দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ফেসবুকেই আলাপ। বছর দেড়েক ধরে সেখানেই দিব্যি চলছিল প্রেমালাপ। কিন্তু দেখা তো করতে হবে! একবার দেখা করে পালিয়ে যাওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওঁরা। কিন্তু পেরে ওঠেননি। তবে এবারের শিবরাত্রির দিনে ‘অপারেশন পালানো’ এক্কেবারে ‘সাকসেস’ করতেই উঠে পড়ে লাগেন ওঁরা। ছক কষে ফেলে গোটা ‘গেমপ্ল্যান’। শিবরাত্রিতে বাড়ির সামনেই একটি মন্দিরে শিবের মাথায় জল ঢালতে যাবেন প্রেমিক। প্রেমিকও উপস্থিত থাকবেন মন্দিরেই। শিবের মাথায় জল ঢেলেই এক্কেবারে সুদূরে পাড়ি। সেই মোতাবেক বারাকপুর থেকে ট্রেনে চেপে বাসন্তীতে পৌঁছে যান প্রেমিক। কিন্তু শিবরাত্রিতেই ঘটে গেল বিপর্যয়! শেষমেশ প্রেমিকের কপালে জুটল চোর অপবাদ। অতঃপর ভোররাতে গণধোলাই। এবারের শিবরাত্রিতে এক নজিরবিহীন ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) সুন্দরবনের (Sundarban) বাসন্তীতে।
ভোরের আলো তখনও ফোটেনি। স্টেশনের কাছাকাছি এলাকায় বছর কুড়ির এক যুবক হুড়হুড় করে ছুটছে। পিছনে আরও কয়েকজন। স্বাভাবিকভাবেই স্টেশন চত্বরে থাকা জনা কতক লোক ভেবে ফেলেন, ‘চোর পালাচ্ছে’। শুরু হয় উত্তম মধ্যম। মাটিতে ফেলে চলে চড়, কিল, থাপ্পড়, ঘুষি। কাঁদতে কাঁদতে যুবক নেন প্রেমিকার নাম। তখনই টনক নড়ে বাকিদের। উঠে আসে আসল তথ্য।
নাম আকাশ মাঝি। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বারাকপুর এলাকায়। অনেক ঠিকানা হাতড়ে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে সুন্দরবনের বাসন্তীতে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। প্রেমিকা যদিও প্রাপ্তবয়স্ক নন। স্থানীয় একটি শিব মন্দিরে অন্যান্য ব্রতীদের সঙ্গেই তখন অপেক্ষা করছিলেন প্রেমিকা।
আরও পড়ুন: ‘প্রত্যক্ষদর্শীদের বাড়িতে গিয়ে ভাত খাচ্ছেন শুভেন্দু’, বিরুলিয়ার ঘটনায় এ বার অন্য মোড়
বৃহস্পতিবার রাতে ওই মন্দিরে গিয়ে উপস্থিতও হন আকাশ। শুক্রবার ভোর রাতে শিবের মাথা জল ঢেলেই ছিল পালিয়ে যাওয়ার প্ল্যান। কিন্তু প্রেমিকার পরিবারের লোকজনের হাতে ধরা পড়ে যান। তাড়া খেয়ে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেন আকাশ। ইতিমধ্যে দৌড়ে ক্যানিং ষ্টেশনে ঢোকার সময় বেশ কয়েকজন যুবক ‘চোর চোর’ বলে চিৎকার শুরু করে। ধরাও পড়ে যান।অল্পবিস্তর মারধরও চলে। পরে অবশ্য সঠিক ঘটনা বুঝতে পেরেই ওই যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়। আপাতত প্রেমিকা ছাড়াই, খালি হাতে, ব্যথা গায়ে বাড়ি ফিরতে হয় আকাশকে।