কখন আমাকে মারবে, তাদের অপেক্ষায় বসে আছি: আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা মেয়র

TV9 Bangla Digital | Edited By: সোমনাথ মিত্র

Aug 17, 2021 | 1:29 PM

জ়ারিফা আশাবাদী, যুবসমাজ কিন্তু এই পরিস্থিতি মেনে নেবে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিন্ন মত পোষণ করছেন তাঁরা।

কখন আমাকে মারবে, তাদের অপেক্ষায় বসে আছি: আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা মেয়র
আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা মেয়র জ়ারাফি ঘাফারি

Follow Us

কাবুল: এই হয়তো দরজায় কেউ কড়া নাড়ল! দরজা খুললেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে ঝাঁঝরা করে দেবে গোটা পরিবারকে। এই ভীতি প্রতি মুহূর্তে কুড়ে খাচ্ছে আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা মেয়রকে। বা অন্যভাবে বললে, মৃত্যুই ভবিতব্য ভেবে কারোর দরজায় কড়া নাড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। তালিবানের কাবুল দখলের কয়েক দিন আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জ়ারিফা ঘাফারি এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

জ়াফারি বলেন, “তাদের আসার অপেক্ষায় রয়েছি। আমার স্বামীর সঙ্গে গোটা পরিবার অপেক্ষায় আছে কখন তারা আসবে। কখন আমাকে হত্যা করবে। জানি, কেউ সাহায্য করার নেই। আমি আমার পরিবারকে ছেড়ে কোথাও পালিয়েও যাব না। আর কোথাই বা যাবো?” বলতে বলতে তাঁর গলা স্থবির হয়ে যায়।

কাবুল এখন তালিবানের হাতে। আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার গড়া সময়ের অপেক্ষা। আসরাফ ঘানির সরকারের পতন হতেই আতঙ্কে দেশ ছাড়ার হিড়িক পড়েছে সে দেশের নাগরিকদের। সোমবার কাবুল বিমানবন্দরে লক্ষ্য করা গিয়েছে পিঁপড়ের মতো মানুষের ভিড়, আর বিমানে ওঠার কাকুতি। মাঝ আকাশ থেকে মানুষ খসে পড়ার দৃশ্য শিহরিত করেছে গোটা বিশ্বকে। কিন্তু জ়ারিফাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই বলে জানান ময়দান ওয়ারদাক প্রদেশের মেয়র।

মাত্র ২৭ বছর বয়সে ২০১৮ সালে আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা মেয়র হিসাবে নির্বাচিত হন জ়ারিফা। এত কম বয়সে মেয়র হওয়ার নজির কাবুলিওয়ালার দেশে নেই। প্রথম থেকেই তালিবানের নিশানায় রয়েছেন তিনি। তালিবানের চোখরাঙানি আফগানিস্তানে প্রগতিশীল নারীদের উপর থাকবে এটা স্বাভাবিক। তাঁর উপর ৩ বার আক্রমণও হয়েছে। বাধ্য হয়ে তাঁর বাবা জেনারেল আব্দুল ওয়াসি গত বছর নভেম্বরে তালিবানের কাছে নতিস্বীকার করেন। 

কাবুলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের হয়ে কাজ করতে শুরু করেন জ়ারিফা ঘাফারি। সরকার ও মার্কিন সেনা কর্মী এবং নাগরিকরা যুদ্ধে আহত হলে তাঁদের সেবায় নিয়োজিত থাকতেন জ়ারিফা। সেই কারণে, তালিবান হট লিস্টে তাঁর নাম রয়েছে। যদিও কাবুল দখলের পর তালিবানের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, সরকার বা বিদেশি শক্তিকে যাঁরা সাহায্য করেছেন, তাঁদের ক্ষমা করে দেওয়া হবে। মহিলারা সুরক্ষিত থাকবেন। কুড়ি বছর আগে তালিবানি শাসন যাঁরা দেখেছেন, এই প্রতিশ্রুতিতে ভরসা পাচ্ছেন না তাঁরা।

তবে, জ়ারিফা আশাবাদী, যুবসমাজ কিন্তু এই পরিস্থিতি মেনে নেবে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিন্ন মত পোষণ করছেন তাঁরা। মহিলাদের অধিকারের পক্ষে সরব হতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। তালিবানের সংরক্ষণশীল চিন্তাভাবনার পরিপন্থী আফগানিস্তানের নতুন প্রজন্ম। তাই, নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখছেন জ়ারিফা। দরজায় কড়া না পড়লে, সেই ভোরের সাক্ষীও হতে পারেন বলে জানান জ়ারিফা। আরও পড়ুন- চোখে জল, বুকে আঁকড়ে রেখেছেন একরত্তি শিশুকে! ‘অন্ধকার’ ভবিষ্যৎ থেকে মুক্তির চেষ্টা আফগানবাসীর

Next Article