রায়গঞ্জ: সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক (Head Teacher) তিনি। তিনিই অভিযুক্ত হলেন শিশু পাচার (Trafficking)- এ! ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) রায়গঞ্জে (Raiganj)। প্রধান শিক্ষক সহ মোট চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার কিশোর- কিশোরী পাচারকারী সন্দেহে এক সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ ৪ জনকে আটক করল রায়গঞ্জ রেল পুলিশ। আটক ৪ জন ব্যক্তির মধ্যে ২ মহিলা ও ২ পুরুষ রয়েছেন। উদ্ধার হয়েছে ২১ জন কিশোর এবং ৪ জন কিশোরী। এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতেই প্রধান শিক্ষককে আটক করা হয়েছে বলে খবর। এদিকে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়গঞ্জ রেল পুলিশ, রায়গঞ্জ থানার পুলিশ এবং উত্তর দিনাজপুর চাইল্ড লাইন।
ঠিক কী ঘটেছে?
শনিবার সন্ধ্যা। তখন রাধিকাপুর কলকাতা এক্সপ্রেস ট্রেন সবে রায়গঞ্জ স্টেশনে এসে দাঁড়িয়েছে। হঠাৎই হুলুস্থুল পরিস্থিতির সৃষ্টি হল স্টেশন চত্বরে। জানা গিয়েছে, এক ব্যক্তি লক্ষ্য করেন বেশ কিছু কিশোর- কিশোরী স্টেশন চত্বরে হুড়োহুড়ি করছে। আর তাদের প্রায় ধাক্কা দিতে দিতে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রাপ্তবয়স্ক এক ব্যক্তি। দৃশ্য দেখে কেমন খটকা লাগে কৌশিক চৌধুরী নামে ওই ব্যক্তির। তাঁর কৌতূহল হয়, কেন বাচ্চাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করছেন উনি? আর এতগুলো বাচ্চাকে নিয়ে কোথায় বা নিয়ে যাচ্ছেন ওই ব্যক্তি?
নিজেই এগিয়ে যান ওই ব্যক্তির কাছে। জানতে চান কী হয়েছে। উত্তরে তাঁকে নাকি ওই মাঝবয়সী ওই ব্যক্তি জানান, “আমার আত্মীয়ের বিয়েতে যাচ্ছি”। কিন্তু এতগুলো বাচ্চা ছেলমেয়ের সঙ্গে আর বড় কাউকে না দেখে সন্দেহ হয় কৌশিকবাবুর। তিনি নিজে থেকে তৎপর হয়ে খবর দেন রেল পুলিশে।
এর পর রেল পুলিশের তৎপরতায় উদ্ধার হয় মোট ২১ জন কিশোর ও ৪ জন কিশোরী। খবর পাঠানো হয় উত্তর দিনাজপুর চাইল্ড লাইন সহ রায়গঞ্জ থানায়। তাছাড়া চাইল্ড লাইনের কর্মীরা সব কিশোর -কিশোরীদের পরিবারকে খবর দেওয়ার পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাচ্চাদের সঙ্গে থাকা ওই মাঝবয়সী ব্যক্তি পেশায় একজন শিক্ষক। আর তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরেক শিক্ষক। তিনি যে স্কুলে কর্মরত, সেখানেই পড়াশোনা করে এই বাচ্চাগুলো। ও কিন্তু তাঁর সঙ্গে থাকা বাচ্চাদের সম্পর্কে জিঞ্জাসাবাদ করলে ওই শিক্ষক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমের উত্তর দেন। এতে সন্দেহ বাড়ে তদন্তকারী আধিকারিকদের। এর পর তাঁকে আটক করা হয়।
এখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে রেল পুলিশ ও চাইল্ড লাইন।
জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া কিশোর-কিশোরীদের প্রত্যেকের বয়স ১০ থেকে ১২ বছর। তাদের বাড়ি ইটাহার থানা এলাকায়। এদিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের দাবি, তিনি কলকাতায় ঘুরতে নিয়ে যাচ্ছিলেন বাচ্চাদের। তিনি জানান, তাঁর সঙ্গে পরিবারের লোকজনও রয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: Mihir Goswami and Udayan Guha: পা ভাঙার হুমকি উড়িয়ে উদয়নের ‘পাড়ায়’ গেলেন মিহির