কিয়েভ : রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠেছে। ইউক্রেন এবং রাশিয়া, উভয় তরফের প্রতিনিধিরাই একাধিকবার টেবিলে মুখোমুখি হয়েছেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য। তার পরেও কোনও চিঁড়ে ভেজেনি। ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনী অভিযান জারি রেখেছিল। এদিন তুরস্কের ইস্তানবুলে শান্তি আলোচনা সংগঠিত হয়। এরপরই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির মধ্যে মুখোমুখি বৈঠকের সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেলে ইউক্রেনের একজন সমঝোতাকারী জানিয়েছেন, এই আলোচনার পর পুতিন এবং জ়েলেনস্কির মুখোমুখি বৈঠক ‘সম্ভব’। রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সোমবার বলেছিলেন যে যুদ্ধরত দেশগুলির নেতাদের মধ্যে একটি বৈঠক কেবলমাত্র দুটি প্রতিনিধি দলের দ্বারা মূল বিষয়গুলি সমাধান করার পরেই ঘটতে পারে।
ইউক্রেনের সমঝোতাকারী ডেভিড আরাখামিয়া বলেছেন, “আজকের বৈঠকের ফলাফলই নেতা পর্যায়ে বৈঠকের জন্য যথেষ্ট।” রাশিয়া আজ বলেছে যে তারা ইউক্রেনের সঙ্গে ‘অর্থপূর্ণ’ আলোচনা করেছে এবং ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এবং উত্তর ইউক্রেনের চেরনিভে সামরিক কার্যকলাপ ‘আমূলভাবে’ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত মাসে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর একাধিক দফা যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনার পর মস্কোর আজকের ঘোষণাকে প্রথম বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। রাশিয়ার উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আলেকজ়ান্ডার ফোমিন জানিয়েছেন যে,পারস্পরিক আস্থা তৈরির স্বার্থে এবং দুই দেশের মধ্যে আরও আলোচনার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলীর স্বার্থে সামরিক তৎপরতা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁর আরও সংযোজন, “ইউক্রেনের নিরপেক্ষতা এবং অ-পারমাণবিক অবস্থার বিষয়ে একটি চুক্তি প্রস্তুত করা” এবং পূর্ব-ইউরোপীয় দেশটিকে “নিরাপত্তা গ্যারান্টি” দেওয়ার বিষয়ে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে।
জ়েলেনস্কির রাজনৈতিক উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক আগের দিন বলেছিলেন যে আলোচনাটি ইউক্রেনে আসন্ন মানবিক সংকটের অবসানের জন্য একটি যুদ্ধবিরতি এবং রাশিয়া থেকে দেশটিকে রক্ষা করার জন্য নিরাপত্তা গ্যারান্টির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। উল্লেখ্য, রাশিয়ার শীর্ষ সমঝোতাকারী ভ্লাদিমির মেডিনস্কি বলেছেন যে রাশিয়া আর ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যোগদানের বিরোধিতা করছে না। এদিকে ইউক্রেনের সমঝোতাকারী ডেভিড আরাখামিয়া সাংবাদিকদের বলেছেন যে, দেশটি রাশিয়ার সঙ্গে ভবিষ্যতের শান্তি চুক্তির জন্য একটি বিশদ কাঠামো তৈরি করেছে। এই চুক্তি ন্যাটোর অনুচ্ছেদ ৫-এর অনুরূপ একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির আহ্বান জানানো হয়েছে “একটির উপর আক্রমণ সকলের উপর আক্রমণ” নীতি। এই ব্যবস্থা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, চিন ও তুরস্কসহ দেশগুলির একটি গ্রুপ ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে।