ইয়াস কেড়েছে ছাদ, তবু ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে বুঁদ মেধাবী সাবিনা, দরকার শুধু সহযোগিতা

Madhyamik Student: মথুরাপুর দক্ষিণের অখ্য়াত এক স্কুল কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুল। এই স্কুলেই ছোট থেকে পড়েছে সাবিনা।

ইয়াস কেড়েছে ছাদ, তবু ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে বুঁদ মেধাবী সাবিনা, দরকার শুধু সহযোগিতা
সাবিনা খাতুন, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 20, 2021 | 10:06 PM

সুন্দরবন: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বাতিল হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhaymik Exam)। বদলেছে মূল্যায়নের রীতিনীতিও। তবুও পিছু হটেনি সাবিনা খাতুন। সম্প্রতি ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে ভেসে গিয়েছে বাড়ি-ঘর। মাথার উপর চালটুকুও নেই বললেই চলে। থাকার মধ্যে ছোট্ট সাবিনার রয়েছে মেধা আর চোখে স্বপ্ন। খড়কুটো বাঁচিয়ে  লেখাপড়া তার। মাধ্যমিকে সাবিনার প্রাপ্ত নম্বর ৬৬৮।

মথুরাপুর দক্ষিণের এক ছিমছাম সাদামাটা স্কুল কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুল। এই স্কুলেই ছোট থেকে পড়েছে সাবিনা। বাবা রহিমুদ্দিন মোল্লা স্থানীয়  মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে অতি সামান্য বেতনের শিক্ষকতা করেন। করোনাকাল সে রোজগারেও ভাটা। ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্রী বলে পরিচিত সাবিনার ইচ্ছে সে ডাক্তার হবে। মাধ্য়মিক পাশের পর বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায় সে। কিন্তু স্বপ্ন দেখলেই কি সত্যি হয়? সাবিনার এই স্বপ্ন পূরণে অক্ষম  তার মা-বাবা। সামান্য শিক্ষকতায় কী বা আর জোটে!

মাধ্যমিক পরীক্ষায় (Madhaymik Exam) সাবিনার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৬৬৮। বিষয়ভিত্তিক ফলাফলে বাংলা ও ইংরেজিতে প্রাপ্ত নম্বর যথাক্রমে ৯৫ ও ৯৪।  অঙ্কে প্রাপ্তি ৯৬। বিজ্ঞান-ইতিহাস-ভূগোলেও নয় দশকের থেকে একচুল কমেনি সংখ্য়া। মাধ্য়মিকে এত ভাল ফলাফল নিজেও আশা করেনি সাবিনা। ফোনের ওপার থেকে ছোট্ট সাবিনা বলে, “মারণ কুয়ার মধ্যে থেকে  পড়াশোনা করেছি। প্রাণ হাতে করে পড়তে যেতে হত। চার স্টেশন দূরে সেই কোচিং। ট্রেন নেই। সাইকেল চালিয়ে নয় পায়ে হেঁটে যাওয়া। সেভাবেই ফেরা। এইভাবেই পড়েছি।”

বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার প্রসঙ্গে সাবিনা বলে, “আমি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। ডাক্তার হয়ে  গরিব মানুষের সেবা করব। মা-বাবার বিশেষ সামর্থ্য় নেই বুঝি, তাই কেউ যদি একটু সাহায্য করেন, পাশে দাঁড়ান তাহলে কৃতজ্ঞ থাকব।” সাবিনার স্কুল শিক্ষক চন্দন মাইতি বলেন, “সাবিনা অত্যন্ত মেধাবী। ওর পাশে এসে কেউ দাঁড়ালে সত্যিই উপকার হবে। ও এত ভাল ফল করবে আশা করিনি। সাবিনার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কামনা করি।” আরও পড়ুন: ভর্তি অনিশ্চিত, উচ্চশিক্ষাও! মাধ্যমিকের ফলেই ‘কাঁটা’ বলছে শিক্ষকমহল