দক্ষিণ ২৪ পরগনা: স্বামীকে লুকিয়ে স্মার্টফোন কিনেছিলেন স্ত্রী। স্বামী বাড়িতে না থাকলে সেই ফোন নেড়েঘেটে দেখতেন তিনি। এরইমধ্যে হঠাৎ স্ত্রীর হাতে মোবাইল ফোনটি দেখে ফেলেন ওই যুবক। অভিযোগ, এরপরই রাগে স্ত্রীকে খুন করার চেষ্টা করেন তিনি। বউকে মারতে ৫০ হাজার টাকা সুপারিও দেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় স্বামী ও ভাড়াটে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার মাঝরাতে নরেন্দ্রপুর থানা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, স্ত্রীর হাতে মোবাইল ফোনটি দেখে সন্দেহ করেন স্বামী। এরপরই মাথায় আসে স্ত্রীকে মারার ছক। এক অভিযুক্ত পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার লস্করপুর পেয়ারাবাগান এলাকা। শুক্রবার রাতে সেখানেই ঘটে যায় ভয়াবহ কাণ্ড। আক্রান্ত মহিলার অভিযোগ, প্রতিদিনের মতোই শুক্রবার রাতেই স্বামী রাজেশ ঝাঁ বাড়িতে ফেরেন। ঘরে ঢুকে তাঁর কাছ থেকে বাইরের গেটের চাবি চান। বলেন, গেটে তালা দিতে যাবেন। এদিকে তালা লাগিয়ে আসতে রাজেশের কিছুটা সময় লাগছে বলে বাইরে বেরোন অভিযোগকারী। অভিযোগ, হঠাৎই একজন তাঁর মুখ চেপে ধরেন। আরেকজন ধারাল অস্ত্র নিয়ে তাঁর দিকে ছুটে আসেন। এরপরই ঘরে টেনে নিয়ে গিয়ে খাটের উপর শুইয়ে তাঁর গলায় অস্ত্র ধরা হয় বলে অভিযোগ।
তবে ততক্ষণে ওই তরুণীর চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে আসেন। একজনকে হাতেনাতে ধরে ফেললেও আরেকজন পালিয়ে যান। আটক ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রতিবেশীরা। তাঁর কাছ থেকে একটি খড়দহ থেকে আসা লোকাল ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়। গৃহবধূর অভিযোগ, মুখ ঢাকা অবস্থায় ছিল দুই দুষ্কৃতী। এদিকে স্থানীয় লোকজন ওই গৃহবধূকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। তার গলায় সাতটি সেলাই পড়ে। এরপর খবর দেওয়া হয় নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশকে। পুলিশ এসে আটক ওই যুবক ও অভিযোগকারীর স্বামীকে গ্রেফতার করে।
গৃহবধূর অভিযোগ, “আমার দুই সন্তান। একজন ১১ বছরের, একজনের বয়স পাঁচ বছর। আমার স্বামী চায় না আমার কাছে স্মার্টফোন থাকুক। তবু আমি কিনেছি, আমার দরকার ছিল। বাচ্চাদের অনলাইন ক্লাস চলে। আমারও তো দরকার হয়। তাই কিনি। জানি না ওর মনে কী চলছিল। ওর আচার আচরণ দেখে আমার তো সন্দেহ হয় মাঝেমধ্যে। ওর কোনও সমস্যা রয়েছে কি না। ও পরিবারের কারও সঙ্গে কথা বলে না। মা, ভাই, দিদি কারও সঙ্গে না। ফোন কিনেছি বলেই আমার উপর হামলা। এমনভাবে গলায় আঘাত করেছে সাতটা সেলাই পড়েছে। ছুরি দিয়ে মেরেছে। থানায় গিয়ে এফআইআর করেছি। তিনদিন পর যেতে বলেছে থানায়।”
স্থানীয় বাসিন্দা পিঙ্কি নন্দী বলেন, “ঘরে গিয়ে দেখি ছুরি পড়ে রয়েছে ঘরে। গলা কেটে গিয়েছে বৌদির। পরে আমাদের পাড়ার দু’জন বৌদিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এর আগে কোনওদিন এরকম ঘটনা ঘটেনি এলাকায়। এই প্রথম এমন হল। আমরা তো ভয় পেয়ে গিয়েছি। আমরা চাই দোষীরা শাস্তি পাক।” যদিও অভিযুক্ত স্বামীর দাবি, তাঁর স্ত্রী দিনের পর দিন তাঁকে মানসিক নির্যাতন করে চলেছেন। সেটা কেউ দেখছে না।
আরও পড়ুন: বহুতলে ভয়াবহ আগুন, মৃত বেড়ে ৭! অসুস্থ বহু