Baruipur: ‘আমি এখানে একাই মহিলা ছিলাম, প্রায় ১০০ জন ঘরে ঢুকে পড়ে’, আতঙ্ক নার্সের চোখে মুখে

Vandalism in Hospital: পথ দুর্ঘটনায় এক শিশুর মৃত্যুকে ঘিরে শুরু হয় ঝামেলা।

Baruipur: 'আমি এখানে একাই মহিলা ছিলাম, প্রায় ১০০ জন ঘরে ঢুকে পড়ে', আতঙ্ক নার্সের চোখে মুখে
হাসপাতালে ভাঙচুরের অভিযোগ। আতঙ্কে স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 01, 2021 | 9:42 AM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: পথ দুর্ঘটনায় শিশুমৃত্যুকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল বারুইপুরের  (Baruipur) মল্লিকপুর। অভিযোগ, পুলিশের সামনেই হাসপাতালে ভাঙচুর চলে। বৃহস্পতিবার রাতের এই ঘটনায় আতঙ্কে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা।

বারুইপুর থানার মল্লিকপুর গ্রামপঞ্চায়েতের গনিমা। সেখানেই রাস্তার ধারে একটি সাইকেলের উপর চার বছরের শিশু শানোয়াজ আনসারিকে বসিয়ে রেখে তার মামা মোবাইল ফোনের দোকানে রিচার্জ করছিলেন। সেই সময় কোনও ভাবে ওই শিশু নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাইকেল থেকে মাঝ রাস্তায় পড়ে যায়।

এদিকে সদা ব্যস্ত ওই রাস্তায় পিছন থেকে আসা একটি ছোট ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয় শানোয়াজ। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হরিহরপুর প্রাথমিক ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এরপরই শুরু হয় গোলমাল।

খবর পেয়ে মল্লিকপুর ক্যাম্পের পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছয়। তারা মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যেতে চাইলে শানোয়াজ আনসারির পরিবারের লোকজন ও গ্রামবাসীরা বাধা দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে প্রায় শ’খানেক মানুষ জড়ো হয়ে যান। এরপরই তাঁরা পুলিশের সামনেই ভাঙচুর চালায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হাসপাতালে থাকা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।

কিছুক্ষণের মধ্যেই বারুইপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। উত্তেজিত জনতাকে সরিয়ে দেয় ও মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়। এই ঘটনায় রীতিমতো ভয়ে আতঙ্কে রয়েছেন ওই হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁরা ২৪ ঘণ্টার জন্য পুলিশি নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন। এই ঘটনায় আটক করা হয়েছে ঘাতক গাড়ির চালককে। শুক্রবার মৃতদেহটি ময়না তদন্তে পাঠাবে বারুইপুর থানার পুলিশ।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে চিকিৎসক অরিজিৎ মণ্ডল বলেন, “বৃহস্পতিবার একটি মৃত শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পথ দুর্ঘটনায় বাচ্চাটি মারা যায়। আমরা মৃত ঘোষণা করার পরই ওর বাড়ির লোকজন ভয়ঙ্কর মূর্তি ধারণ করে। আমাদের উপর হম্বিতম্বি শুরু করেন। বাধ্য হয়ে আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাই। এটা ঠিক যে বাড়ির বাচ্চার এমন অবস্থা, মাথা ঠিক ছিল না। একই সঙ্গে শুনেছি ওরা দেহটি পুলিশকে হস্তান্তর করতে চায়নি। হঠাৎ দেখি প্রচুর মানুষ একসঙ্গে এখানে এসে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। পুলিশ ছিল। তা সত্ত্বেও তাঁরা এই পরিস্থিতি তৈরি করেন। এটা সত্যিই চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য চিন্তার বিষয়। রোগীর চিকিৎসা করি আমরা। তার মধ্যে যদি এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। তা তো উদ্বেগের বটেই।”

অন্যদিকে হাসপাতালের নার্স চিত্রা সিনহা মজুমদারের কথায়, “যা ঘটল তাতে নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্ক রয়েছেই। মহিলা হিসাবে এখানে আমি একাই ছিলাম। এত মানুষ এক সঙ্গে, কোনও কথাই শুনতে চাইছিলেন না ওনারা। বাচ্চাটিকে মৃত অবস্থাতেই হাসপাতালে নিয়ে আসে পরিবার। আমি ভিতরে ছিলাম। বাইরে এসে দেখি প্রথমে ওই বাচ্চার মা, বাবা এলেন। তার পর ধীরে ধীরে ভিড় বাড়তে শুরু করল। প্রচুর চিৎকার, ভাঙচুর চালানো হয়। প্রায় ১০০ জন লোক ছিল। “