কাবুলে মার্কিন নিরাপত্তা অধিকর্তার সঙ্গে তালিবানি শীর্ষ নেতার গোপন বৈঠক! কী নিয়ে আলোচনা?

আফগানিস্তানে তালিবান শাসনভার হাতে তুলে নেওয়ার পর এটাই আন্তর্জাতিক স্তরে অন্যতম বড় ঘটনা হতে চলেছে।

কাবুলে মার্কিন নিরাপত্তা অধিকর্তার সঙ্গে তালিবানি শীর্ষ নেতার গোপন বৈঠক! কী নিয়ে আলোচনা?
এখানেই শেষ নয়। তালিবান ক্ষমতা দখলের পর আমেরিকাও জানিয়ে দিয়েছে, আফগানিস্তানের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কে আমেরিকার যে অর্থ বা সম্পত্তি রয়েছে, তাতে তালিবানকে হাত লাগাতে দেওয়া হবে না। সূত্রের খবর, আফগানিস্তানের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের সম্পত্তির পরিমাণ এই মুহূর্তে প্রায় ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো। যার মধ্যে সিংহভাগই আমেরিকার।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 24, 2021 | 5:53 PM

ওয়াশিংটন: জো বাইডেন মুখে তালিবান বিরোধিতার সুর ধরে রাখলেও তলে তলে তাদের সঙ্গে ঠিক যোগাযোগ রেখেছে আমেরিকা। মঙ্গলবার এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির সংবাদপত্র দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে। যেখানে প্রকাশ পেয়েছে, আমেরিকার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস নাকি সোমবারই তালিবানের শীর্ষ নেতা মুল্লাহ আব্দুল ঘানি বরাদরের সঙ্গে কাবুলে একটি গোপন বৈঠক করেছেন। যদি সত্যিই এই বৈঠক হয়ে থাকে, আফগানিস্তানে তালিবান শাসনভার হাতে তুলে নেওয়ার পর এটাই আন্তর্জাতিক স্তরে অন্যতম বড় ঘটনা হতে চলেছে।

মার্কিন সেনাকে আগামী ৩১ অগস্টের ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছে তালিবানরা। সেই সময়ের মধ্যে যদি বাইডেনের সেনা আফগানিস্তানের মাটি ত্যাগ না করে, তবে যে কোনও ধরনের পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে কাবুলে আটকে থাকা মার্কিন বাসিন্দা, আধিকারিক এবং সেনাকে ফিরিয়ে আনাই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ আমেরিকার জন্য। এই অবস্থায় মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানের সঙ্গে তালিবান প্রধানের এই বৈঠক নানা আঙ্গিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

এই বৈঠকের গুরুত্ব ঠিক কতটা, তা বোঝার জন্য বরাদর এবং বার্নস, দু’জনের সম্পর্কেই সামান্য জেনে নেওয়া প্রয়োজন। একদিকে বরাদর হলেন বর্তমান তালিবানের শীর্ষতম নেতা যার নেতৃত্বেই তালিবান আফগানিস্তানে দখল নিয়েছে। অন্যদিকে, জো বাইডেনের সবথেকে অভিজ্ঞতম কূটনীতিক হলেন উইলিয়াম বার্নস। যিনি আমেরিকার সবচেয়ে উচ্চস্তরীয় গোয়েন্দা সংগঠন, সিআইএ প্রধান। সেই সংগঠন, যা বস্তুত গোটা দেশ তথা রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। যদিও এই গোপন বৈঠকের কথা এনআইএ-র কোনও সূত্র মারফৎ স্বীকার করা হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তাকে উদ্ধৃত করে এই গোপন বৈঠকের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে। ঠিক কী নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথা হয়েছে, সেই নিয়েও কিছু লেখা হয়নি ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে।

তবে মনে করা হচ্ছে, তালিবানের পক্ষ থেকে ৩১ অগস্টের যে ডেডলাইন দেওয়া হয়েছে, তা কোনও ভাবে বৃদ্ধি করা যায় কি না সেই নিয়েই দু’জনের আলোচনা হয়ে থাকতে পারে। যেহেতু এখনও আফগানিস্তানে আটকে থাকা মার্কিন বাসিন্দাদের সংখ্যা কয়েক হাজারে রয়েছে, তাই এত অল্প সময়ের মধ্যে সবাইকে উদ্ধার করা আদৌ সম্ভব হবে বলে মনে করছে না হোয়াইট হাউস। তাই এই বৈঠকের মাধ্যমে তালিবানের কাছে আরও কিছুটা সময় চাওয়া হয়ে থাকতে পারে। যদিও সোমবারই তালিবানের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, উদ্ধারকার্যের জন্য কোনও অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে না। তালিবানি মুখপাত্র সুহেল শাহিন জানিয়ে রেখেছেন, ৩১ অগস্টের মধ্যে বিদেশি সেনা আফগান মাটি ত্যাগ না করলে পরিণতির জন্য তৈরি থাকতে হবে। আরও পড়ুন: ‘বন্ধু’ পুতিনের সঙ্গে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে বিশদে আলোচনা নমোর, কথা দ্বিপাক্ষিক ইস্যুতেও