Bangladesh Durgapuja: ‘উৎসব হবে না’, বাংলাদেশেও দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে জোরাল প্রতিবাদ

Bangladeshi Hindus Durga Puja celebrations: ওপার বাংলাতেও দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে প্রতিবাদের আবহ। শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যে সমস্ত হামলা হয়েছে, তার প্রতিবাদ জানাতে সেই দেশের হিন্দুরা দুর্গাপুজোকেই বেছে নিয়েছে। তারা জানিয়েছে, এই বছর দুর্গাপূজা হবে নমো-নমো করে, কোনও উদযাপন হবে না।

Bangladesh Durgapuja: 'উৎসব হবে না', বাংলাদেশেও দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে জোরাল প্রতিবাদ
এক প্রকার বাধ্য হয়ে দেবতারা নিজ নিজ শক্তিকে একত্রিত করে সৃষ্টি করলেন এক অসীম শক্তি ও রূপের আধার, তিনিই দেবী দুর্গাImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Oct 09, 2024 | 9:03 PM

ঢাকা: ভারতের মতো বাংলাদেশেও বুধবার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হল দুর্গাপুজো। পরপর দুই ন্যক্কারজনক ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে উত্তাল এপার বাংলা। নাগরিকদের একাংশ বলছেন পুজোতে সামিল হলেও তাঁরা উৎসবে যোগ দেবেন না। ওপার বাংলাতেও দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে প্রতিবাদের আবহ। শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যে সমস্ত হামলা হয়েছে, তার প্রতিবাদ জানাতে সেই দেশের হিন্দুরা দুর্গাপুজোকেই বেছে নিয়েছে। তারা জানিয়েছে, এই বছর দুর্গাপূজা হবে নমো-নমো করে, কোনও উদযাপন হবে না। প্রসঙ্গত, হাসিনা বিদায়ের পর, গত দুই মাসে তাদের উপর ২,০০০-এরও বেশি হামলা হয়েছে বলে দাবি হিন্দুদের।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মণ্ডলের সদস্য, রঞ্জন কর্মকার বলেছেন, “এই বছর, আমরা শুধু পুজোটাই করব। কোনও উদযাপন হবে না। এটা হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এক ধরনের প্রতিবাদ। এই বছরের অগস্ট থেকে আমাদের সম্প্রদায়ের উপর ক্রমাগত হামলার পর, হিন্দুও কোনও ধরনের উৎসব করার মতো মানসিকতাতেও নেই। তাছাড়া, অনেক পুজোর আয়োজকদের হুমকি দেওয়া হয়েছে, তোলা চাওয়া হয়েছে।”

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের চেয়ারপার্সন, বাসুদেব ধর জানিয়েছেন, সরকার তাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিলেও দুর্গাপূজায় কোনও উৎসব বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। তিনি বলেছেন, “আমরা সমস্ত পুজো আয়োজকদের ব্যানার প্রদর্শনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছি। এই ব্যানারগুলিতে আমাদের দাবিগুলি তালিকাভুক্ত করা হবে। যার মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘু নিপীড়নের মামলাগুলির ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য একটি নিরপেক্ষ তদন্ত প্যানেল গঠন এবং একটি সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন তৈরি করার দাবি।”

হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে কত বাংলাদেশি হিন্দুদের উপর হামলার কোনও পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দাবি, বাংলাদেশে গত ৫ অগস্ট থেকে ২০ অগস্ট, এই ১৫ দিনেই হিন্দুদের উপর হামলার প্রায় ২,০১০টি ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা, শারীরিক নির্যাতন থেকে শুরু করে যৌন নির্যাতন এবং মন্দিরে হামলার মতো ঘটনা রয়েছে। আর রিপোর্ট হওয়ার বাইরেও অনেক ঘটনা রয়েছে।

এদিকে, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক, গোবিন্দচন্দ্র প্রামাণিক বলেছেন, “আওয়ামী লিগের আমলেও দুর্গাপুজোয় হামলা হয়েছে। প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বদনাম করতে আওয়ামি লিগের লোকজনই এইসব হামলাগুলির পিছনে থাকলে আমি অবাক হব না। শেখ হাসিনা নেই বলে হিন্দুরা হুমকির মধ্যে রয়েছে, এমন একটি চিত্র তুলে ধরার জন্য তারা এই কাজ করতেই পারে।”

তবে, একাধিক হিন্দু নেতা মনে করছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর এক বিবৃতিই মৌলবাদীদের আরও প্রশ্রয় দিয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছিলেন, মুসলিমদের আজান এবং নামাজের সময় হিন্দুদের দূর্গাপুজোর সমস্ত কার্যক্রম, বিশেষ করে গানবাজনা বন্ধ রাখতে হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হিন্দু নেতা বলেছেন, “স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এমন বিবৃতি দেওয়ার কোনও দরকার ছিল না। বাংলাদেশে আমরা পারস্পরিক শ্রদ্ধার থেকেই আজানের সময় লাউডস্পিকারে আমাদের পুজোর গান বা শ্লোক বাজানো বন্ধ করে দিই। এই ধরনের বিবৃতি মৌলবাদীদের সাহায্য করে।”