‘হঠাৎ করে বলল মহরমের দিন দুর্গাপুজো বন্ধ থাকবে’, বিজেপির হাতিয়ারে শান দিয়ে কটাক্ষ সিদ্দিকির

বাংলায় বিভাজনের রাজনীতির জন্য দায়ী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার ঢোলাহাটে সংযুক্ত মোর্চার নির্বাচনী জনসভা থেকে এমনই মন্তব্য করলেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (ISF) প্রধান আব্বাস সিদ্দিকি (Abbas Siddiqui)।

'হঠাৎ করে বলল মহরমের দিন দুর্গাপুজো বন্ধ থাকবে', বিজেপির হাতিয়ারে শান দিয়ে কটাক্ষ সিদ্দিকির
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Mar 29, 2021 | 10:47 PM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বাংলায় বিভাজনের রাজনীতির জন্য দায়ী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার ঢোলাহাটে সংযুক্ত মোর্চার নির্বাচনী জনসভা থেকে এমনই মন্তব্য করলেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (ISF) প্রধান আব্বাস সিদ্দিকি (Abbas Siddiqui)। এদিন তিনি ফের তৃণমূল (TMC) ও (BJP)-র গোপন বোঝাপড়ার দিকে আঙুল তুলে বলেন,”তৃণমূলে ভোট দিলে গিয়ে পড়বে বিজেপিতে। আর বিজেপিকে ভোট দিলে তৃণমূলের হাতকেই শক্ত করা হবে।”

বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির কটাক্ষ, কংগ্রেসকে ফেলে বিজেপি সরকার বানাতে সাহায্য করেছিলেন মমতাই। তারপর বাংলায় ধর্মীয় বিভাজনের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করে তিনি বলেন, “হাজার হাজার বছর ধরে কোনও মহরম আর দুর্গাপুজো নিয়ে অসুবিধা হয়নি। এগুলো করে হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছে মমতা ব্যানার্জি।” পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে আব্বাস বলেন, “রাজনীতি কখনও সাম্প্রদায়িক হয় না। রাজনীতি হল রাষ্ট্র সেবা, রাষ্ট্রবাসীর সেবার নাম।”

বাংলায় দুর্গাপুজো, সরস্বতী পুজো করতে দেওয়া হয় না বলে বারবার মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অন্যদিকে বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা বিভাজনের রাজনীতি করার অভিযোগ করে এসেছে তৃণমূলও। এই প্রেক্ষিতে যে পিরজাদা সিদ্দিকিকে সাম্প্রদায়িক বলে আক্রমণ করে আসছে তৃণমূল ও বিজেপি তিনিই ঘুরিয়ে একই অভিযোগে বিদ্ধ করলেন তৃণমূল নেত্রীকে।

সিদ্দিকির অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধী শূন্য করে দেওয়ার নামে বাম-কংগ্রেসকে মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু বিজেপি মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছে। সে কারণেই ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি ১৮ টি আসন পেয়েছে, অভিযোগ সিদ্দিকির। অর্থাৎ, বারবার তিনি তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে গোপন বোঝাপড়ার অভিযোগ করেন। সিদ্দিকির আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, এই ভোটের জন্য ১৮ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।

এমনকি এনআরসি ও সিএএ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তৃণমূলকেই কাঠগড়ার দাঁড় করিয়ে আব্বাস বলেন, ২০০৫ সালে সর্বপ্রথম এনআরসি করতে হবে বলে মোদীর আগে ‘চিৎকার’ করে ছিলেন মমতাই। এখন সিএএ ও এনআরসি বিরোধিতার নামে মমতা নাটক করছেন বলে অভিযোগ তাঁর। পাশাপাশি মমতার আহত হওয়ার ঘটনাকেও ‘নাটক’ বলে তোপ দেগে আইএসএফ নেতা বলেন, “বাংলার মানুষকে এই ভাবে ধোকা দিয়ে প্রতারণা করে ১০ বছর কাটিয়েছেন। কেউ মমতার বিরুদ্ধে কথা বললে গাঁজা কেসে জেলে ভরে দিত, ঘর ভেঙে দিত।” আরও এক পা এগিয়ে তিনি এও অভিযোগ করেছেন যে, মমতার বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য তাঁর বাড়িতে বাড়িতে কয়েক হাজার পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, আব্বাসের দলকে সাম্প্রদায়িক বলে অভিযোগ করে এসেছে তৃণমূল। সেই সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষ বাম জোট তাঁদের সঙ্গে জোট করেছে বলেও সমালোচনা করেছে রাজ্যের শাসক দল। এদিন উল্টে তৃণমূল সুপ্রিমোকেই সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কাণ্ডারী বলে তোপ দাগলেন আব্বাস। তৃণমূলের ‘খেলা হবে’ স্লোগান নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর কটাক্ষ, “সংবিধান বাঁচানোটা কি খেলা? দেশের নাগরিকরা কিভাবে উন্নতন হবে এর নাম খেলা!”

আরও পড়ুন: ‘আপনিও দলবদল করবেন না তো?’ প্রশ্ন শুনে অপ্রস্তুত প্রার্থী

এদিন সভায় উপস্থিত ছিলেন কুলপি, মন্দিরবাজার, রায়দিঘি, কাকদ্বীপ ও পাথরপ্রতিমা বিধানসভার বাম, আইএফএফ ও কংগ্রেস কর্মী সমর্থকেরা। প্রতীক যাই হোক না কেন প্রত্যেক বিধানসভা থেকে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীদেরকেই জয়ী করার আহ্বান জানান আব্বাস সিদ্দিকি ও কান্তি গাঙ্গুলিরা।