Shootout In Raiganj: তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশকে পেতে হচ্ছে বেগ, রায়গঞ্জ শুটআউট কাণ্ডে গ্রেফতার এক মহিলা
Raiganj Shootout: গুলিচালনার নেপথ্যে উঠে আসছে পরকীয়া তথ্য। সেটি অবশ্য দুই তরফেই ছিল। প্রতিবেশীদের একাংশ জানাচ্ছেন, রিপন কর্মসূত্রে বেশিরভাগ সময় বাইরেই থাকতেন।
রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ শুটআউট (Raiganj Shootout) কেসে এক মহিলাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতার নাম জয়শ্রী দাস। অভিযুক্ত দুই বিএসএফ জওয়ান রিপন ও পাপনের দিদি হলেন জয়শ্রী। তাঁকে সোমবার রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিল পুলিশ। জেরায় তিনি গুলি চালানোর ঘটনা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
তদন্তের ক্ষেত্রে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশকে। অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ান পাপন রায়ের কাশিবাটির বাড়িতে তল্লাশিতে যায় পুলিশ। বাড়িতে লাগানো বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখতে চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। কিন্তু পুলিশ গিয়ে দেখে বাড়ির দরজায় তালা। মঙ্গলবার সকালে তালা ভেঙ্গে ঘরে ঢোকে পুলিশ।
দেখা যায়, অভিযুক্তরা সিসি ক্যামেরার যন্ত্রাংশ, হার্ডডিক্স নিয়ে চম্পট দিয়েছে। বাড়িটি সিল করে দিয়েছে পুলিশ। রায়গঞ্জের শুটআউটে এক মহিলার খুনের ঘটনায় উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই ভাড়াটে-বাড়িওয়ালা বিবাদ। আর তাতে চড়ে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের রঙ। সেই কারণেই গুলি। প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে এমনই তথ্য।
তদন্তে জানা গিয়েছে, পেশায় পুলিশকর্মী সুজয়কৃষ্ণ মজুমদার শিলিগুড়ি ডাবগ্রামে এসআই পদে কর্মরত। তাঁর বাড়িতেই কয়েক মাস ভাড়া ছিলেন দুই ভাই রিপন ও পাপন সাহা। তাঁরা দুজনেই বিএসএফ জওয়ান। কয়েক মাস ভাড়া থাকার পর ওই এলাকাতেই বাড়ি বানিয়ে চলে যান তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, সোমবার সন্ধ্যায় রিপন সাহা তাঁর এক সঙ্গী ও দুই মহিলাকে নিয়ে সুজয়কৃষ্ণের বাড়িতে যান। তাঁরা নাম ধরে ডাকাডাকি করায় সুজয় নেমে আসেন। অভিযোগ, সুজয়কে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে সুজয়ের দুই বোন নেমে আসেন। তাঁদেরই এক জনের গায়ে গুলি লাগে।
গুলিচালনার নেপথ্যে উঠে আসছে পরকীয়া তথ্য। সেটি অবশ্য দুই তরফেই ছিল। প্রতিবেশীদের একাংশ জানাচ্ছেন, রিপন কর্মসূত্রে বেশিরভাগ সময় বাইরেই থাকতেন। রিপনের স্ত্রীয়ের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন সুজয়। অপরদিকে প্রতিবেশীদের আরেক সূত্র বলছে, সুজয়ের এক বোনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল রিপনের। তাঁর অন্যত্র বিয়ে হয়ে যাওয়াতেই ক্ষোভ। তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার নেপথ্য সঠিক কারণ জানতে পারেনি পুলিশ। তদন্ত চলছে। ধৃত মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
ঘটনার পর থেকে পলাতক তিন অভিযুক্ত। সোমবার হেমতাবাদ, রায়গঞ্জ, ইটাহার বিভিন্ন এলাকায় নাকা তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ধরা পড়ে যাবে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, সম্পর্কের টানাপোড়েনেই এই গুলি। অভিযুক্তদের পাস্ট রেকর্ড নেই বলেই জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার ভরসন্ধ্যায় রায়গঞ্জের সুকান্ত মোড়ে গুলি চলে। দেবী স্যান্ন্যাল নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়। নিজের দাদা সুজয়কৃষ্ণকে বাঁচাতে গিয়েই গুলি লাগে তাঁর। ঘটনায় আহত হয়েছেন রূপা অধিকারী ও সুজয় কৃষ্ণ মজুমদার নামে আরও দু’জন। তাঁদের আপাতত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শান্তিপ্রিয় জায়গা হিসেবেই সব সময় পরিচিত রায়গঞ্জ শহর। কিন্তু পুজোর আগেই ঘটে যাওয়া এই ঘটনা যে বাসিন্দাদের অস্বস্তি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন: Shootout at Raigunj: ভরসন্ধ্যায় শুটআউট রায়গঞ্জে! মৃত্যু এক মহিলার, বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ আরও ২