বয়স ষাট পেরিয়েছে, স্রেফ একটা কথাতেই বহু তরুণীকে মুগ্ধ করেছেন! হোটেলেই কাজ হাসিল…

TV9 Bangla Digital | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Aug 30, 2021 | 7:58 AM

Fake CID Officer: কলকাতার কসবা থানার আদর্শনগর এলাকার বাসিন্দা শেখর। অভিযুক্তকে সোমবার দুপুরে বারুইপুর আদালতে পেশ করা হবে।

বয়স ষাট পেরিয়েছে, স্রেফ একটা কথাতেই বহু তরুণীকে মুগ্ধ করেছেন! হোটেলেই কাজ হাসিল...
নিজস্ব চিত্র

Follow Us

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বয়স ষাট পেরিয়েছে। কিন্তু তা দেখে বোঝার উপায় নেই। বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা, ব্যক্তিত্ব, কথাবার্তার ধরন, তাঁর চালচলন নজর কাড়ার মতো। আর তাঁর টার্গেট সব সময়ই তিরিশ অনুর্ধ্ব মেয়েরাই! ‘বয়স’কে তুড়ি মেরে উড়িয়ে নিজের ক্যারিশ্মাতেই অল্প বয়সী মেয়েদের জালে ফেলতেন তিনি। কথার তাঁর মারপ্যাঁচই তাঁর আলাদা। মোহতেই হাঁটুর বয়সী মেয়েরা এক কথায় রাজি হয়ে যেতেন তাঁর সঙ্গে হোটেলে যেতে। আর সেখানেই কাজ হাসিল। বারুইপুরের ভুয়ো সিআইডি অফিসারের তদন্তে নেমে স্তম্ভিত দুঁদে তদন্তকারীরাও।

কখনও নিজেকে সিআইডি অফিসার, আবার কখনও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক বলে পরিচয় দিতেন তিনি। বিশেষত তাঁর টার্গেট ছিলেন অল্প বয়সী মহিলারাই। এই ভুয়ো পরিচয় দিয়ে মহিলাদের চাকরির দেওয়ার নাম প্রতারণা করতেন তিনি। ভুয়ো সিরিজে যুক্ত হল আরও এক প্রতারকের নাম। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম শেখর গঙ্গোপাধ্যায়।

তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শেখর নিজেকে বোর্ড অফ মেডিক্যাল কাউন্সিলের সদস্য বলে পরিচয় দিতেন। আবার ভিজিল্যান্সের ডিজি পদমর্যাদার অফিসার পরিচয়ও দিতেন। পরিচয় ভাঁড়িয়ে অল্প বয়সী মেয়েদের নিজের ফাঁদে ফেলতেন শেখর।

তারপরেপুলিসের ভালো চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে মেডিক্যাল পরীক্ষার নামে প্রতারণাও করতেন। শেখরের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে মেডিক্যালের ভুয়ো পরিচয়পত্র ও একটি মোবাইল।রবিবার বিকালে গড়িয়া এলাকা থেকে তাঁকে ধরে বারুইপুর থানার পুলিশ।

কলকাতার কসবা থানার আদর্শনগর এলাকার বাসিন্দা শেখর। অভিযুক্তকে সোমবার দুপুরে বারুইপুর আদালতে পেশ করা হবে। বছর বাষট্টির শেখর অল্পবয়সী মেয়েদের নিজের কথাবার্তা চালচলনে মুগ্ধ করতেন। তাঁর ব্যক্তিত্ব দেখে ভরসা করে ফেলতেন মেয়েরাও। চাকরির জন্য অনেক তরুণী তাঁর কাছে গেলে অভিযুক্ত বলতেন, তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষা ছাড়া পুলিশের চাকরি হবে না।

পুলিশের কনস্টেবল থেকে এসআই পদ- সবেতেই চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দেওয়া হত তাঁদের। কিন্তু মেডিক্যাল পরীক্ষার নাম করে তরুণীদের বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে যাওয়া হত। অনেক পুলিশ অফিসারের সঙ্গে তাঁর পরিচয় আছে বলে নিজেকে জাহির করতেন ধৃত। এইভাবেই অনেক তরুণী প্রতারিত হয়েছেন।

২০১৬ সালে গড়িয়াহাট থানায় প্রতারণার অভিযোগে তাঁকে ধরেছিল পুলিস। বারুইপুর থানায় গত জুলাই মাসে এক প্রতারিত মহিলা অভিযুক্তের নামে অভিযোগ করেন। এর ভিত্তিতেই তদন্তে নেমে পুলিস গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে। এর সঙ্গে আর কারা জড়িত তা পুলিশ খোঁজ চালাচ্ছে।

পুলিশ জানাচ্ছে, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বিভিন্ন সময়ে নিজেকে উচ্চ পদস্থ সরকারি আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন। বাকিটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তের বয়ানও নেওয়া হচ্ছে। তবে অভিযোগকারিনী এখনই এই বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে চাননি। অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করার পর বলবেন বলে জানিয়েছেন।

কসবার দেবাঞ্জন দেব, বরানগরের সনাতন রায় চৌধুরী, বেলঘরিয়ার রাজর্ষি ভট্টাচার্য – ভুয়ো আইএএস, ভুয়ো সিবিআই কৌসুলী, ভুয়ো আইপিএস- ‘ঠগ’দের এই তালিকায় এখন নবতম সংযোজন শেখর। তদন্তকারীরা এবার দেখতে চাইছেন এই শেখরের হাত কতটা লম্বা! আরও পড়ুন: ঘুরতে যেতে হাতে রাখতে হবে না করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট! কেন্দ্রের নয়া উদ্যোগে স্বস্তিতে যাত্রীরা

Next Article