কাবুল: আফগানিস্তানের (Afghanistan) পশ্চিমাঞ্চলের শহর হেরাট। সে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। তিন মাস পর সেখানে আবারও শিক্ষার অধিকার পাচ্ছে মেয়েরা। এএনআই সূত্রে খবর, তালিবান সে দেশে ক্ষমতা কায়েম করার পর থেকে গত তিন মাস ধরে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধই ছিল। তবে ধীরে ধীরে সে অন্ধকারে আলোর বিন্দু দেখা যাচ্ছে।
সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের খবর অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে ষষ্ঠ শ্রেণি অবধি মেয়েরা স্কুলে যাওয়ার অধিকার পাচ্ছিল। এবার নাবালিকা, কিশোরীরাও স্কুলে যাচ্ছে। সোমবারই হেরাটে সপ্তম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এদিন থেকে খুলেছে স্কুলের দরজা।
টোলো নিউজের খবর অনুযায়ী, বড় মেয়েরা স্কুলে যাবে কি না তা নিয়ে সেখানকার নির্বাচিত শিক্ষক পর্ষদের একটি বৈঠক হয়। প্রায় এক মাস ধরে এ নিয়ে আলাপ আলোচনা চলে। বালিকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও তালিবদের স্থানীয় কর্তারাও সে আলোচনায় যোগ দেন।
সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, প্রায় তিন লাখের কাছাকাছি মেয়ে শিক্ষার জন্য স্কুলে যেতে পারবে। তাদের লেখাপড়া এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। এর আগে প্রথম শ্রেণি থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে যাচ্ছিল। পর্ষদের প্রধান মহম্মদ সাবির জানান, এবার থেকে সপ্তম-দ্বাদশের মেয়েরাও স্কুলে যাবে।
আড়াই থেকে তিন লক্ষ মেয়ে এতদিন শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। আবারও সেই মৌলিক অধিকার ফিরে পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত তারা। একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী মাইসারা ওয়াফা জানায়, ‘এতদিন ধরে স্কুল বন্ধ। আমাদের একদম ঘরে থাকতে ভাল লাগছিল না। আমরা ক্লাস করতে পারছিলাম না, কিছু শেখার কোনও অবকাশই ছিল না। স্কুল খোলায় নতুন করে আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।’
১৯৯৬ থেকে ২০০১ অবধি আগের তালিবান শাসনের সময় মেয়েদের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এমনকী মহিলাদের চাকরি করার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তালিবান। চলতি বছরের অগস্ট মাসের ১৫ তারিখে কাবুল সিংহাসন দখলের পরেই নাটকীয়ভাবে দীর্ঘ ২০ বছর পর আফগান মাটি থেকে মার্কিন সেনা ও ন্যাটো বাহিনী (NATO forces) প্রত্যাহার করা হয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, আফগানিস্তানের মসনদের তালিবান থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতি একটু আলাদা। বিশ্বের বেশিরভাগ শক্তিধর রাষ্ট্রই নব গঠিত তালিবান সরকারকে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি। আগের তালিবান শাসনে মহিলাদের অধিকার খর্ব করা যে ইতিহাস তৈরি হয়েছিল, বর্তমানের সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি রুখতে আন্তর্জাতিক মহল ক্রমশ তালিবানের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। মেয়েদের শিক্ষা লাভ নিয়ে তালিবানকে মত বদল করতেই হবে।
কিছুদিন আগেই ব্রিটেনের এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালিবান মুখপাত্র সুহেল শাহিন বলেছিলেন, নারীরা প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা, কোনও কিছু থেকেই বঞ্চিত হবে না। স্কুল, কলেজ পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়েও মেয়েদের পড়তে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: UK to recognise Covaxin: সুখবর! কোভ্যাকসিন নিয়েও এবার বিনা বাধায় ইংল্যান্ড সফরে অনুমতি