
ঢাকা: বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও তাঁর পরিবারকে মুছে ফেলতে মরিয়া ইউনূস সরকার। মুজিব কন্যা শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে আগেই। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর পৌত্রিক ভিটেমাটি। বঙ্গবন্ধুকে পাঠক্রম থেকে মুছে ফেলেও শান্তি হয়নি, এবার বাংলাদেশের মুদ্রা থেকেও তাঁকে সরিয়ে ফেলল ইউনূস সরকার।
গতকাল, ১ জুন বাংলাদেশে নতুন ব্যাঙ্ক নোট প্রকাশিত হয়। টাকা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার বদলে এসেছে ধর্মীয় স্থান, বিভিন্ন ল্যান্ডমার্ক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ছবি। বাংলাদেশের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক এই নতুন নোট প্রকাশের পরই অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, দেশের মুদ্রায় বদল আনার মতো বড় পদক্ষেপ একমাত্র নির্বাচিত সরকার করতে পারে। মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার রয়েছে। তারা কীভাবে মুদ্রার ছবি বদলে ফেলতে পারে?
এতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের সমস্ত মুদ্রায় শেখ মুজিবর রহমানের ছবি থাকত। ১৯৭১-র মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগ ভুলেই বাংলাদেশে এখন নতুন রাজে নতুন নিয়ম। বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান নোট বদল প্রসঙ্গে বলেন, “নতুন সিরিজ ও ডিজাইনের অধীনে এবার থেকে আর কোনও ব্যক্তির ছবি থাকবে না, বরং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও ঐতিহ্যবাহী স্থানের ছবি থাকবে।”
বাংলাদেশের নতুন নোটে যেমন হিন্দু, বৌদ্ধ ধর্মস্থানের ছবি রয়েছে, তেমনই প্রয়াত চিত্রশিল্পী জাইনুল আবেদিনের আঁকা ব্রিটিশ শাসনকালে বাংলার ছবি তুলে ধরা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ছবি সরালেও শহিদ বেদির ছবিকে স্থান দেওয়া হয়েছে নতুন নোটে।
মোট নয়টি নোট তৈরি করা হয়েছে। রবিবার তিনটি নতুন নোট প্রকাশ করা হয়। ধাপে ধাপে বাকি নোটগুলিও বাংলাদেশের বাজারে আনা হবে।
তাহলে পুরনো নোটের কী হবে? বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, আপাতত বঙ্গবন্ধুর ছবি থাকা নোটগুলি বাতিল করা হচ্ছে না। তা কার্যকর থাকবে অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষ সেই নোট ও কয়েন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ব্যাঙ্ক আর নতুন করে বঙ্গবন্ধুর ছবি সহ নোট ছাপাবে না।
প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয় যে বাংলাদেশে সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে নোটও বদলেছে। এর আগে যখন খালেদা জিয়ার দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি বা বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, তখনও তারা বঙ্গবন্ধুর ছবি সরিয়ে ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের ছবি ছাপিয়েছিল ব্যাঙ্ক নোটে।