BJP Protest for Farmer: সরকার বিরোধী আন্দোলনের ‘আঁতুড়ঘর’ সিঙ্গুরে এবার কৃষকদের জন্য ধর্নায় বসছে বিজেপি

BJP Protest for Farmer: আজ সাত দফা দাবি নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে কৃষকরা রাজ্যপালের দ্বারস্থ হন। এবার তিন দিন ধর্নায় বসবে বিজেপি নেতৃত্ব।

BJP Protest for Farmer: সরকার বিরোধী আন্দোলনের 'আঁতুড়ঘর' সিঙ্গুরে এবার কৃষকদের জন্য ধর্নায় বসছে বিজেপি
অলংকরণ- অভিজিৎ বিশ্বাস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 11, 2021 | 5:44 PM

কলকাতা : এ রাজ্যে কৃষক আন্দোলনের অন্যতম আঁতুড়ঘর বলা হয় সিঙ্গুরকে। বাম শাসনের পতন ঘটিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় আসার পিছনে বেশ কয়েকটি কারণের মধ্যে সিঙ্গুরের সেই আন্দোলন অন্যতম বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। সেই সময় মমতার ধর্না মঞ্চের ছবি এখনও অনেকের মনে অমলিন। এবার সেই সিঙ্গুরেই কৃষকদের জন্য আন্দোলনে নামছে বিজেপি। তৃণমূল শাসিত রাজ্য সরকার কৃষকদের প্রতি উদাসীন বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের। ১৪, ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর সিঙ্গুরে ধর্নায় বসবে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব।

এ দিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানান, দেশের একাধিক রাজ্যে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়া হয় কৃষকদের, কোথাও কোথাও বিদ্যুতের দামে সরকার ভর্তুকি দেয়। তাই বঙ্গ বিজেপির দাবি, রাজ্য সরকার এ রাজ্যের কৃষকদের বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দিক, আর যদি সরকারের পক্ষে সেটা সম্ভব না হয় তাহলে সর্বাধিক ২ টাকা প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ দেওয়া হোক কৃষকদের। এই দাবি নিয়ে মূলত ধর্নায় বসছেন তাঁরা। সিঙ্গুরের এই আন্দোলন থেকে গোটা রাজ্যের কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিতে চাইছে বিজেপি।

বিজেপির এই সিদ্ধান্তকে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘এই বিজেপি দেশে এমন এক কৃষি আইন এনেছিল, যার জন্য কৃষকরা দিনের পর দিন রাস্তায় বসে আন্দোলন করেছে, কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এরপর ভোটে জেতার জন্য সেই আইন তুলে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।’ তাই বিজেপির এই কৃষক আন্দোলন ‘নাটক’ বলে উল্লেখ করেছেন কুণাল ঘোষ। তাঁর দাবি জনবিরোধী কৃষক নীতির প্রবক্তাই হল বিজেপি। তাই এ রাজ্যের মানুষ তাঁদের এই আন্দোলন সমর্থন করবে না।

আজ শনিবার কিষাণ মোর্চার নেতাজের নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, অনেক দিন ধরে বলা হয়েছে কৃষকরা অসুবিধায় আছে। রাজ্য সরকার কৃষকদের বিষয়ে উদাসীন। তিনি জানান, বৃষ্টির কারণে আলু,আমন ধান, শীত কালীন সবজি তোলা যায় নি। তাই অসুবিধায় পড়েছেন কৃষকেরা। এই বিষয়ে কথা বলতে মুখ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছিলেন বলেও জানান শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যসচিব বাইরে থাকায়, তা সম্ভব হয়নি।

মোট সাত দফা দাবি নিয়ে এ দিন রাজ্যপালের কাছে যান শুভেন্দু। কী সেই সাত দফা দাবি?

১. অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ করা হোক।

২. আত্মহত্যাকারী কৃষক পরিবারকে এককালীন ২০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।

৩. সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিশেষ ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ দেওয়া হোক।

৪. অবিলম্বে পেট্রো পণ্যে রাজ্য সরকারের সেস কম করা হোক।

৫. বিদ্যুতের দাম কম করা হোক। কৃষি ও সেচের কাজে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়া হোক।

৬. সরকারকে প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ফসল সংগ্রহ করতে হবে। ফড়েদের রুখতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৭. কৃষকদের ফসলের লাভজনক দাম দিতে হবে।

তবে বিজেপির জন্য সিঙ্গুরের এই আন্দোলন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। একসময় রাজ্যে বিরোধী আসনে থাকাকালীন কৃষকদের জন্য আন্দোলন করে বামেরা। জমি আন্দোলনের হাত ধরেই তারা ক্ষমতায় আসে। আর সিঙ্গুরে মমতা আন্দোলনের কথা তো সর্বজনবিদিত। বিরোধী নেত্রী হিসেবে থাকাকালীন কৃষকদের জন্য আন্দোলন করেছেন তিনি। সিঙ্গুর- নন্দীগ্রামের সেই আন্দোলনের অব্যবহিত পরেই ক্ষমতায় আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই রাজনৈতিক দিক থেকে এরাজ্যে কৃষক আন্দোলনের যে একটা বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, তা বলাই যায়। এবার সেই কৃষক আন্দোলনে পথে নামছে বিজেপি। আন্দোলনের জায়গা হিসেবে সিঙ্গুরকেই বেছে নিয়েছে তারা।

আরও পড়ুন : Omicron Scare in Kolkata : আতঙ্ক বাড়ছে কলকাতায়! ওমিক্রন সন্দেহে বেলেঘাটা আইডিতে ভরতি বাংলাদেশ ফেরত বৃদ্ধ