Video: ‘মা-বোন যদি পড়তে না পারে…’, লাইভ টিভিতে ডিপ্লোমা ছিঁড়ে ফেললেন আফগান অধ্যাপক

Kabul University professor tears up diplomas: লাইভ টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তাঁর ডিপ্লোমা ছিঁড়ে ফেললেন কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক। বললেন এই দেশের শিক্ষা গ্রহণ করার কোনও অর্থ নেই।

Video: 'মা-বোন যদি পড়তে না পারে...', লাইভ টিভিতে ডিপ্লোমা ছিঁড়ে ফেললেন আফগান অধ্যাপক
লাইভ টিভিতে ডিপ্লোমা ছিঁড়ে ফেললেন আফগান অধ্যাপক
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 28, 2022 | 8:46 PM

কাবুল: লাইভ টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তাঁর ডিপ্লোমা ছিঁড়ে ফেললেন কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক। সম্প্রতি তালিবানরা আফগানিস্তানে মহিলাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা নিষিদ্ধ করেছে। ডিপ্লোমার নথি ছিঁড়ে ফেলে তারই প্রতিবাদ জানালেন ওই অধ্যাপক। তাঁর দাবি, আফগানিস্তানে যদি তাঁর মা-বোনরা পড়াশোনা করতে না পারেন, তাহলে এই দেশের শিক্ষা গ্রহণ করার কোনও অর্থ নেই। টিভি শো-এর ওই ভিডিয়ো ফুটেজ, সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তালিবানি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তাঁর এই পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন সকলেই। টুইটারে ভিডিয়োটি শেয়ার করেছেন আফগান পুনর্বাসন ও শরণার্থী বিষয়ক মন্ত্রকের প্রাক্তন নীতি উপদেষ্টা শবনম নাসিমি। সঙ্গের ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, “আফগানিস্তানে লাইভ টিভিতে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের ডিপ্লোমা নথি নষ্ট করার বিস্ময়কর দৃশ্য।” ওই অধ্যাপককে উদ্ধৃত করে তিনি আরও লিখেছেন, “আজ থেকে আমার আর এই ডিপ্লোমার দরকার নেই কারণ এই দেশে শিক্ষার কোনও জায়গাই নেই। আমার বোন এবং আমার মা যদি পড়াশোনা করতে না পারেন, তাহলে আমি এই শিক্ষা গ্রহণ করব না।”

গত সপ্তাহেই আফগানিস্তানে মহিলাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা গ্রহণ নিষিদ্ধ করেছিল তালিবান কর্তৃপক্ষ। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে চিঠি পাঠান তালিবান উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী নেদা মহম্মদ নাদিম। তিনি বলেছিলেন, “পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত মহিলাদের শিক্ষা স্থগিত করার আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করতে হবে।” এর পাশাপাশি মহিলাদের এনজিওগুলিতে কাজ করাও নিষিদ্ধ করেছে তালিবানরা। সমস্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে, মহিলা কর্মচারীদের বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে তালিবান কর্তৃপক্ষ। মহিলাদের উপর এই সকল নিষেধাজ্ঞার আরোপের পর, দেশে-বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়েছে তালিবান।

আফগানিস্তানের মাটি থেকে গণ প্রতিবাদের বেশ কয়েকটি ছবি ও ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। একটি ভিডিয়োতে এক আফগান তরুণীকে তালিবান প্রশাসনের কুশপুত্তলিকা পোড়াতে দেখা গিয়েছে। তিনি বলেছেন, “আমি অজ্ঞতার গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছি। কিন্তু, তারপরও তা বেঁচে আছে, শ্বাস নিচ্ছে। আমি আফগানিস্তানের মেয়ে, আমি চাই গোটা বিশ্ব আমার কথা শুনুক।” মহিলাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে, পুরুষ ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বয়কটও করেছে। তবে, দমন-পীড়নের মাধ্যমে এই সকল প্রতিবাদ বিক্ষোভ ধামাচাপা দিতে চাইছে তালিবান কর্তৃপক্ষ। প্রতিবাদী মহিলাদের বেতাঘাত, পরীক্ষা বয়কট করা পুরুষ ছাত্রদের উপর গুলি চালানো এবং মারধর করার ভিডিয়োও প্রকাশিত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

আফগানিস্তানে মহিলাদের অধিকারের উপর ক্রমবর্ধমান তালিবানি নিষেধাজ্ঞার নিন্দা করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদও। মঙ্গলবার, ইউএনএসসি-র পক্ষ থেকে তালেবানদের এই নিষেধাজ্ঞাগুলি প্রত্যাহার করার আহ্বান করা হয়েছে। এই বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। আফগান সমাজে মহিলারা যাতে অর্থবহভাবে অংশ নিতে পারেন, তার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।