রায়গঞ্জ: হাসপাতাল থেকে হঠাৎ করে উধাও সদ্যোজাত। শুরু হয় খোঁজ-খোঁজ রব। পরে জানা যায়, নিজের সন্তানকেই চুরি করেছেন বাবা। সেই অভিযোগে বাবা ও তার বোনের জামাইকে পুলিশ আটক করে। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে অভিযান চালায় পুলিশ। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে খোঁজ মেলে সদ্য়জাতর। পুলিশ মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয় তাঁর সন্তানকে। গোটা ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হয় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ চত্ত্বরে।
পরিবার সূত্রে খবর, রায়গঞ্জ মেডিক্যালে গত সোমবার বিকেলে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা শেফালী খাতুন। জন্মের পর থেকেই শিশুটি শারীরিকভাবে অক্ষম হওয়ার কারণে তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিক্যালের এসএনসিইউ বিভাগে রাখা হয়। এরপর বুধবার সকালে এসএনসিইউ থেকে মায়ের কাছে প্রসূতি বিভাগে পাঠানো হয় সদ্যজাতকে।
এবার শিশুটিকে হাসপাতালে দেখতে সকালে হাজির হয় শেফালীর বাড়ির সদস্যরা। কিন্তু মায়ের পাশে শিশুকে না দেখতে পেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন তাঁরা। শুরু হয় খোঁজ। পরে হাসপাতালে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তাঁরা জানতে পারেন শিশুকে নিয়ে গিয়েছে তাঁর বাবা। কিন্তু কেন? দু’দিনের একরত্তিকে চিকিৎসাধীন মায়ের কাছে না রেখে কোথায় নিয়ে যাওয়া হল তা নিয়ে শিশুর বাপের বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে বচসা বাধে মেডিক্যাল চত্ত্বরেই। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। শেফালীদেবীর বাপের বাড়ির সদস্যদের দাবি শিশুটিকে তাঁর বাবা অন্যত্র নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। এই বলে হাসপাতাল চত্ত্বরেই দুপক্ষের উত্তেজনা বাধে।
খবর যায় রায়গঞ্জ পুলিশ স্টেশনে। এলাকায় আসে রায়গঞ্জ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। ঘটনাস্থলে গিয়ে বাচ্চাটির পিসেমশাই জুহুরুলকে আটক করে। এরপর শিশুর খোঁজ করতে রায়গঞ্জ ব্লকের বড়ুয়া গ্রামে শিশুর বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। সেখানে শিশুটির বাবা জাহের আলির কথায় অসঙ্গতি থাকায় তাঁকেও আটক করা হয়৷ পরে আটক দু’জনকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ চালায় পুলিশ। এরপর এদিন বিকেলেই উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদে এক ব্যক্তির কাছ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুনরায় রায়গঞ্জ মেডিক্যালের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বর্তমানে শিশুটিকে তাঁর চিকিৎসাধীন মায়ের কাছেই রাখা হয়েছে। এদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়। প্রসূতির বাপের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে জাহের আলি তার দু’দিনের সদ্যজাত পুত্র সন্তানকে বিক্রি করেছিল। যদিও অভিযুক্ত বাবা জাহের আলি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে ঘটনার পেছনে কী রহস্য আছে তা জানতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: Left Front Candidate: বয়স ‘নো ফ্যাক্টর’, সাইকেল চালিয়েই ভোট প্রচারে বছর অশতিপর এই বাম প্রার্থী!