
বারুইপুর: করোনার কারণে অনেক টালবাহানা করে খুলেছে স্কুল। তাও নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী নিয়ে হচ্ছে ক্লাস। কিন্তু এ কী অবস্থা স্কুলের! স্কুল তো খুলে গিয়েছে। কিন্তু পড়ুয়ারা কোথায়? তাদের নেই কোনও দেখা। এদিকে সামনেই টেস্ট পরীক্ষা। তাই পড়ুয়াদের স্কুলে আনতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হচ্ছে শিক্ষকদের। রীতিমত বাজার-হাটে পোস্টার দিচ্ছেন তাঁরা।
করোনার দরুণ রাজ্য জুড়ে দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ ছিলো স্কুলের পঠন পাঠন। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে পড়ুয়াদের মধ্যে। স্কুল খুললে শিক্ষক-শিক্ষিকারা আসতে শুরু করলেও, দেখা নেই পড়ুয়াদের। এমনই ছবি ধরা পড়ল বারুইপুরের বেগমপুর জ্ঞানাদা প্রসাদ ইনস্টিটিউট স্কুলের।
জানা গিয়েছে, ওই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা শনিবার এলাকার হাটে,বাজার কিংবা দোকান প্রভৃতি জায়গায় গিয়ে স্কুল পড়ুয়াদের স্কুলে আসা ও পরীক্ষা বসার জন্য আবেদন জানাচ্ছেন । পাশাপাশি টোটো কিংবা অটো করে এলাকায়-এলাকায় প্রচার করা হয়েছে। এর মধ্যে সোমবার থেকে স্কুলে নবম,দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে। তাই তারা যাতে স্কুলে পরীক্ষা দিতে আসে এই পোস্টারের মাধ্যমেই তার প্রচার করা হচ্ছে।
এই স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরত পড়ুয়া আছে প্রায় ৫৭০ জন।কিন্তু স্কুল খোলা থাকলেও পড়ুয়া আসে একশোর কম। এখন তাই পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে জনসংযোগই ভরসা শিক্ষকদের
স্কুলের প্রধান শিক্ষক শক্তিপদ মাইতি বলেন, “আমরা প্রথমে অভিভাবকদের নিয়ে মিটিং করেছি। কিন্তু সেখানেও উপস্থিতির হার অনেক কম। অভিভাবকরা নিজেরাই আসেননি স্কুলে। তবুও যারা এসেছিলেন তাদের আমরা বলেছি যাতে আশেপাশের ছাত্রদের বলেন স্কুলে আসতে। পরীক্ষায় যেন বসে। তারপরও ক্লাসে উপস্থিতি কম। এরপর আমরা অটো-টোটো নিয়ে বেরিয়ে প্রচাক করছি যাতে ওরা ক্লাসে আসে। ৫৭০ জন পড়ুয়ার মধ্যে ক্লাসে উপস্থিত হচ্ছেন ১০০-র কম পড়ুয়া।”
প্রসঙ্গত, স্কুল খোলার পর থেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়াদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে। কিছুদিন আগে হুগলির শ্রীরামপুরের একটি গার্লস হাইস্কুলের কয়েকজন শিক্ষিকা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ল অভিভাবক ও ছাত্রীদের মধ্যে। ফের বন্ধ হল স্কুল। প্রায় ২০ মাস বন্ধ থাকার পর সরকারের নির্দেশিকা মেনে গত ১৬ তারিখ খুলেছে স্কুল ও কলেজ। যদিও আশঙ্কা ছিলই করোনা নিয়ে। শিক্ষকদের তবু করোনার দুটো টিকা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বহু স্কুল পড়ুয়াদের তা হয়নি। এই অবস্থাতেই সরকারি গাইড লাইন মেনে স্কুলে চালু হয়েছে পঠনপাঠন। আবার করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার পরেও অনেকে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। যেমনটা হয়েছে শ্রীরামপুরের একটি গার্লস হাইস্কুলে।