Raiganj Medical College: মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত ৬ মাসের শিশু, বাড়ছে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা

COVID19: রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, কোভিড ওয়ার্ডে চিকিত্‍সাধীন শিশুটির শারীরিক অবস্থা এখনও স্থিতিশীল। তবে শিশুটিকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

Raiganj Medical College: মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত ৬ মাসের শিশু, বাড়ছে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা
রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 04, 2021 | 6:17 PM

উত্তর দিনাজপুর: করোনার তৃতীয় ঢেউ ( COVID 3rd Wave) আছড়ে পড়ার আগেই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হল এক ছয় মাসের শিশু। রায়গঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন। জেলায় প্রথম এত কম বয়সী শিশু আক্রান্ত হল বলেই জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।

রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, কোভিড ওয়ার্ডে চিকিত্‍সাধীন শিশুটির শারীরিক অবস্থা এখনও স্থিতিশীল। তবে শিশুটিকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই শিশুটি বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বর, সর্দিতে ভুগছিল। এই উপসর্গ নিয়েই শিশুটির পরিবার তাকে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে ভর্তি করান। র‍্যাপিড টেস্টের পর সন্দেহ হওয়ায়  চিকিত্‍সকেরা আরটিপিসিআর পরীক্ষা করতে বলেন। এরপরেই ওই শিশুর কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে। তখনই তাকে শিশুবিভাগ থেকে কোভিড ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়।

রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারি সুপার সৌমাশীষ রাউত জানিয়েছেন, ওই শিশুটির শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল হলেও তাকে নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। ওই শিশু কী করে করোনা আক্রান্ত হল তা নিয়েও সন্দিগ্ধ চিকিত্‍সকমহল। পরিবারের কারোর থেকেই ওই শিশু আক্রান্ত হয়েছে বলেই মনে করছেন তাঁরা। তবে, শিশুবিভাগের বাকি শিশুদেরও করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

এদিকে পুজোর পর থেকেই রায়গঞ্জ শহর জুড়ে বাড়ছে করোনার প্রকোপ। প্রত্যেকদিন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে শহরের মানুষ। গতকালও রায়গঞ্জ মেডিক্যালে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। কোভিড আক্রান্তের সংখ্যাও যে ক্রমবর্ধমান এমনটাই জানিয়েছেন রায়গঞ্জ হাসাপাতালের সহকারি সুপার।

শুধু করোনা নয়, রায়গঞ্জ মেডিক্যালে একের পর এক বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাও। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা রোজই গড়ে ৭ থেকে ৮ জন। ভর্তি থাকা ৩৫ জন রোগীর মধ্যে ১১ জনের শরীরেই ডেঙ্গু সংক্রমণ মিলেছে। আরও রোগীর সংখ্যা বাড়লে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের।

জ্বরের বাড়বাড়ন্তের কথা স্বীকার করেছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষও। হাসপাতালের সহকারী অধ্যক্ষ প্রিয়ঙ্কর রায় বলেন, ‘‘জ্বর নিয়ে দৈনিক ৮ থেকে ৯ জন হাসপাতালে আসছেন। জ্বরের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এর পাশাপাশি সব রকম পরীক্ষাও করা হচ্ছে। এখানে ডেঙ্গিরও কয়েক জন রোগী আছেন।’’

পরিস্থিতি সামাল দিতে পৃথক আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরির পথে হাঁটছে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ। ডেঙ্গু ছাড়া অন্য় জ্বরের প্রকোপ কেন বাড়ছে তা নিয়ে চিন্তায় মেডিক্যাল কলেজ। ইতিমধ্যেই হাসপাতালে কালাজ্বর নিরাময় ও নিয়ন্ত্রণে বিশেষ বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করা হয়েছে।  জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যায় রাশ টানতে কী কী পদক্ষেপ করা যায় সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।

উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর মহকুমার চাকুলিয়া, গোয়ালপোখরের বেশ কয়েকজন জ্বরে আক্রান্ত রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সেইসঙ্গে ইটাহার, রায়গঞ্জ এবং দক্ষিন দিনাজপুরের বেশকিছু রোগী রায়গঞ্জ মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। যাঁদের অনেকেরই এখনও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার কারণ জানা যায়নি। যা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

কয়েকমাস আগে অজানা জ্বরের দাপটে জবুথবু হয়ে পড়ে উত্তরবঙ্গ। মূলত শিশুদেরই আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলে। একাধিক শিশুমৃত্যুও ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি আসরে নামে রাজ্য স্বাস্থ্যভবন। যদিও, ওই জ্বরকে ‘মরসুমি’ বলেই আখ্যা দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জ্বর নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমে বৃদ্ধি পেতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও।

রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, জ্বরের কারণ খুঁজতে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভাইরাস প্যানেলে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পাশাপাশি, উপসর্গের নিরিখে কী ধরনের চিকিৎসা করতে হবে সেই সংক্রান্ত প্রোটোকল বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করা হয়েছে। দ্রুত তা জেলাস্তরে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ভাইরাল প্যানেলে পরীক্ষা খরচসাপেক্ষ। তাই কোভিড, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, স্ক্রাব টাইফাস ধরা না পড়লে ভাইরাস প্যানেল করতে বলা হয়েছে। পিএম কেয়ার্সে পাওয়া ভেন্টিলেটরকে পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটর, হাই ফ্লো ন্যাজাল অক্সিজেন মাস্কে রূপান্তরিত করতে বলা হয়েছে। এছাড়া বাড়তি HFNO দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন:  Dinhata: গীতালদহ গুলিকাণ্ডে গ্রেফতার বিধায়ক-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা মফজুর রহমান