Cyber Crime in Chopra: ‘কোনওদিন ভাবতে পারিনি গ্রামে এসব হবে!’ আধারপুরী চোপড়ায় আতঙ্ক এখন ঘরে ঘরে
Cyber Crime in Chopra: তদন্তকারীদের অনুমান, দক্ষিণের একাধিক শহর থেকে সাইবার অপরাধের হাতেকলমে পাঠ নিয়ে নারায়ণপুর এসে ঘাঁটি গাড়ছে এই সব প্রতারকেরা। সেই কাজ শেখানো হচ্ছে নারায়ণপুর-ইসলামপুরের শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের। কার্যত পাঠশালা তৈরি করে দেওয়া হত প্রশিক্ষণ।

চোপড়া: উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া ব্লকের নারায়ণপুর গ্রাম। বাংলার আর পাঁচটা গ্রামের মতই চেহারা এই গ্রামে। তবে এখানে ধান-পাটের থেকে চায়ের জমিই বেশি। চা বাগানে ঘেরা এই অঞ্চলে গবাদি পশু পালনও করেন বাসিন্দারা। কিন্তু, এখান থেকে চলা আধার প্রতারণা চক্র বিগত কয়েক মাস ধরে ঘুম উড়িয়েছে বঙ্গবাসীর। আধার পথ বেয়েই অ্যাকাউন্ট থেকে সাফ হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার টাকা। আঁকাবাঁকা পথের ঘন সবুজ বনানী আর চা বাগানের ঘেরাটোপের মাঝে এই নারায়ণপুরেই ঘাঁটি গেড়েছিল আধার জালিয়াতরা। কিন্তু, এই ঘটনার কথা জানতে পারা মাত্রই রীতিমতো হতবাক এলাকার সাধারণ মানুষ। সাফ বলছেন, এখান থেকে এমনটা হচ্ছে তা তাঁরা জানতেন না। স্থানীয়রা চাইছেন ঘটনার তদন্ত হোক, নেপথ্যের কারবারিদের আসল রূপ প্রকাশ্যে আসুক। জোরদার তদন্ত করুক পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই এলাকার প্রচুর মানুষ পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। মুলত, নাবালক থেকে অনূর্ধ্ব ৩০ বছরের যুবকেরাই কেরল, তেলঙ্গানা, রাজস্থানের মত ভিনরাজ্যে চলে যান শ্রমিকের কাজে। সংসারের ঘানি চলে এভাবেই। পুলিশের দাবি, ভিন রাজ্য়ে কাজে গিয়ে অনেকেই সাইবার অপরাধের হাতেখড়ি নিয়ে ফিরছেন। জেনে আসছেন, শিখে আসছেন কীভাবে করতে হয় সাইবার জালিয়াতি। তদন্তকারীদের অনুমান, দক্ষিণের একাধিক শহর থেকে সাইবার অপরাধের হাতেকলমে পাঠ নিয়ে নারায়ণপুর এসে ঘাঁটি গাড়ছে এই সব প্রতারকেরা। সেই কাজ শেখানো হচ্ছে নারায়ণপুর-ইসলামপুরের শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের। কার্যত পাঠশালা তৈরি করে দেওয়া হত প্রশিক্ষণ।
সূত্রের খবর, মূলত দুই রাজ্যে কাজে গিয়ে সব থেকে বেশি প্রতারণার পাঠ নিয়েছে প্রতারকেরা। তবে সবুজে ঘেরা এই নারায়ণপুরে এই চক্রের হদিশ মেলায় গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যেও তীব্র আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়ছে। তাঁদের ছেলেমেয়েরাও এই ঠগবাজদের খপ্পরে পড়ে এই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়বে না তো? এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে গোটা চোপড়াজুড়ে।
এক গ্রামবাসী বলছেন, অনেকেই তো টাকার খোঁজে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন। তারপর সেখান থেকে এইসব কাজ শিখে আমাদের গ্রামে আসছেন। এতে চিন্তা তো হচ্ছেই। কদিন পরে যে আমাদের পরিবারের কেউ ওদের খপ্পরে পড়বে না সেটা কে বলতে পারে! আর এক গ্রামবাসী বলছেন, কোনওদিন ভাবতে পারিনি আমাদের গ্রামে এসব হবে। আমার মনে হয় এরা অনেক টেকনিক্যাল কাজ জানে। তাতেই ভয়। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক বিষয়।
