন্তকারীরা। অভিযান চালিয়ে ওই গোপন কারখানা থেকে সাতটি তৈরি ৭.৬২ পিস্তল, ২০টি অসম্পূর্ণ পিস্তল, ১৪টি তৈরি ম্যাগাজিন আর পাঁচটি অসম্পূর্ণ ম্যাগাজিন, ১৩ রাউন্ড গুলি ও অন্যান্য কিছু অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।
রাজ্যে একের পর এক অস্ত্র কারখানার হদিশ মেলায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন। এছাড়াও বহু ব্যক্তিকে সীমান্ত এলাকা থেকে মাঝেমধ্যেই অস্ত্র সমেত গ্রেফতার করা হয়। রাজ্যে যে একটি বড় ধরনের অস্ত্র পাচারচক্র সক্রিয়, তা নিয়ে চিন্তিত প্রশাসনও। কোথা থেকে অস্ত্র আসে, কোথায় অস্ত্র পাচার হচ্ছে, সেই চক্র ধরতে তত্পর পুলিশ।
আরও পড়ুন: হঠাৎ শুভেন্দুর ঘরে হাজির সুজন! স্মৃতিচারণায় উঠে এল শান্তিকুঞ্জ