
কলকাতা: এসআইআর-এর মধ্যেই আবারও বিস্ফোরক রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আবারও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা। ফলতায় মৃতদের নাম তালিকায় রাখতে প্রশাসনকে ব্যবহারের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নিজের সামাজিক মাধ্যমে এক অডিয়ো ক্লিপ তিনি পোস্ট করেছেন। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, ফোন করে ফলতার বিডিও ও AERO নির্দেশ দিচ্ছেন, মৃত্যুর শংসাপত্র ছাড়া কাটা যাবে না ভোটারের নাম। তাঁর আরও অভিযোগ, এদিকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে জাহাঙ্গির বাহিনী। BLO-দের হাতে মৃত্যুর শংসাপত্র দিতে বারণ করছে জাহাঙ্গির বাহিনী। আরও ভয়ঙ্কর অভিযোগ, BLO-দের বলা হচ্ছে, ফর্মগুলি আপলোড না করে আনম্যাপিং করে ছাড়তে। কেন এমন নির্দেশ, সেই প্রশ্ন তুলে পোস্ট করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দুর পোস্ট করে অডিয়ো রেকর্ডিংয়ে শোনা যাচ্ছে, “বিডিও বলেছেন, ডেথ কেসগুলো কেন দেখানো হচ্ছে না? আপনি তো লোকাল, আমিও তো বাড়ি গিয়ে দেখছেন নেই। তাহলে কার নির্দেশের অপেক্ষায় সেগুলো ডিজিটাইজ করছেন না? আপনি এখুনি ফোনে তুলে দিন। না হলে কিন্তু আমি বিএলও-দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এটা বলার পর সন্ধ্যা থেকে সব তুলতে শুরু করেছে। সব মৃতদের নাম তুলে দিচ্ছে তারা। আজ বিকাল তিনটে থেকে AERO আর BDO ফোন করে বলছে, আপনি ডেথ সার্টিফিকেট না পেলে আপনি কী করে তুলছেন? যতই তার বাড়ির লোক বলুক মৃত। সার্টিফিকেট না পেলে একটাও তুলতে পারবেন না। আর উল্টে গ্রামে ঘুরে ঘুরে বলে দিচ্ছে, কেউ ডেথ সার্টিফিকেট দিবি না।”
এই অডিয়ো সামনে আসার পর থেকেই শুরু রাজনৈতিক বিতর্ক। তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “এটা তো ঠিকই। একজন যদি এসে বলেন, আমার কাকা মারা গিয়েছেন, তাতে নির্বাচন কমিশনের কোনও অধিকার নেই, সেই নামটা বাদ দেওয়ার। ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া নাম বাদ দেওয়া যায় না। এটা ম্যানুয়ালে লেখা আছে।”
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, যখন পরিবারের লোক, এনুমারেশন ফর্মে ডিক্লারেশন দিচ্ছেন, যে তাঁদের সেই আত্মীয় মৃত, তখনও বিডিও নির্দেশ দিচ্ছেন, সেই ফর্ম আপলোড করা যাবে না। সেগুলো আনম্যাপিং করে ছেড়ে দিতে।
জয়প্রকাশের বক্তব্য, “তিনটে আলাদা আলাদা ফর্ম রয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী কিছু জানেন না। না জেনে হাওয়া গরম করছেন।”
প্রসঙ্গত, গত শক্রবারই ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি নেতা অভিজিৎ দাস ববি অর্থাৎ যিনি গত লোকসভা নির্বাচনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন, তিনি সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। তাঁর অভিযোগ, ফলতার বিডিও এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা জাহাঙ্গিরের কথায় মৃত ভোটারের নাম তুলতে বিএলও-দের চাপ দিচ্ছেন। এরপর বিকালে সেখানে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। এই অভিযোগ, এর আগেও প্রকাশ্যে আনেন অভিজিৎ। এর প্রেক্ষিতের কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন শমীক। ফলতাতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের বিশেষ টিমও আসে। স্পেশ্যাল ১৩! বিশেষ পর্যবেক্ষক সুব্রত গুপ্ত ফলতায় বিডিও-র সঙ্গে বৈঠকও করেন। তারপরও এই ধরনের বিস্ফোরক অভিযোগ করছেন শুভেন্দু।