Summer Vacation Debate: গরমের দাপটে কেমন আছে উত্তরবঙ্গ? স্কুল ছুটি বিতর্ক নিয়ে শিক্ষা মহলে জমছে উদ্বেগের মেঘ
Summer Vacation Debate: আগামী ২ মে থেকে রাজ্যের সব স্কুল কলেজে ছুটি ঘোষণা করে দিয়েছে। আর এতেই মুখ ভার উত্তরের। দক্ষিন যখন জ্বলছে তখন উত্তরবঙ্গে মনোরম আবহাওয়া, বৃষ্টিও হচ্ছে কোথাও কোথাও।
কলকাতা: দক্ষিণবঙ্গে(South Bengal) দাবদাহ চললে উত্তরবঙ্গে স্কুল ছুটি কেন? শিলিগুড়ির (North Bengal) বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের প্রশ্ন ঘিরে উত্তাল বাংলার রাজ্য-রাজনীতি। নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে ‘বঙ্গভঙ্গ’ বিতর্ক ইতিমধ্যেই বিজেপির(BJP) বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল(Trinamool)। যদিও রাজ্য সরকারের স্কুল বন্ধের ঘোষণায় উত্তরবঙ্গে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। দক্ষিণবঙ্গের গরমের কারণে স্কুল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত কেন তুলনায় অনেকটাই শীতল উত্তরবঙ্গের ওপর চাপানো হবে তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। উত্তরের প্রতি বঞ্চনা ফের একবার উঁকি দিচ্ছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণবঙ্গ জ্বলছে প্রচন্ড দাবদাহে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই আগামী ২ মে থেকে রাজ্যের সব স্কুল কলেজে ছুটি (Summer Vacation) ঘোষণা করে দিয়েছে। আর এতেই মুখ ভার উত্তরের। দক্ষিন যখন জ্বলছে তখন উত্তরবঙ্গ জুড়ে সুন্দর আবহাওয়া। গরম নেই একেবারেই। এমনকী বৃষ্টিও চলছে বেশ কিছু জেলায়। এমতাবস্থায় হঠাৎ স্কুল বন্ধ ঘোষণায় তীব্র ক্ষোভ সব মহলে। ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক শিক্ষিকা ও অভিভাবকরাও যথেষ্ট ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন। কোনও কারণ ছাড়া উত্তরের ওপর স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া মেনে নিতে পারছেনা স্কুলের পড়ুয়ারাও (School Students)। শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন বিভিন্ন ক্লাসের পরীক্ষার রুটিন তৈরি হয়ে গিয়েছিল। এই আচমকা সিদ্ধান্ত সব বাতিল হয়ে গেছে। এই নিয়ে আরও ভাবনা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার ছিল বলে মত তাঁদের।
অনেকে এও প্রশ্নও তুলছেন, উত্তরবঙ্গে জুন মাসে যখন গরম পড়বে সেসময় কী সারা রাজ্যে ছুটি ঘোষণা করবে সরকার(State Government)? তাঁদেরও এও দাবি, উত্তরবঙ্গ সব সময় অবহেলিত। দক্ষিণের কথা ভেবেই সব সময় সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে এসেছে রাজ্যের সব সরকার। আর এই নিয়েই ফের একবার উত্তরের প্রতি বঞ্চনার কথা উঠে আসছে বিরোধীদের বক্তব্যে। এই প্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, “কখনও প্রয়োজন মতো বৈচিত্র্যকে অস্বীকার করব ঐক্যের কথা বলে। কখনও ঐক্যকে অস্বীকার করব বৈচিত্র্যের কথা বলে। এই ধরনের দুমুখো নীতি না নেওয়াই ভালো। ইতিমধ্যে ছুটির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে দার্জিলিং- কালিম্পংকে। তাই এ ক্ষেত্রে শিলিগুড়িকেও বাদ দেওয়ার দাবি আমি শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছি”।
এদিকে সদ্য করোনা গ্রাস থেকে খানিকটা হলেও মুক্ত হয়েছে গোটা দেশের পাশাপাশি বাংলাও। ফের খুলেছে স্কুল-কলেজ। কিন্তু তারপর আচমকা এই ভাবে দেড় মাস ছুটি দিয়ে দিলে পঠনপাঠন জোর ধাক্কা খাবে বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে উত্তরবঙ্গের উপরের দিকে থাকা থাকা বেশ কিছু জেলায় তাপমাত্রা বেশ খানিকটা কম থাকলেও, নীচের দিকের পাঁচ জেলায় তাপমাত্রা বিগত কয়েকদিন ধরে স্বাভাবিকের বেশ খানিকটা বেশি রয়েছে। আবহওয়া দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ২৪ এপ্রিল দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ২৫ এপ্রিল বেড়ে হয় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে ২৫ এপ্রিল বালুঘাটের তাপমাত্রা আবার ৩৮ ডিগ্রির গণ্ডি ছুঁয়ে ফেলে। সেদিন মালদহের তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমনকী মালদহে জারি হয়েছে তাপপ্রবাহের সতর্কতাও। তাই এই পরিস্থিতি স্কুল ছুটির সিদ্ধান্তকে এই কয়েকটি জেলার একটা বড় অংশের মানুষ আবার সমর্থনও করেছেন। সহজ কথায় স্কুল ছুটি নিয়ে রাজনীতির আঙিনায় ‘বঙ্গভঙ্গের’ বিতর্ক দানা বাঁধলেও তাপমাত্রার পারাপতনে যে রাজ্যের শিক্ষা মহলে উদ্বেগের মেঘ জমা হচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।